প্রকাশিত: শনিবার ২ অক্টোবর ২০২১ইং।। ১৭ই আশ্বিন ১৪২৮ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)।।২৪ সফর ১৪৪৩ হিজরী।।
বিক্রমপুর খবর : স্টাফ রিপোর্টার, লৌহজং থেকে : সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সহ সভাপতি মাহবুবে আলম প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন। শুক্রবার বিকেলে লৌহজং উপজেলার কনকসারে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আব্দুল জব্বার খান মুক্ত মঞ্চে ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় পর্ষদের সহ-সভাপতি ডা. আব্দুল মালেক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হাসানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিক্রমপুরের ইতিহাস লেখক মাহবুবুল আলম দিদার, মাহবুবে আলমের সহধর্মিণী বিনতা মাহবুব, বন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন, অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের লৌহজং কেন্দ্রের সভাপতি কবির ভূঁইয়া কেনেডি, স্বাগত বক্তব্য দেন লৌহজং কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় পর্ষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের পাঠাগার ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক আলম শহীদ, দপ্তর ও পরিসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক নাছির উদ্দিন আহমেদ জুয়েল, মেজর (অব.) মাসুদ, অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের মুন্সীগঞ্জ কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ, সিরাজদিখান কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম শেখ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় পর্ষদের সদস্য সহ অন্যান্য সকল কেন্দ্রের সদস্য।
অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সদসরা সকলে খুশি হয়েছেন প্রয়াত সহ সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের পরিবারের সকলের উপস্থিতে ।
এর আগে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাহার নিজ গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক উদ্যোগে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। প্রথমে গ্রামের মসজিদে জুম্মার নামাজ শেষে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয় এবং পড়ে তাহার বাড়িতে দোয়া ও মধন্যভোজের আয়োজন করা হয়। এই দোয়া অনুষ্ঠানে স্হানীয় নেতৃবৃন্দ, আত্মীয় স্বজন ও মাহবুবে আলমের ভক্তবৃন্দ শরিক হন। মাহবুবে আলম এলাকার অনেক সামাজিক ও মানবিক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন।
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল গত ২৭ সেপ্টেম্বর সোমবার। গত বছর ঐ দিনে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মাসখানেক চিকিৎসাধীন থেকে মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
মাহবুবে আলম বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ টানা ১১ বছর অ্যাটর্নি জেনারেল ও বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্ত্রী বিনতা মাহবুব, একমাত্র ছেলে সুমন মাহবুব ও মেয়ে শিশির কণাকে রেখে গেছেন।
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাহার নিজ গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক উদ্যোগে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
করোনা উপসর্গ থাকায় গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর সিএমএইচে ভর্তি হন মাহবুবে আলম। ওই দিনই করোনা পরীক্ষায় তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ সেপ্টেম্বর তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও পরদিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আইসিইউতে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। সেখানে রাখার ২২ দিন পর ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মাহবুবে আলমের লাশ দাফন করা হয়।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি প্রথিতযশা আইনজীবী মাহবুবে আলম জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক আইনি বিষয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ভূমিকা রেখেছেন এবং সব সময় ন্যায়নিষ্ঠ থেকে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, যা অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।
মাহবুবে আলম মুন্সীগঞ্জ-২ (লৌহজং-টঙ্গীবাড়ি) আসন থেকে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। এ লক্ষে তিনি লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলা দুটিতে টানা তিন বছর চষে বেড়িয়েছেন।
তাঁর নেওয়া কর্মসূচিগুলো যেমন- মসজিদ-মাদ্রাসা ও মন্দিরে অনুদান, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই বিতরণ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতীয় সঙ্গীত ও বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতার আয়োজন, জটিল রোগীদের আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান এলাকায় বেশ জনপ্রিয়তা পায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন পাননি। তবে এলাকায় এখনও তাঁর বিপুলসংখ্যক সমর্থক রয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পারিবারিকভাবে ও অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঐদিন সকালে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে কবর জিয়ারত ও পুস্পার্ঘ অর্পণ করেন এছাড়া পারিবারিকভাবে কোরানখানি, দোয়া মাহফিল ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ কর্মসূচি করেন।
মাহবুবে আলম ১৯৪৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মৌছামন্দ্রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতকোত্তর পাস করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির সংবিধান এবং সংসদীয় গবেষণা ইনষ্টিটিউট (আইসিপিএস) থেকে সাংবিধানিক আইন এবং সংসদীয় প্রতিষ্ঠান ও পদ্ধতিতে দুটি ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন।
মাহবুবে আলম ১৯৭৫ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৮০ সালে আপিল বিভাগে আইন পেশা পরিচালনার অনুমতি পান। ১৯৯৮ সালে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি। ১৯৯৮ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ২০১১ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাহবুবে আলম সুপ্রিম কোর্ট বারের ১৯৯৩-৯৪ সালে সাধারণ সম্পাদক ও ২০০৫-০৬ সালে সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়ােগপ্রাপ্ত হয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
(বিজ্ঞাপন) https://www.facebook.com/3square1
‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন।
জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor
আপনার আশেপাশে সাম্প্রতিক খবর পাঠিয়ে দিন email bikrampurkhobor@gmail.com