প্রকাশিত সোমবার ১০ জুন ২০১৯।২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ। ৬সাওয়াল ১৪৪০ হিজরি।
বিক্রমপুর খবর:অনলাইন ডেস্ক:বিশ্বের ভারতে প্রতিদিন ১ কোটি ৮০ লক্ষেরও বেশি যাত্রী এবং ২০ লক্ষ টনেরও বেশি পণ্য ভারতীয় রেলপথে চলাচল করে। ভারতীয় রেলওয়ে সংস্থা দিনে ১১ হাজার ট্রেন পরিচালনা করে থাকে।
এই সংস্থা বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক তথা সরকারি পরিষেবাকর্মী নিয়োগকর্তা। সংস্থার কর্মচারী সংখ্যা ১৪ লক্ষ।
৬,৯০৯টি স্টেশন বিশিষ্ট ভারতের রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৬৩,৩২৭ কিলোমিটারেরও বেশি।
রোলিং স্টকের হিসেবে, ভারতীয় রেল ২০০,০০০টিরও বেশি (পণ্য) ওয়াগন, ৫০,০০০টিরও বেশি কোচ ও ৮,০০০টিরও বেশি ইঞ্জিন/লোকোমোটিভের মালিক।
ভারতে রেল ব্যবস্থা চালু হয় ১৮৫৩ সালে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার সময়,দেশে বিয়াল্লিশটি রেল ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ভারতের রেলব্যবস্থাকে আরও ক্ষতিগ্রস্থ করে। রেলের রোলিং স্টক সম্পূর্ণটাই চলে যায় মধ্যপ্রাচ্যে। রেলওয়ে ওয়ার্কশপগুলি অস্ত্রাগারে পরিণত হয়।
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর ভারতের রেলপথের ৪০ শতাংশ চলে যায় নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রে। ভারতের অর্থনীতি সমৃদ্ধির মুখ দেখার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের রেলওয়ে উৎপাদনের পুরোটাই দেশে উৎপাদিত হতে থাকে।
১৯৮৫ সালে স্টিম ইঞ্জিনের বদলে ডিজেল ও ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ চালু করা হয়।১৯৮৭ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে রেলওয়ের সংরক্ষণ ব্যবস্থার পুরোটাই সুনিয়ত ও কম্পিউটারায়িত করা হয়।
ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি কর্তৃক নির্মিত হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার রেললাইনের উদ্বোধন হয় ১৮৫৪ সালে এবং এর মাধ্যমে চালু হয় বাংলার প্রথম রেললাইন। ১৬৬ বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ ভারতীয় এই রেলওয়ের রয়েছে নানা জানা-অজানা তথ্য।
আজ পাঠকদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে সাধারণ অথচ অজানা এবং মজার কিছু তথ্য।
আসুন তবে জেনে নেওয়া যাক তথ্যগুলো
১) দ্রুততম ও বিলম্বিত ট্রেন নয়াদিল্লি-ভোপাল শতাব্দী এক্সপ্রেস ভারতের সবচেয়ে দ্রুতগামী ট্রেন। এই ট্রেন গড় গততি প্রতি ঘন্টায় ৯১ কিলোমিটার থাকে। দিল্লি-আগরার১৯৫ কিলোমিটার রাস্তার এর সর্বোচ্চ গতি প্রতিঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটার ছোঁয়। নীলগিরি এক্সপ্রেস ভারতের সবচেয়ে মন্দগতির ট্রেন। গড়ে এর গতি থাকে ১০ কিলোমিটার প্রতিঘন্টা।
২) দীর্ঘতম রুট এবং সবচেয়ে ছোট রুট ডিব্রুগড় থেকে কন্যাকুমারী মোটে ৪,২৭৩ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে বিবেক এক্সপ্রেস । সময় ও দূরত্বের নিরিখে এই ট্রেনটি দীর্ঘতম রুটের ট্রেন। নাগপুর থেকে আজনি এই মাত্র ৩ কিলোমিটারের জন্য রেল পরিষেবা রয়েছে। মূলত অজনী ওয়ার্কশপে য়ারা কাজ করেন তাদের নাগপুর থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই রেল পরিষেবা।
৩) দীর্ঘতম ননস্টপ ট্রেন এবং সবচেয়ে বেশি দাঁড়ানো ট্রেন ত্রিবান্দ্রম-নিজামুদ্দিন রাজধানী এক্সপ্রেস-এর মোট ৫২৮ কিলোমিটারের রাস্তা অতিক্রম করা এই ট্রেনটি ভাদোদরা এবং কোটার মধ্যে ননস্টপ চলে। এটিই দীর্ঘতম ননস্টপ রান। হাওড়া-অমৃতসর এক্সপ্রেস সবচেয়ে বেশিবার পথে দাঁড়ায়, সংখ্যাটি ১১৫ বার।
৪) ২টো স্টেশন জায়গা একটাই মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলায় শ্রীরামপুর এবং বেলাপুর স্টেশন ২টি একই জায়গায় অবস্থিত। একপাড়ে শ্রীরামপুর স্টেশন, বিপরীত পাড়ে বেলাপুর স্টেশন।
৫) সময়ানুবর্তীতায় সবচেয় খারাপ যে ট্রেন সময়ের দিক থেকে বলতে গেলে গুয়াহাটি-ত্রিবান্দ্রাম এক্সপ্রেস একেবারেই ভরসাযোগ্য নয়। নিয়ম অনুযায়ী এই ট্রেনটি গন্তব্যে পৌঁছতে সময় নেওয়ার কথা ৬৫ ঘন্টা ৫ মিনিট। কিন্তু প্রত্যেক বারই গড়ে ১০-১২ ঘন্টা দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছয় এই ট্রেন।
৬) স্টেশনের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে ছোট নাম সবচেয়ে বড় নামের স্টেশনটি হল : Venkatanarasimharajuvaripeta (ভেঙ্কাটানরসিংহরাজুভরিপেটা)। ২৮টি ইংরেজি বর্ণ রয়েছে শব্দটিতে। চেন্নাইয়ের কাথে আরাক্কোনাম -রেনিগুন্টা অংশে অবস্থিত এই স্টেশনটি। সবচেয়ে ছোট নামের স্টেশনটি হল:IB(আইবি)।মাত্র ২টি ইংরেজি বর্ণ রয়েছে এতে। ওড়িশার ঝাড়শুগুজড়ার কাছে এবস্থিতি এই স্টেশনটি Top 10 Mutual Funds for Retirement In India 10 Insurance Schemes Launched By Modi Government Top 10 Mutual Funds for Retirement In India
৭) প্রাচীন লোকো ইঞ্জিন ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন সক্রিয় লোকোমোটিভ রেল ইঞ্জিনের ট্রেন হল ফেয়ারি কুইন। ১৮৫৫ সালে এই তৈরি হয়েছিল।এটি পৃথিবীর সর্বপ্রাচীন সক্রিয় স্টিম ইঞ্জিনও বটে।
৮) টানেল ট্র্যাক ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ টানেল ট্র্যাক হল পীর পাঞ্জল টানেল, যার দৈর্ঘ্য ১১.২১৫ কিলোমিটার। ২০১২ সালে জম্মু-কাশ্মীরে এই টানেলটি তৈরি হয়েছে।
৯) নিম্ন শ্রেনীতে মলত্যাগের ব্যবস্থা ১৯০৯ সালে প্রথম ট্রেনের নিম্ন শ্রেণীতে শৌচাগার চালু করা হয়। কারণ অখিল বাবু নামে এক ব্যক্তি চিঠি লিখে ট্রেনে শৌচাগার না থাকায় চলন্ত ট্রেনে কঠোর পরীক্ষার বর্ণনা দেওয়ার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১০) সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম গোরখপুর প্ল্যাটফর্মটি ভারতের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম। এটি ১.৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ।ভারতের গোরখপুর রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে যান তাহলে সেখানে একটি আসন পেতে হলে আপনাকে রীতিমত লড়াই করতে হবে। যদিও এ প্লটফর্মটি লম্বায় ১৩৬৬ মিটার। আর উত্তর প্রদেশের এই রেলওয়ে স্টেশনকে বিশ্বের দীর্ঘতম প্লাটফর্ম হিসেবে দাবি করেছেন ভারতের রেলওয়ে কর্মকর্তারা। এটি এতই বড় যে, এখানে একসঙ্গে ২৬ বগি বিশিষ্ট দুটি ট্রেন একসঙ্গে অবস্থান করতে পারে।
এই প্লাটফর্মকে ইতিমধ্যে বিশ্বের দীর্ঘতম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে লিমকা বুক অব রেকর্ডস। এছাড়া গিনেস বুক অব রেকর্ডের কর্মকর্তারা ভারতীয়দের দাবি যাচাই করে দেখছে বলেও জানা গেছে।
এর আগে বিশ্বের দীর্ঘতম প্লাটফর্মের রেকর্ডটি ছিল পশ্চিমবঙ্গের খড়গপুর রেলওয়ে স্টেশনের। এটি লম্বায় ১০৭২ মিটার।এদিকে ভারতের রেলওয়ে বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কেকে অটল গোরখপুর বিশ্বের দীর্ঘতম রেলওয়ে প্লাটফর্ম হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাওয়ার ঘটনায় গোরখপুরের বাসিন্দাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে আরো বেশ কয়েকটি বড় প্লাটফর্ম রয়েছে। খড়গপুরের পর শিকাগোর স্টেট সেন্টার হচ্ছে তৃতীয় স্থানে। এর দৈর্ঘ্য ১০৬৭ মিটার। এছাড়া ৭৯১ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রিটেনের ফল্কস্টোন শহরের চেরিটন শাটল টার্মিনাল রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
গোরখপুর রেলস্টেশনে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক দেশি বিদেশি পর্যটক ভীড় করে থাকে।কেননা উত্তর প্রদেশের এই এলাকাতেই রয়েছে কয়েকটি ঐতিহাসিক বৌদ্ধ স্থাপনা।ভারতের জনপ্রিয় আধ্যাত্মিক গুরু গোরখপুরের নামে এই স্টেশনটির নাম রাখা হয়েছে।ওই গুরু যোগাসনের জন্য বিখ্যাত ছিলেন।
১১) পৃথিবীর দীর্ঘতম রেল স্টেশনের শিরোপাটিও ভারতীয় রেলের হাতে৷এক সময় ২ হাজার ৭৩৩ ফুট লম্বা খড়গপুর রেলওয়ে স্টেশনটি ছিল পৃথিবীর দীর্ঘতম রেল স্টেশন৷ কিন্তু অতিসম্প্রতি সেই দীর্ঘতম স্টেশনের তকমাটি গিয়েছে, ভারতেরই গোরক্ষপুর স্টেশনের দখলে৷ উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর স্টেশনটির মোট দৈঘ্য ৪ হাজার ৪৩০ ফুট৷
১২)পাশাপাশি নাগপুরে রয়েছে ডায়মন্ড ক্রসিং৷ উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম দিকে যাওয়ার রেল পথটি পরস্পর পরস্পরকে ক্রস করেছে৷
১৩)৷ভারতের রেল মন্ত্রকের দখলে রয়েছে বিশ্বের সবথেকে উচ্চতম রেল সেতু৷ জম্মু কাশ্মীরের চেনাবে ১ হাজার ৩১৫ মিটার উচুতে অতিসম্প্রতি রেলসেতু উদ্ধোধন করছে ভারতীয় রেল৷
১৪) ভারতীয় রেল প্রথম আসন সংরক্ষন শুরু করে ১৯৮৬ সালে৷ নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে প্রথম আসন সংরক্ষন শুরু হয়৷
মহারাজা এক্সপ্রেস
১৫)পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিলাশবহুল ট্রেনের জন্য ভারতীয় রেল বিশ্বের দরবারে সমাদৃত৷ সেই ট্রেনগুলির মধ্যে অন্যত্তম হল রয়্যাল রাজস্থান, মহারাজা এক্সপ্রেস মত বিলাশবহুল ট্রেনগুলি৷তবে এই ট্রেনগুলির যাত্রী ভাড়া আপনার চোখ কপালে তুলবে৷
১৬)ট্রেনচালকদের বলা হয় ‘লোকো পাইলট’। তাদের বেতন ভারতে একজন সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারের চেয়েও বেশি। জানা গেছে, এই লোকো পাইলটরা এক লাখ বা তার বেশি রুপি বেতন পেয়ে থাকেন।
১৯)আজ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনার কারণে কোনো লোকো পাইলটকে বরখাস্ত বা চাকরি হারাতে হয়নি। এমনকি সে দুর্ঘটনায় শতাধিক নিহতের ঘটনা ঘটলেও না।
১৮) ভারতীয় রেলওয়ের ওয়েবসাইটে প্রতি মিনিটে প্রায় ১২ লাখ ক্লিক পড়ে।
১৯) মেটাপালায়াম উটি নিলগিরি প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি ভারতে সবচেয়ে ধীরে চলা ট্রেন।এটি ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বেগে চলে।একজন যাত্রী চাইলে চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে আবার এই ট্রেনে উঠে যেতে পারবেন।
২০) ভারতীয় রেলওয়ের লাইনগুলো যদি এক লাইনে বসানো হয়, তাহলে তা দিয়ে ব্যাস বরাবর দেড়বার পৃথিবী মোড়ান যাবে।
২১) যাত্রা শুরুর ৫০ বছর পর ভারতীয় রেলে টয়লেট যোগ করা হয়।এর আগে চলন্ত ট্রেনে কোনো যাত্রীর প্রকৃতির ডাক আসলে পরবর্তী স্টেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হতো। সর্বপ্রথম অখিল চন্দ্র নামে এক যাত্রী রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট এসংক্রান্ত একটি চিঠি লেখেন,যার কারণে ১৯০৯ সালে ট্রেনে টয়লেট যোগ করা হয়।
২২) অতীতে হাতী দিয়ে ঠেলে রেলওয়ে কম্পার্টমেন্ট সঠিক জায়গায় নেওয়া হতো।
২৩) ১৬ এপ্রিল ১৮৫৩ সালে ভারতীয় রেলের যাত্রা।পার গয়ে গেছে ১শ’৬৬ বছর।
২৪) সবচেয়ে লম্বা নামের স্টেশন হলো- ভেনকাটানারাসিমহারাজুভারিপেটা।
২৫) ভারতীয় রেলওয়েতে সবচেয়ে অস্বস্তিকর ট্রেন হলো গোয়াহাটি-ত্রিভানড্রাম এক্সপ্রেস।ট্রেনটি গড়ে দশ থেকে বার ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে।
২৬) জুম্মু এবং কাশ্মিরে ভারতীয় রেলের সবচেয়ে লম্বা টানেলটি অবস্থিত।এটির দৈর্ঘ ১১ দশমিক ২১৫ কিলোমিটার।
২৭) সবচেয়ে ছোট নামের স্টেশন হলো-‘ইব’।এটি ওড়িষ্যায় অবস্থিত।
২৮) অটোমেটিক পয়েন্ট সিস্টেমের প্রচলনের আগে ম্যানুয়ালি অপারেট করতে গিয়ে শত শত গার্ড দুর্ঘটনায় হাত-পা হারিয়েছেন।
২৯) সবচেয়ে লম্বা দূরত্ব অতিক্রম করতে হয় বিবেক এক্সপ্রসের।এটি দিব্রুগড় থেকে কণ্যাকুমারি পর্যন্ত ৪ হাজার ২শ’৭৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়।
৩০) সবচেয়ে কম দূরত্বের স্টেশন হলো নাগপুর এবং অজনি। স্টেশন দু’টির মধ্যবর্তী দূরত্ব ৩ কিলোমিটার।
৩১)কোনোরকম না থেমে সবচেয়ে লম্বা দূরত্ব অতিক্রম করতে হয় রাজধানী এক্সপ্রেসকে। ত্রিভানড্রাম থেকে হযরত নিজামউদ্দিন স্টেশন পর্যন্ত ট্রেনটিকে না থেমে ৫শ’ ২৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়।
৩২) লখনৌ জংশন সবচেয়ে ব্যস্ত স্টেশন।প্রতিদিন এই স্টেশনে ৬৪টি ট্রেন আসে এবং যায়।
৩৩) ভারতীয় রেলওয়ে এতো বড় একটি সংস্থা, যে সংস্থা দিনে ১১ হাজার ট্রেন পরিচালনা করে থাকে। এটি মোটেই কোনো কৌতুক নয়।
৩৪)ভারতীয় রেলওয়ে প্রতিদিন গড়ে আড়াই কোটি যাত্রী পরিবহণ করে। এই সংখ্যা নিউজিল্যান্ড,অস্ট্রেলিয়া এবং তাসমানিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় সমান।
৩৫) দিল্লিতে রেল জাদুঘর এশিয়াতে সবচেয়ে বড় জাদুঘর।
৩৬) নবপুর স্টেশনটি দুটো রাজ্যের মাঝে পড়েছে।অর্ধেক অংশ পড়েছে মহারাষ্ট্রে,বাকি অর্ধেক গুজরাটে।
৩৭) ভারতীয় রেলওয়ের একটি মাসকট আছে- ভলু।‘ভলু’হলো প্রহরী হাতী।
৩৮) ফ্রি ওয়াইফাই! ভারতীয় রেলের প্রায় দেড় হাজার স্টেশনে বিনামূল্যে ওয়াইফাই সুবিধা চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই পাঁচশ রেলওয়ে স্টেশনে উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ দিয়েছে ভারতীয় রেল। ভারতীয় রেলের যাত্রীরা এই বিনামূল্যের ওয়াইফাই সুবিধা পাচ্ছেন। ভারতীয় রেল এ সুবিধার নাম দিয়েছে রেলওয়্যার। এই ফ্রি ওয়াইফাই প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় মুম্বাই সেন্ট্রাল স্টেশন থেকে। উত্তর রেলের শাহিবাবাদ রেল স্টেশন হল ১৫০০তম স্টেশন, যেখানে ফ্রি ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দিল্লি-অম্বালা, অম্বালা-চণ্ডীগড় এমনকি কালকা-সিমলা হিল রেলওয়েতেও এই ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রেলস্টেশনে ফ্রি ওয়াইফাইয়ের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রেলটেল। ভারতীয় রেলের যাত্রীরা এটি ব্যবহার করতে চাইলে স্মার্টফোনে ওয়াইফাই সক্রিয় করে রেলওয়্যার ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপরই রেলওয়্যার হোমপেজ ফোনের স্ক্রিনে খুলে যাবে। সেখানে গ্রাহকের মোবাইল ফোনের নম্বর দিতে হবে। ফোন নম্বর দিলেই এসএমএস-এর মাধ্যমে একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) আসবে। সেটি আবার হোমপেজের নির্দিষ্ট স্থানে লিখতে হবে। এরপরই ওয়াইফাই ব্যবহার করা যাবে। ভারতীয় রেলের স্টেশন সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার নয়শ। তার মধ্যে দেড় হাজার স্টেশনেই ওয়াইফাই ইন্টারনেট সংযুক্ত হয়েছে।
৩৯) চলন্ত ট্রেনে বডি মাসাজ! নতুন চমক আনছে ভারতীয় রেল(দ্য ওয়াল ব্যুরো)ট্রেন সফরের একঘেয়েমি কাটাতে যদি হাল্কা করে একটু বডি মাসাজ করিয়ে নেওয়া যেত, তাহলে কেমন হতো? জানলা দিয়ে প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে শরীরের ক্লান্তি এক্কেবারে গায়েব। এমনটা যদি কখনও ভেবে থাকেন, তাহলে আপনার সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। নতুন চমক দিতে চলেছে ভারতীয় রেল। চলন্ত ট্রেনেই এ বার বডি মাসাজের সুবিধা পাবেন যাত্রীরা। তাও আবার মাত্র ১০০ টাকায়।
না একেবারেই হেঁয়ালি নয়। ভারতীয় রেল রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, এমন প্রস্তাব আনার কথা শুরু হয়েছে। তাতে সুবিধা দু’টো। প্রথমত যাত্রী আকর্ষণ, যাত্রী পরিষেবার মান অনেকটাই বাড়িয়ে দেওয়া। দ্বিতীয়, ভারতীয় রেলের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার একটা প্রচেষ্টা। ট্রেন সফরে স্বাস্থ্যকর মাসাজ নিতে নিশ্চয়ই আগ্রহী হবেন যাত্রীরা, তাতেই বছর শেষে লাভের অঙ্ক বাড়বে রেলের।
এই পরিষেবা আপাতত শুরু হচ্ছে ইন্দোরের ৩৯টি ট্রেনে। রেল সূত্রে খবর, এই প্রস্তাব এনেছে পশ্চিম রেলের র্যাটলাম ডিভিসন। সব দিক খতিয়ে দেখে শীঘ্রই শুরু হবে এই পরিষেবা।
ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ডের ডিরেক্টর (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন) রাজেশ বাজপেয়ী জানিয়েছেন, চলন্ত ট্রেনে যাত্রীদের জন্য বডি মাসাজের সুবিধা, ভারতীয় রেলের ইতিহাসে প্রথম। এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন যাত্রীদের ট্রেন সফরের আনন্দ বাড়াবে,তেমনি ঘাটতি মেটাবে রাজস্বের। তাঁর কথায়, ইন্দোরের এই রুটে ফি দিন ২০ হাজারের বেশি মানুষ যাতায়াত করেন। কাজেই এই পরিষেবার হাত ধরেই বছরে ৯০ লক্ষ টাকা আয় হবে রেলের। পাশাপাশি, টিকিটের চাহিদা বাড়ায় সে দিক থেকেও লাভ হবে বছরে ২০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।হিসেব মতো কাজ হলে পরবর্তীতে অন্যান্য রুটেও এই পরিষেবা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
৪০) ভারতের মহারাষ্ট্রে গত বছর(২০১৮ সালে)এমনই বই-ট্রেন চালু করেছে ভারতীয় রেল।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী বিনোদ তাওড়ের হস্তক্ষেপে‘ডেকান কুইন’ও ‘পঞ্চবটী এক্সপ্রেস’-এ সফরকালে বিনামূল্যে বই পড়তে পারেন যাত্রীরা ।তার জন্য নানা রকম বইয়ে ঠেলা সাজিয়ে ট্রেনে উঠে পড়েন রেলের বই-ফেরিওয়ালারা।যাত্রীদের কাছে কাছে ঘুরে হাঁক পাড়েন। যে যেমন খুশি বই তুলে নিয়ে পড়তে পারেন।শর্ত শুধু একটাই, ট্রেন থেকে নামার আগে অক্ষত অবস্থায়, যত্ন-সহকারে বই ফেরত দিতে হবে।
মুম্বই-পুণে এবং মুম্বই ও মানমাড়ের মধ্যে এই দুই ট্রেনে এমন বই পড়ার সুযোগ রয়েছে। মাসের টিকিট কাটেন যাঁরা তাঁরা তো বটেই,এমনকি এক পয়সাও বাড়তি খরচ না করে নিত্যযাত্রীরা এই বই পড়ার সুযোগ পান।ভারতীয় রেল জানিয়েছে, ট্রেনের ভিতরে দেশ-বিদেশের বইয়ের যোগান দেয় মারাঠি বিকাশ সংস্থা। মারাঠি ভাষা তো বটেই,সব ভাষাতেই বই মেলে এই দুই ট্রেনে। গত বছর ১৫ অক্টোবর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের জন্মবার্ষিকীতে রাজ্য সরকার ‘রিডিং ইন্সপিরেশন ডে’সেলিব্রেট করে।ওই দিন থেকেই মহারাষ্ট্রে শুরু হয় বই-সফর।
–সুত্রঃ উইকিপিডিয়া ও অনলাইনসুত্র থেকে সংগৃহীত।