হবিগঞ্জে চা-শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

0
2
হবিগঞ্জে চা-শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৯ আগস্ট ২০২২, ৩রা ভাদ্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল) ।। ২০ মহরম, ১৪৪৪ হিজরি ।।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : চা শ্রমিক নেতা ও শ্রম অধিদফতরের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকে কোনো ফল না আসায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণার মধ্যে হবিগঞ্জে মহাসড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিকরা। মাধবপুর উপজেলার সুরমা ও তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের কয়েক হাজার শ্রমিক গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে পৌন এক ঘণ্টা মহাসড়কের জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে অবরোধ করে। পরে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন ও চুনারুঘাট মাধবপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসিন আল মুরাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের দাবি প্রধানমন্ত্রী বরাবর জানানোর আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে শতশত যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। দৈনিক মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও শ্রম অধিদফতরের সমঝোতা বৈঠক হয়। কিন্তু আলোচনায় কোনো ফল না আসায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়। মাধবপুরের তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি খোকন তাঁতী বলেন, আমরা চা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন যাবত অবহেলিত। আমরা যে মজুরি পাই সেই মজুরি দিয়ে সংসার চালানো এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের ছেলে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষিত করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়াও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধŸগতির কারণে জীবনমান কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আমাদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবি ন্যায্য। লস্করপুর চা-ভ্যালীর সভাপতি রবিন্দ্র গৌড় বলেন, সুরামা ও তেলিয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিকরা সকালে নিজ নিজ চা বাগানে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। এক পর্যায়ে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা নিজ নিজ উদ্যোগে জগদীশপুর পয়েন্টে এসে মহাসড়ক অবরোধ করে। প্রশাসনের আশ্বাসে মহাসড়ক অবরোধ তুলে নেয়া হলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ন্যায্য আন্দোলন চলমান থাকবে। এ বিষয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, বুধবার তারা শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক ও চা সংসদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু তাতে কোনো সমাধান হয়নি। মালিকপক্ষ ২০ টাকা বাড়িয়ে ১৪০ টাকা দৈনিক মজুরি দিতে চাচ্ছে। তারা তা মানেনি। তাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। মাধবপুর ইউএনও শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে। মজুরি বাড়ানোর জন্য প্রতি দুই বছর পর পর বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশীয় চা সংসদের মধ্যে সমঝোতা বৈঠক হবে; যেখানে আলোচনায় ঐক্যমতের পর দুপক্ষের চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এই চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তীতে দুই বছর শ্রমিকরা বেতন-ভাতাসহ অনান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়ে যাবে। চা শ্রমিকদের সঙ্গে সবশেষ দ্বি-বার্ষিক চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। এরপরই বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশীয় চা সংসদের কাছে ২০ দফা দাবিনামায় ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি দাবি করে। এ নিয়ে কয়েক দফায় ১৩টি বৈঠক হলেও দাবির বাস্তবায়ন হয়নি বলে শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ। শ্রমিক নেতাদের ভাষ্য, গত ৩ অগাস্ট চা বাগানের মালিকদের কাছে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর জন্য এক সপ্তাহের সময় দেয়া হয়। তাতে মালিকরা কর্ণপাত করেনি। এর প্রতিবাদে ৯ অগাস্ট থেকে সারাদেশের চা বাগানে দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি শুরু করেন। কর্মবিরতির পর তারা যথারীতে কাজে করছিলেন। কিন্তু তারপরও মালিকপক্ষ দাবি না মানায় এই অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট।

(বিজ্ঞাপন) https://www.facebook.com/3square1

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..

‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।

আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন