প্রকাশিত:বুধবার,১০এপ্রিল ২০১৯।
বিক্রমপুর খবর:অনলাইন ডেস্ক:মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর দশম স্প্যান বসানো হয়েছে। বুধবার দুপুরে পৌনে ১ টার দিকে সেতুর ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারের ওপর এ স্প্যান বসানো হয়। এর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর দেড়-কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। এর আগে জাজিরা প্রান্তে আটটি ও মাওয়া প্রান্তে একটি স্প্যান বসানো হয়।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার সকালে মাওয়াস্থ কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে দশম স্প্যান নিয়ে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই রওনা হয়। স্প্যান বহনকারী ভাসমান ক্রেন সেতুর ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারের কাছে পৌছানোর সঙ্গে সঙ্গে স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর দুপুর পৌনে ১টার দিকে দশম স্প্যান বসানো হয়।
পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি বসানোর কথা ছিল মাওয়া প্রান্তে। কিন্তু নদীর তলদেশের মাটি নরম থাকায় এ পারের কাজ দেরিতে শুরু হয়। একে একে জাজিরায় ৮টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এর আগে অস্থায়ীভাবে মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটিতে একটি স্প্যান বসানো হয়। ৬ ও ৭ নম্বর খুঁটিতে এটি বসানোর কথা ছিলো। কিন্তু ৬ ও ৭ নং খুঁটি প্রস্তুত না থাকায় অস্থায়ীভাবে এটি ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটিতে বসানো হয়েছে। পরবর্তীতে ৬ ও ৭ নম্বর খুঁটি প্রস্তুত হবার পর এটি সরিয়ে নেয়া হবে। একই সঙ্গে প্রথম পর্যায়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়া ৬ ও ৭ নম্বর খুঁটির পাইল অবশেষে শেষ হতে যাচ্ছে কাল বৃহস্পতিবার। ৭ নম্বর খুঁটিতে ৭টি পাইলই স্থাপন হয়ে গেছে। এরমধ্যে চারটি ট্যাম (খাঁজকাটা) পাইল। আর ৬ নম্বর খুঁটির ৬ ছয়টি পাইলই সম্পন্ন হয়েছে। বাকি একটি পাইলও সম্পন্ন হওয়ার পথে। বাকি অংশটুকু কাল বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে।
আগামী ২০ এপ্রিল এদিকে ১১তম স্প্যান বসবে জাজিরা প্রান্তে ৩৪ ও ৩৩ নম্বর খুঁটিতে। ‘৬সি’ নম্বর স্প্যানটি বসানোর পরিকল্পনাও এখন চূড়ান্ত। ৩৪ নম্বর খুঁটিতে লেফটিং ফ্রেম (স্প্যান ঝুলিয়ে রাখার যন্ত্র) বসানো হচ্ছে এখন। পদ্মা মূল সেতুর ২৯৪টি পাইলে থাকবে মোট ৪২টি খুঁটি। যার মধ্যে নদীর মধ্যে ২৬২ টি পাইল। মূল সেতুর ২৯৪ টি পাইলের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৪৭ টি পাইলের কাজ শেষ হয়েছে। এসব খুঁটির ওপরে ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। ইতোমধ্যেই ৯টি স্প্যান বসে গেছে। ৪২টি খুঁটির মধ্যে ২২টি খুঁটির নির্মাণ পুরোপুরি হয়ে গেছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে আরও ১০টি খুঁটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।