প্রকাশিত :মঙ্গলবার,১৯ মে ২০২০ ইং ।। ৫ই জ্যৈস্ঠ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ।। ২৫ রমজান ১৪৪১
বিক্রমপুর খবর :অফিস ডেস্ক : পদ্মা নদীর মাঝির কুবের-গণেশ-মালা, প্রাগৈতিহাসিকের ভিখু-পাঁচীর মতো দারিদ্র্যপীড়িত অসাধারণ চরিত্রগুলো নিয়ে জীবনঘনিষ্ঠ গল্পে পাঠকহৃদয় কেড়েছেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক তিনি।
আজ এ প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিকের জন্মদিন। ১৯০৮ সালের ১৯ মে বিহারের সাঁওতাল পরগনা, বর্তমান ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দুমকা শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পৈতৃক বাড়ি বিক্রমপুরের সিরাজদিখান উপজেলার মালবদিয়া গ্রামে। পিতা হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের গ্রাজুয়েট । তিনি সেটেলমেন্ট বিভাগে চাকরি করতেন এবং শেষজীবনে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম রাখা হয়েছিল অধরচন্দ্র। বাবার দেয়া নাম ছিল প্রবোধকুমার আর ডাকনাম মানিক।
তাঁর মা নীরদাসুন্দরীর আদিনিবাস ছিল পূর্ববঙ্গের গাউদিয়া গ্রামে। এই গ্রামটির পটভূমিতে তিনি রচনা করেন তার প্রসিদ্ধ উপন্যাস পুতুলনাচের ইতিকথা।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবী জুড়ে মানবিক মূল্যবোধের চরম সংকটময় মূহুর্তে বাংলা কথা-সাহিত্যে যে কয়েকজন লেখকের হাতে সাহিত্যজগতে নতুন এক বৈপ্লবিক ধারা সূচিত হয় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম।
তার রচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল মধ্যবিত্ত সমাজের কৃত্রিমতা, শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম, নিয়তিবাদ ইত্যাদি। ফ্রয়েডীয় মনঃসমীক্ষণ ও মার্কসীয় শ্রেণীসংগ্রাম তত্ত্ব দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন যা তার রচনায় ফুটে উঠেছে।
তার নাটক, গল্প, সাহিত্যের সব বিখ্যাত চরিত্রের মধ্য দিয়ে নিজের ওপর পড়া দারিদ্র্যের কষাঘাত ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি পাঠকের কাছে।
বাবার বদলির চাকরির সূত্রে মানিকের শৈশব-কৈশোর ও ছাত্রজীবন কেটেছে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার বিভিন্ন জেলা শহরে। তাই পিতার চাকরিসূত্রে মানিককে দুমকা, আড়া, সাসারাম, কলকাতা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বারাসাত, টাঙ্গাইল ও মেদিনীপুরের নানা স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়।
১৯২৬ সালে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় মেদিনীপুর জেলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা এবং ১৯২৮ সালে বাঁকুড়ার ওয়েসলিয়ান মিশন থেকে আইএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং সে বছরই কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে বিএসসি-গণিত বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হন। কিন্তু পাঠ অসমাপ্ত রেখেই তিনি পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি তাঁর সহোদর ভাইয়ের সঙ্গে একটি প্রিন্টিং প্রেস ও প্রকাশনব্যবসা স্থাপন করেন। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি সহোদরের সঙ্গে যৌথভাবে ‘উদয়াচল প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিশিং হাউস’ নামের প্রকাশনী ব্যবসা পরিচালনা করেন। একইসঙ্গে তিনি বঙ্গশ্রী (১৯৩৭-৩৯) পত্রিকার সহকারী সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। এছাড়া কিছুদিন তিনি ভারত সরকারের ন্যাশনাল ওয়ার ফ্রন্টের প্রভিন্সিয়াল অরগানাইজার এবং বেঙ্গল দপ্তরে প্রচার সহকারী পদেও কর্মরত ছিলেন।
চাকরির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছিলেন মানিক বন্দোপাধ্যায়। কিছুদিন নবারুণ পত্রিকায় চাকরি করেন সহ-সম্পাদক হিসেবে। এরপর বঙ্গশ্রী পত্রিকায়ও একই পদে কাজ করেন। নিজের একটি প্রেস চালু করেছিলেন। কিন্তু অর্থাভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়।
মানিক বন্দোপাধ্যায় জীবনের অতি ক্ষুদ্র পরিসরে চল্লিশটি উপন্যাস ও তিনশ ছোটগল্প রচনা করেছেন। পুতুলনাচের ইতিকথা, দিবারাত্রির কাব্য, পদ্মা নদীর মাঝি ইত্যাদি উপন্যাস ও অতসী মামি, প্রাগৈতিহাসিক, ছোট বকুলপুরের যাত্রী ইত্যাদি বাংলাসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলে বিবেচিত হয়। ইংরেজি ছাড়াও তার রচনাগুলো বহু বিদেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
সাহিত্যের পথে যাত্রাটা ছিল তার বেশ আত্মবিশ্বাসী। প্রথম ছাপা গল্প ‘অতসী মামি’ এ আত্মবিশ্বাসেরই ফসল। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে অনার্সে পড়ার সময় এক বন্ধুর সঙ্গে অনেকটা চ্যালেঞ্জ ধরেই লিখেছিলেন গল্পটি। ‘বিচিত্রা’য় ছাপা হয়েছিল সেটি।
১৯২৯ সালে উপন্যাস ‘দিবা রাত্রির কাব্য আদি রচনা’ শুরু হয়। ১৯৩৪ সালে এটি বঙ্গশ্রী পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ডিসেম্বর ১৯৩৫-এ। তবে ‘জননী’ একই সালের মার্চে প্রকাশিত হয়। এদিক থেকে ‘জননী’ মানিকের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস।
পদ্মানদীর মাঝি এ সাহিত্যিকের কালজয়ী উপন্যাস। নদীকে ঘিরে গড়ে ওঠা জনবসতির সঙ্গে মানিক অনুভব করতেন এক আত্মিক বন্ধন। মাঝি-জেলেদের সঙ্গে গল্পে মজে থাকতেন, খাওয়া-দাওয়াও করতেন। সেই আত্মীয়তা থেকেই সৃষ্টি করেছিলেন তার সবচেয়ে জনপ্রিয় রচনা ‘পদ্মা নদীর মাঝি’।
‘পদ্মা নদীর মাঝি’ পূর্বাশা (১৯৩৪) এবং ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ ভারতবর্ষ পত্রিকায় (১৯৩৫) ধারাবাহিকভাবে মুদ্রিত হয়। ১৯৩৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় এই দুটিসহ ‘জীবনের জটিলতা’ নামে আরো একটি উপন্যাস। ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘প্রাগৈতিহাসিক’। প্রাথমিক গ্রন্থ প্রকাশনায় কথাসাহিত্যিক হিসেবে সাফল্য অর্জনের পর যথাক্রমে প্রকাশিত হয় : ‘অমৃতস্য পুত্রাঃ’ (১৯৩৮), ‘মিহি ও মোটা কাহিনী’ (১৯৩৮), ‘সরীসৃপ’ (১৯৩৯), ‘বৌ’ (১৯৪০), ‘শহরতলী’ (১৯৪০-৪১), ‘অহিংসা’ (১৯৪১), ‘ধরাবাঁধা জীবন ‘ (১৯৪১), ‘চতুষ্কোণ’ (১৯৪২), ‘সমুদ্রের স্বাদ’ (১৯৪৩) এবং ‘প্রতিবিম্ব’ (১৯৪৩)।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চিহ্ন’ (১৯৪৭) একটি অসাধারণ উপন্যাস। ভারতবর্ষের গণআন্দোলনের সঙ্গে জনজীবনের সম্পৃক্ততা এ উপন্যাসে শৈল্পিক অভিব্যক্তি লাভ করেছে। এ পর্বে আরো প্রকাশিত হয়েছে : ‘আজ কাল পরশুর গল্প’ (১৯৪৬), ‘চিন্তামণি’ (১৯৪৬), ‘পরিস্থিতি’ (১৯৪৬), ‘আদায়ের ইতিহাস ‘ (১৯৪৭), ‘খতিয়ান’ (১৯৪৭), ‘মাটির মাশুল’ (১৯৪৮), ‘ছোটবড়’ (১৯৪৮), ‘ছোট বকুলপুরের যাত্রী’ (১৯৪৯), ‘জীয়ন্ত’ (১৯৫০), ‘পেশা’ (১৯৫১), ‘স্বাধীনতার স্বাদ’ (১৯৫১), ‘সোনার চেয়ে দামী’ (১৯৫১-৫২), ‘ছন্দপতন’ (১৯৫১), ‘ইতিকথার পরের কথা’ (১৯৫২), ‘পাশাপাশি’ (১৯৫২) ও ‘সার্বজনীন’ (১৯৫২)।
পারিবারিক জীবনে সংগ্রামের কথাও তিনি লিখে গেছেন তার ‘অপ্রকাশিত মানিক’ গ্রন্থে। স্ত্রী মৃত সন্তান প্রসব করার পর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘বাচ্চা মরে যাওয়ায় ডলি (স্ত্রী) অখুশি নয়। অনেক হাঙ্গামা থেকে বেঁচেছে। বলল, বাঁচা গেছে বাবা, আমি হিসেব করেছি বাড়ি ফিরে মাসখানেক বিশ্রাম করে রাঁধুনী বিদায় দেব। অনেক খরচ বাঁচবে।’
১৯৫২ সালের পর মানিক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অর্থাভাব ও অতিরিক্ত পরিশ্রম তাঁর মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে। তাঁর লেখা ডায়েরির সাক্ষ্য অনুসারে ১৯৫২ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তাঁকে লেখা অব্যাহত রাখতে হয়েছে অ্যালকোহলের উপর নির্ভর করে। এ সময় প্রকাশিত হয় : ‘নাগপাশ’ (১৯৫৩), ‘আরোগ্য’ (১৯৫২), ‘চালচলন’ (১৯৫৩), ‘তেইশ বছর আগে পরে’ (১৯৫৩), ‘ফেরিওলা’ (১৯৫৩), ‘হরফ’ (১৯৫৪), ‘শুভাশুভ’ (১৯৫৪), ‘লাজুকলতা’ (১৯৫৪), ‘পরাধীন প্রেম’ (১৯৫৫), ‘হলুদ নদী সবুজ বন’ (১৯৫৬), ‘মাশুল’ (১৯৫৬), ‘প্রাণেশ্বরের উপাখ্যান’ (১৯৫৬)। শেষ পর্বের এসব উপন্যাসের শিল্প সার্থকতা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও একজন সাহিত্যিকের অবিরাম সৃজন প্রচেষ্টার দ্যোতক এসব রচনা। অবশ্য ‘প্রাণেশ্বরের উপাখ্যান’ মরণোত্তর প্রকাশিত উপন্যাস। মরণোত্তর আরো প্রকাশিত হয় ‘মাটি-ঘেঁষা মানুষ’ (১৯৫৭), ‘শান্তিলতা’ (১৯৬০) প্রভৃতি উপন্যাস। ‘পেশা’, ‘স্বাধীনতার স্বাদ’, ‘সোনার চেয়ে দামী’, ‘ছন্দপতন’, ‘ইতিকথার পরের কথা’, ‘পাশাপাশি’, ‘সার্বজনীন’, ‘নাগপাশ’, ‘চালচলন’, ‘তেইশ বছর আগে পরে’, ‘শুভাশুভ’ প্রভৃতি উপন্যাসে ও অজস্র ছোটগল্পে দেশভাগ, দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা, কৃষক-শ্রমিক-মজুর এবং কালোবাজারির বাস্তব চিত্র উন্মোচিত হয়েছে। ‘হলুদ নদী সবুজ বন’ উপন্যাসে বাংলার কৃষক ও মজুর শ্রেণীর চিত্র পাওয়া যায়। এমনকি কলকারখানার শ্রমিকদের কৃষক সত্তার পরিচয় দিয়েছেন মানিক।
১৯৪৯ সালে পিতৃগৃহ বিক্রির পর ভাইদের সঙ্গে যৌথ পরিবারের আশ্রয় ছেড়ে বৃদ্ধ পিতাসহ ভাড়াবাড়িতে উঠার পর মানিকের জীবনে দারিদ্র্যের সূচনা হয়। মারাত্মক আর্থিক সঙ্কট, অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার অন্ধকারে প্রবেশ করেন তিনি। নিজের রোগের প্রকোপ বৃদ্ধিতে এবং বিরূপ রাজনীতিক বিতর্কে নিজের সহযাত্রীর কাছ থেকে আক্রমণের শিকার হয়ে তিনি আরো বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে এখানে উল্লেখ্য যে, প্রথম জীবনে মানিক সাহিত্য সাধনায় খ্যাতি লাভের সঙ্গে সঙ্গে দারিদ্র্য ও দুঃসহ ব্যাধি অর্জন করেন। কিন্তু ১৯৩৮-৪৮ কালপর্বে পরিস্থিতি ১৯৪৯-এর পরবর্তী বছরগুলোর মত ছিল না। কলকাতায় ৪ ভাইয়ের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও বাড়ি বিক্রির একবছরের মাথায় ছয়জনের সংসারে নিজের পিতাকে ঠাঁই দেন তিনি। ১৯৫০ সালে পঞ্চম বারের মতো তাঁর গর্ভবতী স্ত্রী মৃত সন্তান প্রসব করেন।
১৯৫২ সালে আর্থিক সঙ্কট আরো মারাত্মক হয়ে ওঠে। সুদের বিনিময়ে স্ত্রীর অলঙ্কার বন্ধক রেখে ঋণ করেন তিনি। ১৯৫৩-৫৬ তিন বছরের জীবন ছিল দুর্বিষহ। নিজের অসুস্থতা, পুত্র-কন্যার অসুস্থতা, পাওনাদার ও দোকান মালিকদের খারাপ আচরণ এবং বাকি ভাড়ার জন্য বাড়িওয়ালার উকিল নোটিশ নিয়ে বিব্রত মানিককে অতিমাত্রায় পানাসক্ত করে তোলে। ১৯৫৫ সালে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিন মাস ছিলেন। হাসপাতাল ত্যাগের পর জ্যেষ্ঠ কন্যার ভাঙা পায়ের চিকিৎসা ও বাড়িওয়ালার মামলায় বিচলিত হতে হয়েছে তাঁকে। এ সম্পর্কে অরুণকুমার মুখোপাধ্যায় ‘কালের প্রতিমা’ গ্রন্থে লিখেছেন : ”উদয়াস্ত খাটুনি, অর্থাভাব, আরো খাটুনি, তা থেকে মুক্তির জন্য সুরাসক্তি, অসুস্থতা, আরো খাটুনি এই অন্ধ বৃত্তের মধ্যে পাক খেয়ে চলতে থাকে তাঁর জীবন। দারিদ্র্য থেকে মুক্তির জন্য অনবরত লেখা, উদ্বেগ থেকে মুক্তির জন্য সুরাসক্তি- এই অন্ধ চক্রাবর্তনকে মানিক খুব দ্রুত আপন করে নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত যকৃতের রোগ, রক্ত আমাশয় ও মৃগীরোগ একসঙ্গে আক্রমণ করে এই প্রতিভাবান লেখককে ভূপাতিত করল।” ৩১ জুলাই ডায়েরিতে তাঁকে লেখতে দেখা যাচ্ছে : ”কদিন থেকে শরীর খুব খারাপ… কী যে দুর্বল বলা যায় না… বিছানা থেকে উঠবারও যে শক্তি নেই… এদিকে ঘরে পয়সা নেই… জোর করে তো বেরোলাম ফিরব কিনা না জেনে।” এই বাস্তবতা মানিকের নিজের সৃষ্টি অনেক চরিত্রের জীবনের সঙ্গে মিলে যায়।
ক্ষুধা, দারিদ্রে পিষ্ট হয়ে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ক্লান্ত-শ্রান্ত এ সাহিত্যযোদ্ধা বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, ‘দেখো, দুটি ডাল-ভাতের সংস্থান না রেখে বাংলাদেশে কেউ যেন সাহিত্য করতে না যায়।’
বেঁচে থাকতে দিনের পর দিন ক্ষুধার তাড়নায় ছটফট করেছিলেন তিনি। কিন্তু মৃত্যুর পর রাশি রাশি ফুলের ভারে নুয়ে পড়ে তার মরদেহ।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন যা পরবর্তী কালে জটিল অবস্থায় গমন করে। জীবনের শেষদিকে তীব্র আর্থিক কষ্টে ভুগেছেন তিনি। ১৯৫৬ সালের ৩ ডিসেম্বর এ কিংবদন্তী লেখক পৃথিবীকে বিদায় জানান। অকাল মৃত্যু ঘটে তার। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৪৮।