প্রকাশিত:শনিবার,১৯ জানুয়ারি ২০১৯।
বিক্রমপুর খবর::অনলাইন ডেস্ক:প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিজয় পাওয়া যত কঠিন,সেই বিজয় রক্ষা করে জনগণের সেবা করা আরও কঠিন,সেই কঠিন কাজটি আমাদের করতে হবে। আমাদের ওয়াদা বাংলাদেশেকে আমরা ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত করবো।আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। সারাদেশে সুষম উন্নয়ন হবে। দলমত নির্বিশেষে সবার জন্য কাজ করে যাবে সরকার, যে বিজয় অর্জিত হয়েছে তা ধরে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে। আমরা এই দেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবো। জনগণ যে রায় দিয়েছে, সেই রায় হচ্ছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রায়। এটাই আমাদের অঙ্গীকার। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবো। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের সাফল্য উদযাপনে আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশে একথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন,৩০ ডিসেম্বরের বিজয় স্বাধীনতার স্বপক্ষের জনগণের। এই রায় হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রতি রায়। এ নির্বাচন অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রার রায়। তাই জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা জনপ্রতিনিধিদের মনে রাখতে হবে।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ায় জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন পর স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করেছে। যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন এবং যারা ভোট দেননি, সবাইকে ধন্যবাদ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, যারা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন, যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা নিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনসহ তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
শেখ হাসিনা বলেন, ঐক্যবদ্ধ শক্তি সবসময় বিজয় অর্জন করে এই নির্বাচনে সেটাই প্রমাণ হয়েছে। যারা এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, সব রাজনৈতিক দল, সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাই এই কারণে যে, তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচনকে অর্থবহ করেছেন। তবে আমরা যেহেতু সরকার গঠন করার সুযোগ পেয়েছি, জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, আমরা সবার তরে সবার জন্য কাজ করবো। এ বিজয় আমার একার নয়, এ বিজয় বাংলাদেশের সব জনগণের।
শনিবার দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ বিজয় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন।সকাল ১০টা থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লোকারণ্য হয়ে ওঠে। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে উদ্যান মুখরিত হয়। নেতাকর্মীদের মধ্যে নারীদের পরনে লাল ও সবুজ রঙের শাড়ি এবং ছেলেদের বেশিরভাগ লাল ও সবুজ রঙের গেঞ্জি ও টুপি পরে সমাবেশে উপস্থিত হন।
’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে। প্রতিটি মানুষের জীবনমান উন্নত করবো, সেখানে কোনো দল বা মত দেখা হবে না। প্রতিটি মানুষ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সেবা করার দায়িত্ব জনগণ আমাদের দিয়েছে। কাজেই যারা ভোট দিয়েছেন বা যারা ভোট দেননি, সবার প্রতিই আমি ধন্যবাদ জানিয়ে এইটুকু বলবো, আমরা সকলের তরে, সকলের জন্য কাজ করবো।’
একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনি ইশতেহারের অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই নির্বাচনি ইশতেহারের পক্ষে জনগণ রায় দিয়েছে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভোট দিয়েছে। সেই ভোটের সস্মান যেন থাকে, অবশ্যই আমরা সেই বিষয়টা সবসময় মাথায় রেখে সার্বিকভাবে সুষম উন্নয়ন করে যাব। ’
দেশ ও দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন সমাজ গড়ে তুলতে চান দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। আরও আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। জনগণের এই রায় হচ্ছে, সেই আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পক্ষে রায়। এই রায় হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষে রায়। কারণ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রতি জনগণ এবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে রায় দিয়েছে।’
বাংলার মাটিতে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের কোনো স্থান হবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ, জঙ্গিবাদ, মাদক সন্ত্রাসের স্থান হবে না, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে উঠবে।’ তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ে তেলার লক্ষ্যে মানুষ রায় দিয়েছে। আমরা এই দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তুলব। এটাই হচ্ছে আমাদের অঙ্গীকার।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিজয় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। এতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সভাপতির উদ্দেশে তার বক্তব্যের আগে একটি অভিনন্দনপত্র পাঠ করেন। সমাবেশটি পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কার্যনির্বাহী সদস্য মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণ ও উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও সাদেক খান, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আকতার, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার, তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক খগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল চৌধুরী শোভন।