প্রকাশিত:শনিবার,০৩ আগস্ট ২০১৯ ইং ||১৯ই শ্রাবণ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।
বিক্রমপুর খবর:স্টাফ রিপোর্টার:লৌহজং উপজেলার সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও প্রবীণ শিক্ষক সাধন চন্দ্র দাস আজ শনিবার (৩ আগস্ট ২০১৯)আনুমানিক সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। এলাকায় তিনি সাধন স্যার নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি উপজেলার কনকসার গ্রামে, কনকসার বাজার সংলগ্ন উত্তর পাশে। শনিবার দুপুরে উপজেলার বেজগাঁও শ্মশানে তাঁর শবদেহ দাহ করা হয়। সাধন চন্দ্র দাস লৌহজং উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ব্রাহ্মণগাঁও বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৫ সালে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। এরপর গ্রাজুয়েশন শেষ করে তিনি অত্র বিদ্যালয়ে দীর্ঘ পাঁচ দশক শিক্ষকতা করে কর্মজীবন শেষ করেন। তাঁর পড়ানোর বিষয় ছিল অংক। তিনি উক্ত বিষয়ে এতটাই পারদর্শী ছিলেন,তাঁকে সবাই ‘অংকের জাহাজ’বলে ডাকতো।
অংকের ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন সারাজীবন বিদ্যালয়ের পাঠাগারের। শতশত ছাত্রছাত্রীর হাতে বইতুলে দিয়েছেন। কারো কারো জীবনের প্রথম গল্পের, উপন্যাসের, কবিতার বই পড়া শিখেছেন এই সাধন স্যার এর কাছ থেকে। তিনি বই দিয়েই ক্ষান্ত থাকতেন না তা কতটা পড়েছে আর বুঝেছে তাও তিনি বুঝে নিতেন।কাকে কি বই দিবেন সেটাও তিনিই নির্বাচন করে দিতেন। সঙ্গীত প্রিয় মানুষ ছিলেন নিজেই হারমোনিয়াম, তবলা বাজিয়ে গান গাইতেন তাহার চার মেয়েকে গান শিখিয়েছিলেন। অনেক গুনের অধিকারী মানুষটি ছিলেন খুব সাদাসিদে একেবারেই সাধারণ জীবনযাপন করতেন। সারা জীবন এক পোশাক সাদা সার্ট আর প্যান্ট।
তিনি স্ত্রী,এক পুত্র ও চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। সাধন স্যার সৎসঙ্গের উপজেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ লৌহজং উপজেলা শাখার উপদেষ্টা ছিলেন।
তাঁহার মৃত্যুতে ব্রাহ্মণগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও প্রাক্তন ছাত্র সমিতিসহ বিভিন্ন মহল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান,স্যারের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজনীতিবিদ,সরকারের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তা,ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার, সেইভ ব্রাহ্মণ গাঁও উচ্চ বিদ্যালয়(সমমনা প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীদের একটি আদর্শিক মঞ্চ)সহ অসংখ্য স্যারের ছাত্রছাত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক জানিয়েছেন এবং তাঁহার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহানুভুতি জ্ঞাপন করেছেন।