প্রকাশিত :সোমবার,২৯ জুন ২০২০ইং ।। ১৫ই আষাঢ় ১৪২৭ বঙ্গাব্দ ।।
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : আজ সোমবার (২৯ জুন) রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনার কথা। এ পর্যন্ত ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে মায়ের আঁচলে পেঁচানো এক সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ওই সন্তানের নাম সিফাত (৮)। তার মায়ের নাম হাসিনা বেগম (৩৫)। মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামের আইনজীবী আব্দুর রহমানের (৪৮) স্ত্রী হাসিনা বেগম। লঞ্চডুবির ঘটনায় একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। হাসিনা বেগম ও ছেলে সিফাতের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও আব্দুর রহমানের মরদেহ পাওয়া যায়নি।
আব্দুর রহমান ঢাকার জজ কোর্টে কর্মরত ছিলেন। ঢাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করলেও করোনায় লকডাউনের কারণে কোর্টের কাজকর্ম বন্ধ থাকায় কয়েক মাস ধরে গ্রামের বাড়ি টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামে ছিলেন।
রোববার (২৯ জুন) সকালে মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম থেকে মর্নিং বার্ড লঞ্চযোগে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন আব্দুর রহমান। রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ডুবে যায়। সোমবার দুপুরে স্ত্রী-সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত আব্দুর রহমানের মরদেহ পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,যখন হাসিনা বেগমের মরদেহ নদী থেকে উঠানো হয় তখন শাড়ির আঁচলে পেঁচানো ছিল শিশুপুত্র সিফাতের মরদেহ। বিষয়টি দেখে বিস্মিত হন সবাই।
হাসিনা বেগমের ভাই রবিন বলেন,আপার শাড়ির আঁচলে পেটের সঙ্গে বাঁধা ছিল ভাগনে সিফাত। হয়তো আপা বিপদ বুঝে ভাগনেকে আঁচলে বেঁধেছেন আগেই। কিন্তু মা-ছেলে কেউ বাঁচল না। দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুলাভাইয়ের মরদেহ পাওয়া যায়নি এখনও।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আবদুল্লাহপুর ইউনিয়ন এর জামাল মন্ডল বলেন,আবদুল্লাহপুর গ্রামের ওই তিনজন ছাড়াও লঞ্চডুবির ঘটনায় আরও দুজন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন হালিম মুন্সির ছেলে মনিরুজ্জামান (৪২) এবং ফজল ব্যাপারীর ছেলে সুমন ব্যাপারী (৩২)। মনিরুজ্জামানের মরদেহ পাওয়া গেলেও সুমন ব্যাপারীর মরদেহ পাওয়া যায়নি।
রাত ১১টা ৫০ মিনিটে কথা হল জামাল মন্ডল এর সাথে তিনি জানালেন ৩ জনের মরদেহ দাফন হয়েছে। সকলেই আমাদের প্রতিবেশী তাই আমাদের সকলের মনের অবস্থা খুবই খারাপ। আবদুল্লাহপুর গ্রামের বাতাস এখন খুব ভারী আমরা সকলে শোকাহত।
এই শোকের ভিতর একটি সুখের খবর হল দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা পর ডুবে যাওয়া লঞ্চের ভেতর থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হলেন সুমন ব্যাপারী।
উল্লেখ্য যে, সোমবার রাত ১০টার দিকে ডুবুরিরা যখন টিউবের মাধ্যমে লঞ্চটি ওপরে তোলার চেষ্টা করছিলেন এবং লঞ্চটির একাংশ ওপরে উঠে আসছিল ঠিক তখনই সুমন ব্যাপারী লঞ্চ থেকে বেরিয়ে আসেন।
তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। ডুবুরিরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে লাইফ জ্যাকেটে ঢেকে এবং শরীর মেসেজ করে তার শরীর গরম করার চেষ্টা করেন। এরপর ওই ব্যক্তি চোখ মেলে তাকান। তাকে মিডফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..