প্রকাশিত :রবিবার,১৮ অক্টোবর ২০২০ইং ।। ২রা কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সরকার ঘোষিত সময়সীমা ২২ দিন নদীতে মা ইলিশ ধরা, বাজারজাত, ক্রয়-বিক্রয় এবং সংরক্ষণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নদ-নদীর বিভিন্ন অঞ্চলকে ইলিশ প্রজননের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়। ইলিশমাছ ধরারসহ সকল কাজের সঙ্গে দেশের কয়েক লক্ষ পরিবার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে থাকায় তাদের দায়িত্বও সরকার বহন করে।
তারপরও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারীকে ফাঁকি দিয়ে এবং আইন অমান্য করে প্রতিদিনই ধরছে মা ইলিশ। এই নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ ধরার অপরাধে বিভিন্ন বাহিনীর অভিযানেগত ৩ দিনে দেশের প্রত্যন্ত নদী থেকে কারেন্ট জাল জব্দ এবং ১৭৮ জন জেলেকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি ৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শনিবার (১৭ অক্টোবর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। জানা যায়, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২০ বাস্তবায়নের তৃতীয় দিন (১৬ অক্টোবর) পর্যন্ত দেশের ৮টি বিভাগে ৪৪২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ৩ হাজার ৫৯টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এতে ৯ কোটি ১৩ লাখ ৪ হাজার টাকা মূল্যের ৬৫ লাখ ৯৯ হাজার ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের কারেন্ট জালসহ ৪৪৫টি অন্যান্য অবৈধ জাল আটক করা হয়েছে।
উক্ত সময়ের মধ্যে আইন অমান্য করে অবৈধভাবে মৎস্য শিকারের অপরাধে মৎস্য আইনের আওতায় ১৭৮ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে এবং৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি মামলা করা হয়েছে ২৭৩টি ও জব্দ করা হয়েছে ৩ দশমিক ৩৬ মেট্রিক টন ইলিশ।
উল্লেখ্য যে, সরকার ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন অমান্যকারীকে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
মা ইলিশ রক্ষায় পদ্মানদীতে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে শনিবার (১৭ অক্টোবর) দিনগত রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত জেলা-উপজেলার প্রত্যন্ত নদীতে মৎস্য বিভাগ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম রকিবুল হাসান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্তকর্তা এটিএম শামসুজ্জামানসহ শিবচর থানা ও নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা।
মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ সান নিউজকে বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় পুরো জেলাজুড়ে আমাদের অভিযান চলবে। পদ্মানদীর শিবচর অংশে শনিবার রাতের অভিযানে ২২ জেলেকে আটক করেছি। রাতেই মাছ ধরার জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া জব্দ করা ইলিশ মাছগুলো স্থানীয় এতিমখানায় দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করায় রফিক (৩৫) নামে এক জেলেকে আটক করেছে উপজেলা মৎস্য বিভাগ ও নৌ পুলিশ ফাঁড়ি। শনিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে মেঘনা নদী থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক রফিক বাঞ্জারামপুর উপজেলার বাহেরচর গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে।
উপজেলা ঊর্ধ্বতন মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, শনিবার সকাল থেকেই মেঘনা নদীর আড়াইহাজার এলাকার বিভিন্ন অংশে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ইলিশ শিকার করার অপরাধে রফিক নামে এক জেলেকে ২৫ হাজার মিটার কারেন্ট জালসহ আটক করা হয়। এ সময় ৫ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়। পরে এগুলো এতিম খানায় দিয়ে দেওয়া হয়। অভিযানে নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল হাকিম আজাদ অবস্থিত ছিলেন। আটক রফিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং জালগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর–আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন–বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’