শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ঈদে কর্মস্থলে ফেরা, শেষ মুহুর্তে  বেপরোয়া যাত্রী  

0
32
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে অতিরিক্ত স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত  

কাটেনি নাব্যতা সংকট, ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে ফেরি  

প্রকাশিত : রোববার, ৩১মে ২০২০ ইং ।। ১৭ই জ্যৈস্ঠ  ১৪২৭ বঙ্গাব্দ।।

বিক্রমপুর খবর : মোঃ রুবেল ইসলাম তাহমিদ মাওয়া -লৌহজং প্রতিনিধি : গত তিন দিন ধরে পদ্মায় নাব্যতা সংকট থাকায় লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে ডুবোচরে আটকা পড়ে এনায়েতপুরী  ফেরি ।

আজ বেলা সাড়ে ১১টায়। মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট। এর ফলে নৌপথের লৌহজং টার্নিং পয়েন্ট হয়ে চলা ফেরিগুলো আটকে যাচ্ছে ডুবোচরে। অন্যদিকে কয়েকটি ফেরি বিকল্প চ্যানেল ব্যবহার করে চলাচল করায় পদ্মায় তীব্র স্রোতের মুখে পড়ছে ফেরিগুলো। আজ রবিবার বেলা ১১টার দিকে শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসে  এনায়েতপুরী নামের রোরো ফেরি। ফেরিটি নৌপথের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের দিকে এলে ৪০টি যানবাহন ও শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবোচরে ধাক্কা লাগে। পরে দের ঘন্টা  চেষ্টা চালিয়ে ফেরিটি উদ্ধার করা হয়। শিমুলিয়া থেকে ফেরিতে ওঠা যাত্রী মোঃ মোক্তার হোসেন বলেন, দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থেকে ফেরিতে উঠেছি। পরে লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে এসে ফেরিটি ডুবোচরে আটকে যায়। ফেরির চালক দীর্ঘ সময় চেষ্টা করে ডুবোচর থেকে উদ্ধার করে ফেরিটি। পরে দুপুড় ১টা ৩০ মিনিটের দিকে এসে ঘাটে পৌঁছাই। ফেরিগুলো এভাবে আটকে গেলে আমাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। টাপলো নামের ডাম্ব ফেরিটির মাস্টার কামাল হোসেন বলেন, ‘লৌহজং টার্নিং পয়েন্ট ঘুরতে গেলেই আটকে যাচ্ছে ফেরি। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি নিরাপদে পদ্মা পাড়ি দিতে। কিন্তু এভাবে ডুবোচরে ফেরি আটকে গেলে যেকোনো সময়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

বর্তমানে এই নৌপথে চলাচলরত ১৭টি ফেরির মধ্যে স্বল্প যানবাহন নিয়ে চলাচল করছে ১৭টি -ই । চাহিদা অনুসারে ফেরি না চলায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরিঘাটে আটকা পড়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই নৌপথে চলাচলরত যাত্রী ও চালকেরা। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের  মেরিন অফিসার মোঃ শাহজাহান খান  বলেন, ‘ গত তিন দিন ধরে পদ্মায় নাব্যতা সংকট থাকায় সব ফেরি চালানো  পুরো সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের ১৭টি ফেরির মধ্যে ১৭টি ফেরি স্বল্প যানবাহন নিয়ে চলাচল করছে। তবে আশা করছি দুই-তিন দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’ বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ঘাটের সহকারীব্যবস্থাপক মোঃ আব্দুল আলিম  জানায়, ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় কাঁঠালবাড়ি ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাকসহ আটক পড়েছে ৩ শতাধিক যানবাহন। তবে, ফেরিতে যাত্রীবাহী বাস, অ্যাম্বুলেন্স ও পচনশীল দ্রব্যের যানবাহনকে অগ্রাধিকার দিকে পার করা হচ্ছে। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে লঞ্চ ও স্পিডবোটে। এদিকে নদীতে নাব্যতা সংকট দূর করতে ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।  কাঁঠালবাড়ি ঘাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটের ৪ নম্বর ঘাটে একটি ডাম্ব ও একটি কে-টাইপের ফেরি নোঙর করে রাখা। ঘাটের তিনটি পয়েন্টে কোনো ফেরিতেই যানবাহন উঠতে দেখা যায়নি। তবে, ১ নম্বর ঘাটে ছোট (ভিআইপি) ফেরি অল্প কিছু যানবাহন নিয়ে  শিমুলিয়া যাচ্ছে।

ঘাটের চারটি সংযোগ সড়কেই ছোট-বড় যানবাহনের ছিল দীর্ঘ সারি। ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের চালক  হুমায়ুন কবির বলেন, ‘খুলনা থেকে বেলা সাড়ে ১০টায় ঘাটে এসেছি। ফেরিতে উঠার কোনো দেখা পাইনি। যাও দু-একটা ফেরী আসে শিমুলিয়া থেকে তাতে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। কী করব বুঝতে পারছি না। যাত্রীরা এত সময় ঘাটে আটকা পড়ায় বারবার উত্তেজিত হয়ে উঠছে।’ চট্টগ্রামগামী ট্রাকের চালক কামাল বলেন, ‘ঘাটে এসেছি আজ দুদিন হলো সিরিয়ালে বসে আছি। কখন ফেরিতে উঠতে পারব, তা কেউ ঠিক করে বলছে না।’ কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ট্রাফিক  শুত্রে জানাগেছে, ‘ঘাটের অবস্থা পরিবর্তন  হয়নি। ফেরি আগের চেয়ে বেশি চললেও সব যানবাহন পারাপার করা সম্ভব নয়। ফেরি চলাচল ব্যাহত থাকায় টার্মিনাল ও ঘাটের সংযোগ সড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন