জীবনমুখী ধর্ম ইসলাম

0
6
জীবনমুখী ধর্ম ইসলাম

প্রকাশিত :বুধবার,১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ইং ।। ১লা আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)।। ২৭শে মুহররম,১৪৪২ হিজরী

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : জীবন পরিশুদ্ধ করার তাগিদ দেয় ইসলাম। জীবন যাতে সুন্দর হয়, নির্মল হয়, কালিমুক্ত সাদা হয় সে জন্য ইসলাম সব ধরনের উপায়-অবলম্বন মানুষকে শিখিয়ে দিয়েছে। ইসলামের ভিত্তি বা প্রাণ হলো ইমান। ইমানের পর দ্বিতীয় আবশ্যকীয় কাজ হলো সালাত। এ সালাত সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘ইন্নাস সালাতা তানহা আনিল ফাহশা-ই ওয়াল মুনকার। নিশ্চয় নামাজ মানুষকে খারাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে।’ পবিত্র কোরআন এবং ইসলামী জীবনপদ্ধতি গবেষণা করলে দেখা যায়, মানুষের জীবন পাপমুক্তভাবে পরিচালনা করাই ইসলামের লক্ষ্য। তবে মানুষের ভিতর যে পাপের প্রবণতা রয়েছে তা ইসলাম অস্বীকার করেনি। ইসলাম এ কথাও বলেনি প্রতিটি মানুষ ফেরেশতার মতো নিষ্পাপ হয়ে যাক। চলার পথে নানান ভুলভ্রান্তি হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। এ স্বাভাবিক বিষয়টি ইসলাম স্বীকার করে নিয়েছে বলেই ধর্মবিশ্লেষকরা ইসলামকে জীবনমুখী ধর্ম হিসেবে মেনে নিতে বাঁধ্য হয়েছেন। তবে ইসলামের আহ্বান হলো, ভুল করে ফেললেও ভুলের ওপর দাঁড়িয়ে থেকো না। সঙ্গে সঙ্গে তাওবা করে ভুল শুধরে নাও। পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে একাধিকবার বলা হয়েছে, যারা তাওবা করে তারা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। এক আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘ইন্নাল্লাহা ইউহিব্বুত তাওয়্যাবিনা ওয়া ইউহিব্বুল মুতাতাহহিরিন।

নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারী এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ হাদিস শরিফে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘কুল্লু বাণী আদুমু খাত্তাউন। খায়রুল খাত্তাউনা আত-তাওয়্যাবুন। সব আদম সন্তানই ভুল করে। তবে সেই শ্রেষ্ঠ মানুষ যে ভুল শুধরে নেয়।’ অনেকেই সত্যিকার তাওবা কী জানেন না। যারা জানেন তাদের অনেকেই সত্যিকার তাওবা করেন না। আর যারা সত্যিকারের তাওবা করেন, সে তাওবা ধরে রাখা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। সত্যিকার তাওবা হলো আমি আর এ গোনাহ করব না এমন দৃঢ় সংকল্প করা। এ সংকল্প অটুট রাখার জন্য নানান বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেওয়াও সত্যিকার তাওবার অন্তর্ভুক্ত। কখনো যদি তাওবা ভেঙে যায় অর্থাৎ ওই গোনাহ করে ফেলেন তাহলে নিজেকে শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশে অতিরিক্ত নফল নামাজ পড়া বা নফল রোজা রাখা কিংবা আর্থিক জরিমানা মনে করে কিছু দান-সদকাহ করাও তাওবার অন্তর্ভুক্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য! অধিকাংশ মানুষই মুখে মুখে ইস্তেগফার করে।

এ ধরনের এখলাস ছাড়া মৌখিক তাওবা আসলে তাওবাই নয়। তবে কেউ যদি খাঁটি তাওবা করার পরও ওই গোনাহে জড়িয়ে পড়ে, আবার তাওবা করে আবার গোনাহ করে, তাহলে তার ব্যাপারে আমাদের সুধারণা থাকা চাই। একবার একজন সাহাবিকে রসুল (সা.) মদপানের অপরাধে শাস্তি দিলেন। কিছু দিন পর সে আবার মদ খেল। আবার তাকে শাস্তি দেওয়া হলো। এভাবে কয়েকবার শাস্তি দেওয়ার পরও সে মদ খাওয়া ছাড়তে পারল না। আরেকজন সাহাবি তাকে ধমক দিয়ে বললেন, প্রতিবারই মদ পান কর, আর শাস্তি পাও আবার তাওবাও কর, এমন তাওবার কী মূল্য? এ কথা শুনে রসুল (সা.) বললেন, তার তাওবা খাঁটি তাওবা। কিন্তু নফসের কাছে সে বারবার হেরে যাচ্ছে। তোমরা তাকে গালি দিও না। একেবারেই তাওবা না করার চেয়ে বারবার তাওবা করা অনেক ভালো। এতে করে তার ভিতর যে আল্লাহর ভয় আছে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। আর বার বার তাওবা করার কারণে আশা করা যায় এক সময় সে ওই গোনাহ থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারবে। বারবার তাওবার এটাও একটা বড় লাভ যে, ওই বান্দার মাঝে তাওবা করা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। ফলে তাওবার ওপরই মৃত্যুবরণ করার সৌভাগ্য লাভ করার সম্ভাবনা থাকে। যা তাওবা ছেড়ে দেওয়া ব্যক্তির ভাগ্যে কখনোই জুটবে না। সর্বোপরি কথা হলো, তাওবা না করার চেয়ে বারবার বারবার তাওবা করা অবশ্যই ভালো। কারণ, বারবার তাওবা করে বান্দা গোনাহ থেকে বেরিয়ে আসার যে চেষ্টা করছে এ চেস্টার দাম এবং প্রতিদান আল্লাহর কাছে অনেক বেশি।

লেখক : বিশিষ্ট মুফাঁসসিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..            

‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com

আমাদের পেইজ লাইক দিন শেয়ার করুন

জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor

আপনার আশেপাশে সাম্প্রতিক খবর পাঠিয়ে দিন email – bikrampurkhobor@gmail.com

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন