বিদায়ি তাওয়াফ শেষে হাজিরা ফিরতে শুরু করেছেন

0
7
বিদায়ি তাওয়াফ শেষে হাজিরা ফিরতে শুরু করেছেন

প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ জুলাই ২০২১ইং।। ৮ই শ্রাবন ১৪২৮ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল।।১৩ জিলহজ্জ, ১৪৪২ হিজরী।।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক: বিদায়ী তাওয়াফের মাঝ দিয়ে হজের সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে গতকাল।

তবে যেসব হাজি এখনো মদিনায় যাননি, তারা পালাক্রমে মদিনা মোনাওয়ারা যাবেন। সেখান থেকে নিজ নিজ গন্তব্যে যাবেন।

বিদায়ি তাওয়াফ করা ওয়াজিব। হজরত রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হাজিরা বায়তুল্লাহর সঙ্গে শেষ সাক্ষাত না করে যেন ফিরে না আসে।’ (সহিহ মুসলিম)।

তাই হাজিরা বিদায়ি তাওয়াফ করছেন, কেউ নফল তাওয়াফ করছেন। মিকাতের বাইরে যেসব হাজিরা এসেছেন, তাদের জন্য মক্কা মোকাররমা ত্যাগ করার সময় বিদায়ি তাওয়াফ করা ওয়াজিব। আর যারা মক্কা এলাকার ভেতরে থাকেন, তাদের জন্য বিদায়ি তাওয়াফ মোস্তাহাব।

ফরজ তাওয়াফ করার পর কেউ যদি নফল তাওয়াফ করে থাকেন, তাহলেও তার বিদায়ি তাওয়াফ আদায় হয়ে যাবে। তবে বিদায়ি তাওয়াফ আলাদাভাবে করে নেয়াই ভালো।

হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) একবার বিদায়ি তাওয়াফ করে এক অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যান। এরপর তিনি আবার বিদায়ি তাওয়াফ আদায় করেন।

তাওয়াফ শব্দের অর্থ হলো প্রদক্ষিণ করা বা চক্কর দেয়া। বাইতুল্লাহ শরীফের চর্তুদিকে তাওয়াফ করা হলো হজ এবং ওমরার জন্য ফরজ রুকন। যা অকট্যভাবে পালন করতে হবে।

আল্লাহ তায়ালার নিকট বাইতুল্লাহর চর্তুদিকে তাওয়াফ করা আর তালবিয়া পাঠ এতই পছন্দনীয় যে, আল্লাহ তায়ালা প্রতিদিন বাইতুল্লাহ শরীফের ওপর ১২০টি রহমত নাজিল করেন। এরমধ্যে শুধুমাত্র তাওয়াফকারীদের জন্য ৬০টি রহমত নির্ধারণ করেছেন। তাওয়াফের রয়েছে কিছু আহকাম ও শর্ত। যা তুলে ধরা হলো-

তাওয়াফের আহকাম:
তাওয়াফের চক্কর পূর্ণ করা। তাওয়াফের স্থানেই তাওয়াফ করা। অর্থাৎ বাইতুল্লাহ শরীফের বাইরে মসজিদে হারামের ভেতরে তাওয়াফ করা।

তাওয়াফ করতে হবে নিজেকে। কোনো কিছুর ওপর সাওয়ার হয়ে হলেও। অর্থাৎ যে ব্যক্তি তাওয়াফের নিয়ত করবে তাওয়াফ তাকেই করতে হবে। আর হেঁটে তাওয়াফে অক্ষম হলে যানবাহন বা সাওয়ারিতে আরোহন করে তাওয়াফ করা।

তাওয়াফের শর্ত:
তাওয়াফের জন্য ৬টি শর্ত রয়েছে। এগুলো মধ্যে ৩টি শর্ত সর্বাবস্থায় প্রযোজ্য। আর ৩টি শর্ত শুধুমাত্র হজের ফরজ রুকন তাওয়াফে জিয়ারাতের জন্যই প্রযোজ্য।

সর্বাবস্থায় পালনীয় ৩ শর্ত:
মুসলমান হতে হবে। তাওয়াফের নিয়ত অর্থাৎ তাওয়াফের ইরাদা বা ইচ্ছা থাকতে হবে।
তাওয়াফ মসজিদে হারামের মধ্যে হতে হবে।

হজের জন্য পালনীয় ৩ শর্ত:
তাওয়াফে জিয়ারত নির্দিষ্ট সময়ে হওয়া। আর তা হলো ১০ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত। তাওয়াফ ইহরামের পরে হওয়া। আর উকুফে আরাফা অর্থাৎ আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের পরে হওয়া (৯ জিলহজ)।

আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে তাওয়াফের আহকাম ও শর্তগুলো যথাযথ পালন করে সঠিক ও সুন্দরভাবে তাওয়াফ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিদায়ী তাওয়াফে ২২ জুলাই ছিল এযাবতকালের সবচেয়ে বেশী ভির 

বিদায়ী তাওয়াফ কখন করতে হয়? 

 হজ্জ শেষে মক্কা শরীফ থেকে যখন বিদায় নেয়ার প্রস্তুতি নেবেন তখন বিদায়ী তাওয়াফ করবেন। বিদায়ী তাওয়াফের পর মক্কায় আর অবস্থান করবেন না। এ তাওয়াফে রম্‌ল নেই। এ তাওয়াফ হল হজ্জের সর্বশেষ কাজ। বিস্তারিত দেখুন পূর্ববর্তী ৭ম অধ্যায়ে।

হানাফী মাযহাবে বিদায়ী তাওয়াফের হুকুম কি?

 ওয়াজিব। এটা ছুটে গেলে দম দিতে হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

لاَ يَنْفِرَنَّ أَحَدٌ حَتَّى يَكُونَ آخِرُ عَهْدِهِ بِالْبَيْتِ

“কাবাঘরে বিদায়ী তাওয়াফ” করা ছাড়া যেন কেউ দেশে ফিরে না যায়।” (মুসলিম ১৩২৭)

বিদায়ী তাওয়াফের সময় যদি মেয়েদের হায়েয শুরু হয়ে যায় তাহলে কি করবে?

 হায়েযওয়ালী মেয়েদের বিদায়ী তাওয়াফ করা লাগবে না। ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত “হায়েযওয়ালী মেয়েদেরকে এ বিষয়ে রুখসত দেয়া হয়েছে।” (বুখারী ও মুসলিম)

বিদায়ী তাওয়াফ কি হজ্জের অন্তর্ভুক্ত কোন কাজ নাকি পৃথক ইবাদত?

 হানাফী মাযহাবে এটা হজ্জের অন্তর্ভুক্ত এবং এটা ওয়াজিব। কোন কোন মাযহাবে এটাকে হজ্জের বহির্ভূত পৃথক ইবাদত হিসেবে পালন করা হয়। তাদের মতে মক্কাবাসী বা মক্কায় অবস্থানরত ভিন দেশী এবং বহিরাগত লোকেরা মক্কা থেকে সফরে বের হলে বিদায়ী তাওয়াফ করা লাগবে এবং এটা বছরের যে কোন সময়েই হোক না কেন।

বিদায়ী তাওয়াফ কাদের উপর ওয়াজিব?

 এ তাওয়াফটি শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা মীকাতের বাইরে থেকে আসবেন এবং আবার নিজ দেশে চলে যাবেন।

এ বিষয়ে সর্বসম্মত রায় হল, যারা মক্কাবাসী অথবা বাহিরের লোক মক্কায় বসবাস করেন তাদের বিদায়ী তাওয়াফ করা লাগবে না। হানাফী মাযহাবের মতে মীকাতের ভিতরে অবস্থানকারী লোকজনেরও বিদায়ী তাওয়াফ নেই। যেমন হাদ্দা, বাহরা ও জেদ্দার লোকজনের।

বিদায়ী তাওয়াফের ক্ষেত্রে সাধারণতঃ কি কি ভুল হাজীরা করে থাকে?

ভুলগুলো নিম্নরূপ :

 বিদায়ী তাওয়াফ না করেই মক্কা ত্যাগ করে এতে ওয়াজিব ছুটে যায়।

 ১১ই যিলহজ্জে কেউ কেউ মক্কা ত্যাগ করে চলে যায়। যেতে হবে ১২ তারিখের দুপুরের পর কংকর নিক্ষেপ শেষ করে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..             

   ‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।

আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com

আমাদের পেইজ লাইক দিন শেয়ার করুন।        

জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন