ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিনটে দোষ ছিল

0
0
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিনটে দোষ ছিল

প্রকাশিত : বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫, খ্রিষ্টাব্দ।। ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ( বসন্ত কাল)।। ১১ রমজান, ১৪৪৬ হিজরী।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিনটে দোষ ছিল। তিনি নিজেই বলেছেন সাংবাদিক রবি বসুর কাছে।

এক, তিনি টাকা ধার দিয়ে ফেরত চাইতে পারতেন না।
দুই, নিজের জন্য কিছু চাইতে পারতেন না। আর
তিন, সেটাই সবচেয়ে ঝামেলার, তিনি কারও অন্যায় কথাবার্তা সহ্য করতে পারতেন না। আর এই শেষেরটার জন্য কত মানুষের অপ্রিয় হয়েছেন কতবার।
সেই সেবার এক ইন্টালেকচুয়াল স্টার থিয়েটারে বসে একমনে মহাশ্বেতা দেবীর কুৎসা গাইতে ব্যস্ত। কেন তিনি বিজন ভট্টাচার্য্যকে ছেড়ে অজিত গুপ্তকে বিয়ে করলেন তা নিয়ে রসিয়ে চারটি গপ্পো করছিলেন। বোঝেন নি ভিতরেই ভানুবাবু আছেন। আচমকা বাইরে এসে তিনি জিজ্ঞেস করলেন “আচ্ছা মশাই আপ্নের পিতৃদেব এই বৎসর কত বিঘা জমিতে ধান চাষ দিছেন?”
ভদ্রলোক অবাক। “আমার বাবা ধান চাষ করবেন কেন? তিনি তো দেহ রেখেছেন অনেকদিন হল”
“বেশ। তবে বাঁইচা গেছেন। জীবিত থাকলে জিগাইতাম মহাশ্বেতা দেবী আপনের কয় বিঘা জমির পাকা ধানে মই দিসে যে আপনের ইন্টালেকচুয়াল পুত্তুর তারে লইয়া প্যাচাল পাড়তাসে? জন্মের সময় এমন পোলারে নুন দিয়ে মাইরা ফেলেন নাই ক্যান?”
আবার এই ভানুই যখন জানতে পারেন এইচ এম ভি নতুন কমেডিয়ান সুশীল চক্রবর্তীকে ভাগিয়ে দিয়েছে, বলেছে ভানু ছাড়া কারও রেকর্ড করবে না, তখন তিনিই ফোন করে শর্ত রাখেন “সুশীলের রেকর্ড করলেই আমি রেকর্ড করুম। নয়তো গুডবাই”। এইচ এম ভি মেনে নিতে বাধ্য হয় তার কথা।
আমরা দুর্ভাগা এখনও আশিতে আসিও না, মাসিমা মালপোয়া খামু, ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্টেন্ট কিংবা ওরা থাকে ওধারে-র “অরে আর ঢুকতেই দিমু না” কিংবা কমেডি স্কিটে ইনি আর গীতা দে-র সেই সব অসামান্য নাটকের বাইরেও যে এক সিরিয়াস ভানু আছে, তা আমরা মানতে নারাজ। কমেডিয়ানদের সমস্যা হয়তো এটাই। কেউ মানতেই চায় না কমেডি ইজ এ সিরিয়াস বিজনেস।
সেই সৌমিত্রবাবুর গল্পটা মনে পড়ে। তখন আর্টিস্ট ফোরাম আর শিল্পী সংসদ নিয়ে চরম দোলাচল। ভানু এসেছেন সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে আলোচনায়। গাড়িতে বসে কথা হচ্ছে। এমনসময় প্রায় ভিতরে মুখ ঢুকিয়ে এক ফাজিল জিজ্ঞেস করলে “কেমন আছেন ভানুবাবু?”। ভানু একটু বিরক্ত। বললেন “আগে যেমন ছিলাম” বলে আবার আলোচনা শুরু করলেন।
সে থামবার পাত্র নয় । রস করে বললে “আগে কেমন ছিলেন সেটাও ত জানি না”
ভানু এবার চার অক্ষরের এক গালি দিয়ে বললেন “সেটা যদি নাই জানো, এখন কেমন আছি জাইন্যা কি করবা?”
মাত্র ১২ বছর বয়সেই বৈপ্লবিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন ভানু। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্ত ও বিপ্লবী অনন্ত সিংহকে গুরু মানতেন৷ তাঁদের কাছেই সংগ্রামের প্রথম পাঠ । এক জায়গা থেকে অন্য এক জায়গায় রিভলভার পাচারও করেছেন বহুবার। সত্যেন বসুর প্রিয় ছাত্র এই মানুষটি তরুনকুমারকে একবার দেখা করাতে নিয়ে গেছিলেন বিজ্ঞানীর সঙ্গে। সে গল্প কে না জানে? অবশ্য তাঁর কাছে তিনি ভানু নন। সাম্যময়। বাংলা সিনেমায় বাঙাল বা পুব বঙ্গের কমেডিকে প্রায় একার কাঁধে বয়েছেন এককালে। ঠিক যেমন আশিতে আসিও না ছবিতে নায়িকা রুমাকে বইতে দেখেছি।

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..           

‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন।
জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor
email – bikrampurkhobor@gmail.com

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন