পদ্মা সেতু দৃশ্যমান প্রায় তিন কিলোমিটার ১৮তম স্প্যান বসলো

0
21
জুলাই মাসেই দেখা যাবে পুরো পদ্মাসেতু

প্রকাশিত:বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ইং ।। ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।

বিক্রমপুর খবর : স্টাফ রিপোর্টার লৌহজং থেকে : পদ্মা সেতুতে বসলো সেতুর ১৮তম স্প্যান।বুধবার বেলা একটার দিকে সেতুর মাওয়া প্রান্তে মাঝনদীতে ১৭ ও ১৮ নম্বর পিলারের ওপর এ স্প্যান তোলা হয়েছে। দৃশ্যমান হলো ২ হাজার ৭শ মিটার সেতু। চলতি মাসে আরও দুটি স্প্যান তোলার পরিকল্পনার কথা জানালেন প্রকল্প পরিচালক।

এর আগে সকাল সাড়ে নয়টায় মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ধূসর রংয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও তিন হাজার ১৪০ টন বিশিষ্ট স্প্যানটিকে বহন করে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান-ই’ ভাসমান ক্রেন। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের মধ্যেই নির্ধারিত পিলারের সামনে গিয়ে পৌঁছায় সেটি। এরপর পিয়ারের ওপর বসানোর কার্যক্রম শুরু হয়।

প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়,পদ্মাসেতুর মোট ৪২টি পিলারের মধ্যে বর্তমানে কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৩৫টির। সেতুর ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ইতিমধ্যে ৪১০টি রেলস্ল্যাব বসানো হয়েছে। ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১২৫টি স্ল্যাব বসানো সম্পন্ন হয়েছে।

পদ্মাসেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে চীন থেকে মাওয়ায় এসেছে ৩৩টি স্প্যান। এর মধ্যে ১৭টি স্প্যান স্থায়ীভাবে বসে গেছে। এছাড়া আরেকটি স্প্যান অস্থায়ীভাবে বসানো হয়েছে।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ১৮টি স্প্যান। প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।

২০০৭ সালে বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয়। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

নদী এখন অনেকটা শান্ত,নেই বেপোরোয়া স্রোতের ঝাপাঝাপি। নদীর এ শান্ত রূপ সেতুর কাজে এনেছে গতি। বর্ষায় যখন ৪ মাসে বসানো গেছে মাত্র ১টি স্প্যান,সেখানে গত একমাসেরও কম সময়ের মধ্যে বসেছে ৩টি স্প্যান। ১৯ নভেম্বর ১৬তম,২৬ নভেম্বর ১৭তম স্প্যানটি বসানোর পর আজ বসেছে ১৮তম স্প্যান।

প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান,এখন পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের কাজে অগ্রগতি হয়েছে ৭৬ ভাগ। এর মধ্যে সেতুর কাজে অগ্রগতি হয়েছে ৮৫ ভাগ আর নদী শাসনের কাজ ৬৫ ভাগ।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন