সিরাজদিখানে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুকিপূর্ণ ভবনে জীবনের ঝুকি নিয়েই চলছে পাঠদান

0
20

প্রকাশিত:রবিবার,২০জানুয়ারি ২০১৯।

বিক্রমপুর খবর: নিজস্ব প্রতিনিধি:পাঁচ বছর পূর্বে ঝুকিপূর্ণ ঘোষনা করা হলেও ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের জীবনের ঝুকি নিয়েই পড়া-লেখা করতে হচ্ছে বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে। শিক্ষার্থীদের পাঠ দানের জন্য অতিরিক্ত কোন কক্ষ না থাকায় শিক্ষকরাও ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন এই ভবনেই। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে ক্লাস রুমে। তখন সকলের মনেই ছাদ ধ্বসে পড়ার শঙ্কা থাকলেও জীবনের ঝুকি নিয়েই পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দি ইউনিয়নের এই নয়াগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। নয়াগাও সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের এই ভবনটি স্থাপিত হয় ১৯০৫ সালে। পরে এই বিদ্যালয় ভবটিকে ১৯৯২/৯৩ সালে সাধারণ শিক্ষা প্রকল্পের আওতায় পূর্ননির্মাণ করা হয়। মাত্র ২৭ বছরের মাথায় এই ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। বিগত ৫ বছর পূর্বে প্রকৌশলীগণ জরিপ করে বিদ্যালয় ভবটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষনা করে।

অতি পুরাতন ও জরাজীর্ণ এ ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীরা ও অভিবাবকরা। বিদ্যালয় ভবনটি দেখলে যেকেউই আঁতকে উঠবেন। ভবনের ছাদ ও দেয়ালের পয়েস্তলা উঠে গেছে। ছাদের পয়েস্তলা উঠে গিয়ে ঢালাইয়ের সুরকি পেরিয়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যে ছাদ থেকে পয়েস্তলা ও সুরকি খসে পড়ে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। ভবনের পিলার ও ছাদের ঢালায়ের সুরকি খসে গিয়ে রড বেড়িয়ে পড়েছে। ভবনটি হয়ে পড়েছে সেঁতসেঁতে। যেকোন সময় এটি ধ্বসে পড়ে প্রান হানির কারণে হতে পারে। বর্ষার দিনে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে শ্রেনী কক্ষে পানিতে ভরে যায়। বৃষ্টিতে ভিজে যায় বইপত্র ও শিক্ষার্থীরা। এ সময় অধিক বেশী ঝুকিতে থাকে শিক্ষার্থীদের প্রান। ভারী বর্ষণ হলে আতঙ্কে থাকে অভিবাবকগণ। কারণ ভারী বর্ষণের ফলে ছাদ ভিজে নরম হয়ে যে কোন সময় এটি ধসে পড়ে প্রিয় সন্তানের প্রানটি কেড়ে নিতে পারে। এ ঝুকির মধ্যে বিদ্যালয় ভবনটি থাকলেও পাঁচ বছর আগে ঝুকিপূর্ণ করা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এলাকাবসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে প্রশাসন তথা সরকারের উপর। বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, একটু বৃষ্টি হলেই শ্রেনী কক্ষগুলোর ছাদ চুঁইয়ে চুঁইয়ে রুমের ভেতর পানি পড়ে। অথচ এর মধ্যেই তাদের ক্লাস করতে হয়। অভিভাবকরা জানান, তাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।

সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই ঝুকিপূর্ণ জেনেও তারা সন্তানকে শিক্ষা দিতে স্কুলে পাঠাচ্ছেন। যেকোন সময় ভবনটি মাটিতে ধসে পড়ে যেতে পারে বলে প্রকৌশলী গন এই ভবনটিকে ৫ বছর আগে ঝুকিপূর্ন ভবন বলে ঘোষনা দিয়ে যাবার পরেও এই বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ না থাকায় শিক্ষকগন ভয়ে ভয়ে এই ভবনের মধ্যে ক্লাশ করে যাচ্ছেন। নয়াগাও সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মহিবুর রহমান জানান, বিদ্যালয়টি বর্তমানে খুবই ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভয়ে ভয়ে ক্লাস করতে হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ১৮৬জন শিক্ষার্থী রয়েছে। দুই শিফটে ক্লাশ করতে হয়। এখানে প্রাইমারি এডুকেশন ডেভলমেন্ট প্রগ্রামের (পিইডিপি-২)এর আওথায় একটি ত্রাণ শিবির বা বভন রয়েছে। বর্তমানে এ ভবনের দ্বিতীয় তলায় অফিস কক্ষ বয়েছে। আর নীচ তলাটি দুর্গতদের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও শিক্ষা অফিস থেকে অনুমোদন নিয়ে এখানে একটি কক্ষ তৈরী করে শিশু শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে। আর জরাজীর্ণ ওই ভনটিতে দুই শিফটে ক্লাশ নেয়া হচ্ছে। দ্রুত এটি মেরামত করা না হলে যে কোন সময় ভবনটি ধসে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জানমালের ক্ষতির কারণ হতে পারে। সিরাজদিখান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.বেলায়েত হোসেন জানান, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিস জরিপের পর ভবনটি ঝুকিপূর্ণে ঘোষনা করে। পরে ওই বিদ্যালয়টিসহ ১১৭টি বিদ্যালয় ভবনের করুন চিত্র মন্ত্রণালয়ে সংস্লিষ্ট ওয়েব পেজে আপলোড করা হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস হতে তা বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ চেয়ে অনুরোধ করা হয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হতে ১১৭ বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১৮টি বিদ্যালয় ভবন মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে এর মধ্যে নয়াগাও সরকারী প্রথমকি বিদ্যালয় নেই।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন