সিরাজদিখানে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির তথ্য গোপন রেখে দাফন, জন মনে আতঙ্ক,১০ বাড়ী লকডাউন!

0
55

প্রকাশিত : শুক্রবার,  ১০ এপ্রিল ২০২০ ইং ।। ২৭ চৈত্র ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।

বিক্রমপুর খবর :সিরাজদিখান প্রতিনিধি :করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে মৃত ব্যক্তির তথ্য গোপন রেখে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে দাফন করা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় । পরে  জানা জানি হলে এলাকায় আতংক ছড়াতে থাকে। বিষয় টি উপজেলা প্রশাসন জানার পর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম শিয়ালদী গ্রামের ১০টি বাড়ি লকডাউন করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশফিকুন নাহার বলেন,

নিহতের ভাই হাফেজ জাকারিয়া, নিকট আত্মীয় বাবু তালুকদার, নুরুজ্জামান, সফিউল্লাহসহ ১০টি বাড়িতে লকডাউন করে লাল নিশানা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়িঘর গুলোতে  প্রবেশ ও বাইরে বেরুতে না পারে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন হাওলাদার জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার ইছাপুরা এলাকার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মুস্তফাগঞ্জ মাদরাসা প্রাঙ্গনে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শাইখুল হাদিস মুফতি মাওলানা আব্দুল্লাহ বিক্রমপুরীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।  জানাজায় সহস্রাধিক মুসল্লি অংশ নেন। ওই মাদরাসার মুহতামিম আব্দুল্লাহ বিক্রমপুরী পশ্চিম শিয়ালদি গ্রামের মমতাজ উদ্দিন মুন্সীর ছেলে। পরে নিজ গ্রামের বেপারী বাড়ির কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান,বেশ কিছু দিন যাবৎ সে অসুস্থ্য ছিল গত ৮ এপ্রিল বুধবার গুরুতর অসুস্থ্য হলে ঢাকার গেন্ডারিয়ার বাড়ি থেকে শাইখুল হাদিস মুফতি মাওলানা আব্দুল্লাহ বিক্রমপুরীর কে প্রথমে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই দিনই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পেটের

সেখানে তার শরীরে কভিড-১৯ এর উপস্বর্গ দেখে ডাক্তাররা তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তার মৃত্যু হলে হাসপাতালের কাউকে না জানিয়ে ওই রোগীর আত্মীয়রা লাশ নিয়ে চলে আসে। আগে নেয়া ওই রোগীর শরীরের নমুনায় করোনা পজেটিভ ধরা পরে। এনিয়ে ওই দুই হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে।

এ সময় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা করোনা উপসর্গ দেখতে পেলে তার নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে ওই দিন বিকাল দিকে তার শারিরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে পাঠায় ঢামেকের চিকিৎসকরা। এদিকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

আগে নেয়া ওই রোগীর শরীরের নমুনায় করোনা পজেটিভ ধরা পরে। এনিয়ে ওই দুই হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে।

এ সময় তার স্বজনরা আব্দুল্লাহর করোনা আক্রান্ত সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ করার তথ্য গোপন করে লাশ নিয়ে চলে আসেন। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার সকালে নিজ গ্রামের বাড়িতে লাশ দাফন করেন।

দাফনের বেশ কয়েক ঘন্টা পর রাতের দিকে জানা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। করোনা আক্রান্তের বিষয়টি একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেল এটিএন নিউজের সন্ধ্যা ৭টার নিউজে (পাঠকদের জন্য লিঙ্কটা দেওয়া হল https://youtu.be/UX9mF_DedeE?t=401)প্রচার হওয়ার পর লোকজন জানতে পারে। এনিয়ে জানাজায় উপস্থিত থাকা লোকজন ও স্থানীয় লোজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া আতঙ্কে সংক্রামিত হবার ভয়ে তারা এখন ভীত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু তার পরিবার বলেছে তিনি মারা গেছে স্টক করে।

উল্লেখ্য যে সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংকস অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন, আধুনিক ইসলামী অর্থবিশারদ,বিক্রমপুর মোস্তফাগঞ্জ মাদরাসার প্রিন্সিপাল, তাঁতীবাজার কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব,ঢাকা গেন্ডারিয়ার জামালুল কোরাআন মাদ্রাসার প্রধান মুফতি, শায়খুল হাদীস ও খলিফায়ে শাহ আহমাদ শফি আল্লামা মুফতি ড. মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বিক্রমপুরী লৌহজং উপজেলার শুরপাড়া গ্রামে তাদের আদি বাড়ি। তবে তাঁহার পিতার চাকুরি সূত্রে সিরাজদিখান উপজেলার শিয়ালদী গ্রামে বসতি স্হাপন করেন।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন