প্রকাশিত : রবিবার, ১২জুলাই ২০২০ইং ।। ২৮শে আষাঢ় ১৪২৭ বঙ্গাব্দ ।।
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নিজেকে ও পরিবারের সদস্যদের বাঁচানোর তাগিদে অচেনা মানুষের থেকে দূরে থাকতে চাইছেন। তবে ভারতের উত্তরপ্রদেশের একটি ঘটনার কথা প্রকাশ্য আসার পর করোনা থেকে বাঁচতে মানুষ কতটা বেপরোয়া ও নির্মম হয়ে উঠেছে তার প্রমাণ পাওয়া গেল। করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে ১৯ বছরের তরুণীকে বাস থেকে টেনে, হিঁচড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন যাত্রীরা।
ভারতীয় গণমাধ্যগুলো জানা জানায় আনশিকা যাদব নামে ১৯ বছরের কিশোরী উত্তরপ্রদেশের শিকোহাবাদ থেকে দিল্লি যাওয়ার বাসে উঠেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা। দিল্লির মান্ডাওয়ালি নিবাসী মেয়েটি লকডাউন আবারও শুরু আগে ফিরতে চাইছিলেন বাকি পরিবারের কাছে। পরিকল্পনা মতো দিল্লি যাওয়ার জন্য মাকে নিয়ে সে ১৫ জুন শিকোহাবাদ থেকে বাস ওঠে। ঘটনার দিন শরীর বিশেষ ভালো ছিল না ওই তরুণীর। কিডনিতে স্টোন থাকায় চিকিৎসা চলছিল তাঁর। যাত্রার ধকলে, গরমে বাসে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। ব্যাপারটা চোখ এড়ায়নি সহযাত্রীদের। মুহূর্তের মধ্যে কিভাবে যেন গোটা বাসে গুজব ছড়িয়ে যায় যে ওই মেয়েটি করোনা আক্রান্ত। বাসের সমস্ত যাত্রী প্রচণ্ড ক্ষেপে ওঠে তাদের নানা অকথা-কুকথা শোনাতে থাকে। বাস থেকে নেমে যাওয়ার জন্য জোরজবরদস্তি করতে থাকেন তারা।এমন পরিস্থিতিতে ভয়ে আতঙ্কে প্রায় কান্নায় ভেঙে পড়েন অসহায় তরুণী ও তাঁর মা। মাঝ রাস্তায় এভাবে কোথায় যাবেন তা বুঝতে না পেরে সবার কাছে বারবার কাকুতি মিনতি করতে থাকেন তারা। মেয়েটি যে করোনায় আক্রান্ত নন, তাঁর মায়ের আশ্বাসবাণী কারোরই কানে ওঠেনি। শেষে এমন পরিস্থিতি দাঁড়ায় যে করোনা আক্রান্ত এই ভয়ে ছোঁয়া না যাওয়ায় বাসের মধ্যে থাকা একটা নোংরা কম্বল জোর করে ওই কিশোরীর গায়ে জড়িয়ে, কম্বল ধরেই তাকে সিট থেকে টেনে নামানো হয়। এরপর বাসের কনডাক্টর জোর করে টেনে হিঁচড়ে ১৯ বছরের অসহায় মেয়েটিকে ওই কম্বলসুদ্ধ চলন্ত বাস থেকে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
আগ্রা এক্সপ্রেসওয়ের ওপর গুরুতর জখম ও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে তরুণী। কিছুক্ষণের মধ্যে ওখানেই মারাও যায় সে। ঘটনায় প্রথমে কোনো অভিযোগ নিতে চায়নি মথুরা পুলিশ, দাবি নিহতের পরিবারের। বলা হয়, স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণীর ৷
তরুণীর ভাই বিপিন যাদব জানান, তার বোনকে খুন করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেতেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে রিপোর্ট চায় দিল্লি কমিশন ফর উইমেন। দিল্লি কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল ট্যুইটে আশ্বাস দিয়েছেন, এমন ঘৃণ্য অপরাধের জন্য কেউই রেহাই পাবে না। দোষীদের চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..