প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ইং ।। ২রা পৌষ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)। ১লা জমাদিউল-আউয়াল,১৪৪২ হিজরী। বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : যু্ক্তরাজ্যের অধিবাসী ইউসুফ ডার্বিশায়ার ইসলাম গ্রহণের আগে ছিলেন মদ’-মাস্তিতে মগ্ন এক ব্রিটিশ যুবক। অবসরে মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী পড়ে ইসলামের প্রতি আগ্রহী হন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন। মহানবী (সা.)-এর চাচা হামজা (রা.)-এর জীবন তাঁকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। ফলে তাঁর বোনের নামের সঙ্গে মিলিয়ে নিজের মেয়ের নাম রাখেন সাফিয়া।
মুসলিম হওয়ার আগে আমি ছিলাম একজন সাধারণ ব্রিটিশ বালক। আমি রবিবার সন্ধ্যায় মদপানসহ এমন সব কিছুতেই অভ্যস্ত ছিলাম। পাঁচ বছর আগে আমি ছুটি কাটাতে গ্রিসে যাচ্ছিলাম। আপনি যখন কোনো এয়ারপোর্টে যাবেন আপনার ব্যাকপ্যাকে পড়ার মতো একাধিক বই থাকতে পারে—যা আপনি কোনো সুইমিংপুলের পাশে বসে পড়তে পারেন। যদিও খুব বেশি পড়া হয় না। আমি ভাবলাম, ডাব্লিউএইচ স্মিথের কোনো বই পড়ার জন্য নিয়ে যাব। কিন্তু মনের মতো কোনো বই পেলাম না।
মহানবী (সা.)-এর জীবনী পড়ে মুসলিম হই, কখনো কখনো মানুষ না চাইতেও অনেক ভালো কিছু পেয়ে যায়। বই না পেয়ে ফিরে আসার সময় আমার হাতে লেগে একটি বুক শেলফ পড়ে যায়। বইগুলো তোলার সময় তার একটি বই আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বার্নাবি রজার্সনের ‘দ্য প্রফেট মুহাম্মদ : আ বায়োগ্রাফি’। লাইব্রেরিতে বইটির প্রথম পৃষ্ঠা পড়ার পরই আমার ভালো লেগে যায়। আমি দ্বিতীয় পৃষ্ঠা পড়ি এবং ছুটিতে পড়ার জন্য বইটি কিনে নিই। আমি বইটি পড়লাম। আমার মনে হলো, আমার আরো জানা প্রয়োজন।
সুতরাং আমি স্থানীয় একটি মসজিদে গেলাম, তাদের সঙ্গে কথা বললাম এবং জানার আগ্রহ প্রকাশ করলাম। মসজিদের ইমাম বললেন, ‘সত্যি বলতে কি ইসলাম বোঝার শ্রেষ্ঠ পথ হলো মুসলিম হওয়া।’ তখন আমি দ্বিতীয় কোনো চিন্তা না করেই ‘শাহাদাত’ পাঠ করলাম।
হামজা (রা.)-এর জন্য ভালোবাসাঃ একজন নওমুসলিম হিসেবে মহানবী (সা.)-এর সাহাবিদের সঙ্গে নিজের মিল খোঁজা স্বাভাবিক। কেননা তাঁরাও ছিলেন ‘ধর্মান্তরিত মুসলিম’। আমার মনে হয়, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চাচা হামজা (রা.)-এর সঙ্গে আমার মিল রয়েছে। ইসলাম গ্রহণের আগে ও পরে তাঁর জীবনাচারের সঙ্গে আমি নিজের মিল খুঁজে পাই। যেমন তিনি আনন্দময় সময় কাটাতে পছন্দ করতেন—এমন অনেক কিছুই মনে হয় মিলে যায়। সুতরাং হজের সময় আমি উহুদ যুদ্ধের প্রান্তরে—যেখানে হামজা (রা.) শহীদ হয়েছিলেন সেখানে যাই এবং সময় কাটাই।
উহুদের প্রান্তরে আমি যখন হাঁটছিলাম, যেন প্রশান্তির ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি আবেগাপ্লুুত হয়ে কাঁদছিলাম। কিছুতেই কান্না থামাতে পারছিলাম না। আমি হাঁটতে হাঁটতে সামান্য উঁচু করে দেওয়া কবরস্থানের প্রাচীরের কাছে পৌঁছে গেলাম এবং হামজা (রা.)-সহ উহুদের শহীদদের জন্য দোয়া করলাম। কাঁদতে কাঁদতে বাসে ফিরে এলাম। একজন জানতে চাইলেন কী হয়েছে? আমি বললাম, এখানে এমন একজন ছিলেন যাঁর ভেতর আমি আমার প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাই।
তিনি বললেন, ‘মুহাম্মদ (সা.) যখন জানতে পারলেন তাঁর চাচার সঙ্গে কী হয়েছে—তিনি কেঁদে দিলেন এবং অবিরাম তাঁর অশ্রু ঝরছিল।’ আমি বললাম, তিনি হয়তো পরবর্তীদের জন্য কিছু রেখে গেছেন!
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর–আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন–বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’