সল্টলেকের পুজো উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই পুজোর মঞ্চেই নৃত্য পরিবেশন করলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। আর তারপরই আবার শুরু হয়ে গিয়েছে সৌরভের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা।
প্রধানমন্ত্রীর পুজো উদ্বোধনের সেই মঞ্চ অন্য একটি কারণে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠল।
ইউজেডসিসি-র পুজো একেবারেই বিজেপির নিজস্ব পুজো।
সেই পুজোর মঞ্চেই পারফর্ম করলেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট তথা বাংলার ‘মহারাজ’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার,২২ অক্টোবর ২০২০ইং ।। ৬ই কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)।। ৪ঠা রবিউল আউয়াল,১৪৪২ হিজরী
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : ‘বাঙালি’ হয়ে দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরনে সেই রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর খাদির পাঞ্জাবি ও ধুতি। মুখেও বেশকিছু বাংলা ভাষা। বাঙালির মন ছুঁতে আদ্যোপান্ত বাঙালি সংস্কৃতিতেই রাজ্যের মানুষকে দুর্গা পুজোর শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারচুয়াল উদ্বোধন করলেন সল্টলেকের ইউজেডসিসি-র পুজোর। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পুজো উদ্বোধনের সেই মঞ্চ অন্য একটি কারণে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠল। ইউজেডসিসি-র পুজো একেবারেই বিজেপির নিজস্ব পুজো। আর সেই পুজোর মঞ্চেই পারফর্ম করলেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট তথা বাংলার ‘মহারাজ’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। ফলত ফের শুরু গেল সৌরভের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা।
উল্লেখ্য, বুধবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যের বই উদ্বোধনে হাজির ছিলেন সৌরভ। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সল্টলেকের ইজেডসিসিতে বিজেপির পুজোর উদ্বোধনে মোদীর ছবির সামনেই নৃত্য পরিবেশন করলেন সৌরভ পত্নী ডোনা। ফলে সৌরভের ঘনিষ্ঠতা আসলে বামের সঙ্গে না রামের? তা নিয়ে ফের শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
এদিন সকালে রাজ্য বিজেপি-র প্রায় গোটা নেতৃত্বই হাজির ছিলেন ইজেডসিসি’র পুজোতে। ছিলেন শিবপ্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেননদের মতো কেন্দ্রীয় নেতারাও। ছিলেন রাজ্য নেতারাও। আর সেখানেই বিশেষ নজর কাড়ল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পত্নী ডোনা ও তাঁর দলের পরিবেশনায় ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। অমিত শাহের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড চালাতে শুরু করেছেন সৌরভ। ফলে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছিল আগেই। এবার বিজেপির পুজোতে ডোনার নৃত্য পরিবেশন সেই জল্পনায় আরও ঘি ঢালল। এমনকী মাস কয়েক আগেই ডোনা সৌরভের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, রাজনীতিতে গেলেও সৌরভ শীর্ষেই পৌঁছবেন। তা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। এবার বিজেপির মঞ্চে একেবারে সশরীরের ডোনার নাচের অনুষ্ঠান পুজোর মধ্যে রাজ্যের রাজনৈতিক পারদ আরও চড়াল।
এদিন প্রধানমন্ত্রীও তাঁর ভাষণে বারবার বাঙালি মনকে স্পর্শ করার চেষ্টা করে গিয়েছেন। ভাষণ শুরু করেছেন বাংলায়। বাঙালির দুর্গাপুজোর পর্বে তিনি দিল্লিতে থাকলেও তাঁর মন বাংলায় পড়ে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। মোদীর কথায়, ‘দুর্গাপুজো ভারতের একতা ও পূর্ণতার উৎসব। বাংলার দুর্গাপুজা ভারতের ভারতের পূর্ণতাকে এক নতুন ঔজ্জ্বল্য দেয়।’
যদিও বিজেপির নামে এই পুজো নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। চেতলা অগ্রণীর সর্বময় কর্তা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন ৬ বছর। এতদিন কেন দুর্গাপুজো নিয়ে মাথা ঘামাননি? সামনে বিধানসভা ভোট বলেই কী এই তৎপরতা? দুর্গাপুজোর বিষয়ে কোনও উৎসাহ ছিল না বিজেপির। এখন ভোটের কারণেই এই সক্রিয়তা।’
সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘দিদির পথেই মোদী দুর্গাপুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করলেন। দেশের প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রী এই ভাবে দুর্গাপুজোর মণ্ডপকে রাজনীতির আখড়া বানালেন। নিজের ভাষণে এতবার বাঙালির কথা বলতে হল তাঁকে, বিজেপি বাংলা বিরোধী বলেই এতবার বাঙালির কথা বলতে হল, এটা স্পষ্ট হয়ে গেল। নির্বাচন আসছে তাই পুজো উদ্বোধনের নামে দুর্গা পুজোর মণ্ডপে রাজনীতি করলেন।’
কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী কি জানেন না আজ মায়ের বোধন? মায়ের বোধনের দিনে মায়ের মণ্ডপকে সাক্ষী রেখে তিনি রাজনীতি করলেন। নিজের কীর্তন গাওয়ার তাঁর কাছে আরও অনেক সময় রয়েছে। কী ভাবে তিনি নোট বন্দি করেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের কী ভাবে দুর্ভোগে ফেলেছে সে তো সবাই জানে আর অন্য কথাগুলি বহুবার বলেছেন। মায়ের বোধনের দিনে এই রাজনীতি বাঙালি প্রত্যাখ্যান করবে।’
সূত্রঃ এই সময়
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’