ফসলের মাঠে কৃষকের স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু

0
17
ফসলের মাঠে কৃষকের স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু

প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ইং ।। ৩০শে অগ্রাহায়ণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)। ২৯শে রবিউস-সানি,১৪৪২ হিজরী।
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : জমির সঙ্গে জড়িয়ে আছে জীবনের সমান ভালোবাসা, সেখানেই হৃদয় থেকে উৎসারিত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন এক কৃষক। শস্যক্ষেত্রকে ক্যানভাস ধরে সেখানে লালশাক ও সরিষা বীজ বপনের বিন্যাসে পরম মায়ায় ফুটিয়ে তুলেছেন জাতির পিতার প্রতিকৃতি, স্মৃতিসৌধ, নৌকা, শাপলা ও মুজিববর্ষ। এই শিল্পী কৃষকের সৌন্দর্যময় ফসলের মাঠ দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে মানুষ।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে এই শিল্পকর্ম সৃজন করেছেন কৃষক আবদুল কাদির তার বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের জমিতে। উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের পাড়া খালবলা গ্রামের মো. তারা মিয়ার ছেলে তিনি। গত বছরও তিনি তার স্ত্রী মোকসুদা আক্তারের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে ‘লাভ’ চিহ্ন এঁকে ‘ভালোবাসার জমিন’ বানিয়েছিলেন।

দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক ৪১ বছর বয়সী আবদুল কাদির পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় শ্রমিকের সংকট থাকায় নিজেদের জমিতে কাজ শুরু করেন। পরে আর পড়ালেখা হয়নি। মাঠেই দিন-রাত পরিশ্রম করে সোনার ফসল ফলান তিনি। পহেলা ডিসেম্বর নিজের ৩৩ শতক জমিতে পাড়া খালবলা বন্ধুমহল ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে তিনি এঁকেছেন এই অনন্য শিল্পকর্ম। সরিষা ও লালশাক দিয়ে নিজের জমিতে পরম মায়ায় ফুটিয়ে তুলেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি।

সঙ্গে এঁকেছেন মুজিব শতবর্ষ, স্মৃতিসৌধ, শাপলা ও নৌকা। বীজগুলো গজানোর পর দৃশ্যমান হয়ে এসেছে এসব প্রতিকৃতি। জমির পাশে বাঁশ দিয়ে একটি টাওয়ারও বানানো হয়েছে, যাতে মানুষজন সেখানে দাঁড়িয়ে চিত্রকর্ম দেখতে পারে এবং ছবি তুলতে পারে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবং চলমান ভাস্কর্য বিতর্কের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর চেতনা জাগ্রত রাখতে ফসলের মাঠে তার প্রতিকৃতি এঁকেছেন কৃষক কাদির। তিনি বলেন, জমি চাষ করে শস্য পাওয়া যায়। কিন্তু এবার জাতির পিতার চেতনা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে তিনি এই কাজ করেছেন। এতে শস্য পাওয়া যাবে না, আর্থিক লাভও হবে না; কিন্তু তিনি মানসিকভাবে তৃপ্তি পাচ্ছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ এসে দেখছে তার এই কাজ।

পাড়া খালবলা বন্ধুমহল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল ইসলাম সোহেল বলেন, মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর চেতনা প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এটি করা হয়েছে। ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে তারা কৃষক কাদিরকে সহযোগিতা করেছেন। এমন একটি নান্দনিক কাজে অংশ হতে পেরে তারা আনন্দিত।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, কৃষক কাদির ফসলের ক্ষেতে তার মানসিক সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। দূর-দূরান্ত থেকে তার এ শৈল্পিক কাজ দেখতে মানুষজন আসছে। আগামী বছর ‘বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক’ দেওয়ার জন্য কৃষক আবদুল কাদিরের নাম প্রস্তাব করা হবে।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি দেখতে। তিনি মা-মাটি ও কৃষককে ভালোবাসতেন। কৃষক কাদির বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারণ করে তার প্রতিকৃতি মাঠে প্রতিস্থাপন করেছেন। অনবদ্য শিল্পকর্ম সৃষ্টিতে তাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময় উৎসাহিত করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..

‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন