প্রকাশিত : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ।।২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ(হেমন্তকাল)।।১১ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরী।
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক :
বিক্রমপুরের কৃতিসন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবি===========(তিন)========
বিক্রমপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় মোট চার জনের ভেতর তিনজনের বাড়ি শ্রীনগর উপজেলায় আমরা হয়তো শহীদ সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমেদ ছাড়া বাকি ৩ জনের সম্পর্কে অনেকেই তেমন জানিনা, আমি চেষ্টা করেছি তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে কিছু তথ্য তুলে ধরার __
শহীদ বুদ্ধিজীবী রফিকুল হায়দার চৌধুরী ঈশিকা
সাহিতিক শহীদ বুদ্ধিজীবী রফিকুল হায়দার চৌধুরী ঈশিকা শ্রীনগর উপজেলার হাসাড়া ইউনিয়নের সোনাকান্দা গ্রামের কৃতি সন্তান।
বিক্রমপুরের সাহিত্যিক রফিকুল হায়দার চৌধুরী (ঈষিকা) কর্মজীবনে ছিলেন একটি জীবনবিমা কোম্পানির কর্মকর্তা।
১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৭টায় রফিকুল হায়দার চৌধুরীকে তাঁর শহীদবাগের ভাড়া বাসা থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এ-দেশীয় দোসর আলবদর বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর ফিরে আসেননি। এমনকি সাহিত্যিক রফিকুল হায়দার চৌধুরী মৃত্যু দেহটি পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
তিনি সক্রিয় বা পরোক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও রাজনীতিসচেতন ছিলেন। স্বাধিকারের আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছেন। স্বাধীনতার আন্দোলনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছেন সর্বসময়।
বাসা থেকে ধরে নেওয়ার মাত্র একদিন আগে ১২ ডিসেম্বর রাতে তিনি তাঁর স্ত্রীকে বলেছিলেন, “আর মাত্র তিন-চার দিন কষ্ট করলেই দেশ স্বাধীন হয়ে যাবে”। কিন্তু সেই স্বাধীনতা তিনি দেখে যেতে পারেননি।
এ ঘটনা সম্পর্কে জানা যায় তাঁর স্ত্রী হাসিনা চৌধুরীর ‘আমার স্বামী’ রচনা থেকে। তিনি লিখেছেন, ‘দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর এল স্বাধীনতা।
কিন্তু এই স্বাধীনতা আমার জীবনে বড় নিষ্ঠুর। কঠিন বাস্তবের নিষ্ঠুর কশাঘাতের মাঝেও এই স্মৃতি আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়ায়।
সে স্মৃতি মনে ভেসে উঠলেই সবকিছু কেমন এলোমেলো হয়ে যায়। সেই দিনটি, যে দিনটি কেড়ে নিয়েছে আমার সবচেয়ে আপন মানুষটি, কেড়ে নিয়েছে আমার সব সুখ, শান্তি, আশা, ভরসা।
হারিয়ে যাওয়ার ১০ ঘণ্টা আগেও যে মানুষটি দেখিয়েছিলেন কত সুখের স্বপ্ন, শুনিয়েছিলেন আশার বাণী।
বলেছিলেন, আর তিন থেকে চারটা দিন কষ্ট করলেই দেশ স্বাধীন হয়ে যাবে। কথাগুলো বলেছিলেন ১২ ডিসেম্বর রাত নয়টায়।
এর মাত্র ১০ ঘণ্টা পর এল সেই অশুভ তারিখ ১৩ ডিসেম্বর। ‘আমরা তখন থাকতাম ৯২১ শহীদবাগের বাড়ির দোতলায়। বাড়ির মালিক আজিজুল্লাহ সাহেব থাকতেন তিনতলায় আর নিচতলায় যিনি বাস করতেন, তিনি একটি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন।
পরে জেনেছি তিনি জামায়াতের রমনা শাখার সেক্রেটারি ছিলেন। ‘১৩ ডিসেম্বর, সকাল সাতটা। শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। সবেমাত্র ঘুম থেকে উঠে বিছানায় বসে আছি দুই মাসের ছেলেটিকে কোলে নিয়ে।
আমার স্বামীও উঠে চেয়ারে বসেছে। এমন সময় বাসার কলবেল বাজতে শুরু করল। সামনে মেয়ে দাঁড়িয়ে।
ওকে ওর বাবা বলল, “দেখো তো কে এসেছে।” মেয়ে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলেই দেখে চারজন খাকি পোশাকধারী, মুখে সাদা রুমাল বাঁধা, হাতে রাইফেল।
মেয়েকে তারা জিজ্ঞাসা করেছে, “তোমার বাবা কোথায়?”
—-
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর–আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন–বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন।
জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor