লৌহজংয়ে করোনায় দুজনের মৃত্যু: দশটি বাড়ি লক ডাউন

0
36
লৌহজংয়ে করোনায় দুজনের মৃত্যু: দশটি বাড়ি লক ডাউন

প্রকাশিত : বুধবার,  ৮ এপ্রিল ২০২০ ইং ।। ২৫ চৈত্র ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।

বিক্রমপুর খবর : স্টাফ রিপোর্টার মিজানুর রহমান ঝিলু, লৌহজং থেকে : মুন্সীগঞ্জের জেলার লৌহজং উপজেলার দুই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মারা গেছেন। এদের একজনের নাম হারুন বেপারী (৬২)। গ্রামের বাড়ি উপজেলার কনকসার ইউনিয়নের নাগেরহাটে। পিতা আবদুল জলিল দেওয়ান। অন্যজন হচ্ছেন আবদুল ওহাব দেওয়ান (৬৩)। তিনি একই ইউনিয়নের কনকসার গ্রামের মৃত মঙ্গল দেওয়ানের ছেলে। প্রাণঘাতী করোনায় মৃত্যুর ঘটনায় দুজনের গ্রামের বাড়ির ১০টি বাড়িকে লক ডাউন ঘোষণা করেছে লৌহজং উপজেলা প্রশাসন। কারণ, মৃত দুজনেরই মারা যাওয়ার আগে ও পরে গ্রামের বাড়িতে আগমনের ইতিহাস রয়েছে। আইইডিসিআর মৃত দু’ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস পজিটিভ পেয়েছেন বলে মৃতদের স্বজনেরা জানিয়েছেন। গত রোববার করোনায় মৃত হারুন বেপারীর লাশ গ্রামের বাড়ি নাগেরহাটে এনে গোসল দেওয়া হয় এবং সাতঘড়িয়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় যিনি গোসল করিয়েছেন এবং যারা জানাজায় অংশ নিয়েছেন তাঁরা সবাই করোনার ঝুঁকির মধ্যে আছেন বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীম আহমেদ।
অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী ওহাব দেওয়ান গত শুক্রবার লৌহজংয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি এসে দরিদ্র আত্মীয়দের মাঝে ত্রাণ বিলিয়ে দিয়ে ওইদিনই ঢাকায় ফিরে যান। ঢাকায় গিয়ে তিনি জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকেন। করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনো চিকিৎসা নেননি। ফলে এ অবস্থায় ওহাব দেওয়ান গত সোমবার সকালে মারা যান। ওইদিন ঢাকার বাসায় এসে মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়ে আইইডিসিআর ওহাবের দেহে করোনাভাইরাসের পজিটিভ রিপোর্ট দেয়। ওহাব দেওয়ানের মরদেহ ঢাকায় দাফন করা হয়। তবে করোনায় ওহাবের মৃত্যুতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ, তিন দিন আগে ওহাবের কাছ থেকে ত্রাণসামগ্রী পাওয়া ব্যক্তিরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা-এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীর মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন মৃত ওহাব দেওয়ানের কনকসারের সাত প্রতিবেশীর বাড়ি এবং মৃত হারুন বেপারীর নাগেরহাটের তিন প্রতিবেশীর বাড়িকে যথাক্রমে চলতি মাসের ১৮ এবং ১৬ তারিখ পর্যন্ত লক ডাউন ঘোষণা করেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান ওসমান গণি তালুকদার, নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৃতদের গ্রামের বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে এই ঘোষণা দেন। প্রতিবেশীদের নির্ধারিত সময়ের আগে বাড়ির বাইরে না যেতে সতর্ক করা হয় এবং লক ডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অবরুদ্ধদের খাদ্যসামগ্রীসহ যে কোনো সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন কর্মকর্তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীম আহমেদ, কনকসার ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান মূনীর হোসেন মোড়ল, লৌহজং থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম রেজা, পরিদর্শক (অপারেশন) হাফিজুর রহমান, ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক শিমুল কুমার দে, স্বাস্থ্যকর্মী দিলীপ কুমার প্রমুখ।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন