ছুরি দিয়ে মানুষ মারা আর খাদ্যে ভেজাল দিয়ে ধীরে ধীরে মানুষ মারা একই ধরনের অপরাধ-অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

0
174
নুসরাত হত্যার রায় একটি মাইলফলক: অ্যাটর্নি জেনারেল

প্রকাশিত:রবিবার,১৭ফেব্রুয়ারি ২০১৯।     

বিক্রমপুর খবর:অনলাইন ডেস্ক:খাদ্যে ভেজাল মেশানোর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শাস্তি হওয়া দরকার কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।

অ্যাটর্নি জেনারেলের নিজ কার্যালয়ে রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘খাদ্যে ভেজাল মেশানোর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শাস্তি অবশ্যই হওয়া উচিত।’

এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি খাদ্যে ভেজাল মোশানোর অপরাধকে ‘একটি বড় দুর্নীতি’বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।খাদ্যে ভেজাল মেশানোর কারণে মানুষের কিডনি ও লিভার নষ্ট এবং ক্যানসার হচ্ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন আদালত।

দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যে ভেজাল বিষয়ে কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনা হলে হাইকোর্টের বিচারপতি মো.নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

প্রতিবেদনগুলো আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মামুন মাহবুব।

ওই প্রতিবেদনের ওপর শুনানিকালে আদালত বলেন,‘খাদ্যে ভেজাল মেশানো একটি বড় দুর্নীতি। এ ধরনের ভেজালে মানুষের কিডনি ও লিভার নষ্ট হচ্ছে,ক্যানসার হচ্ছে।মানুষ এখন শুধু টাকার পেছনে ঘুরছে।দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে কেউ ভাবছেন না।’

শুনানি শেষে ঢাকাসহ সারাদেশের বাজারে কোনো কোনো কোম্পানির দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্যে কী পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক এবং সিসা মেশানো রয়েছে, তা নিরূপণ করে একটি জরিপ প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।একইসঙ্গে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয় এবং মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৩ মার্চ দিন নির্ধারণ রাখা হয়।

সম্প্রতি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আর্থিক সহায়তায় গো খাদ্য,দুধ, দই ও বাজারে থাকা প্যাকেটের পাস্তুরিত দুধ নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগার (এনএফএসএল) জরিপ চালায়।এনএফএসএল জরিপের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গাভীর দুধের ৯৬টি নমুনা সংগ্রহ করে।ঢাকাসহ তিন জেলার ছয়টি উপজেলাসহ ১৮টি স্থান থেকে দুধের পাশাপাশি অন্যান্য নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। গাভীর দুধ ও গো-খাদ্য সরাসরি খামার থেকে সংগ্রহ করা হয়।

ঢাকা শহরের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকান ও আশপাশের উপজেলার দোকান থেকে দই সংগ্রহ করে এনএফএসএল। বিভিন্ন সুপার স্টোর থেকে সংগ্রহ করা হয় বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত তরল দুধ এবং আমদানি করা প্যাকেট দুধ।গো-খাদ্যের ৩০টি নমুনা পরীক্ষা করে কীটনাশক (২নমুনায়),ক্রোমিয়াম (১৬টি নমুনায়),টেট্রাসাইক্লিন(২২টি নমুনায়),এনরোফ্লোক্সাসিন (২৬টি নমুনায়),সিপ্রোসিন (৩০টি নমুনায়)এবং আফলাটক্সিন (৪টি নমুনায়)গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি পাওয়ার কথা জানায় এনএফএসএল।

গাভীর দুধের ৯৬টি নমুনার মধ্যে ৯ শতাংশ দুধে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কীটনাশক, ১৩ শতাংশে টেট্রাসাইক্লিন, ১৫ শতাংশে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রায় সিসা পাওয়া যায়। ৯৬ শতাংশ দুধে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াও পাওয়া যায়।

প্যাকেট দুধের ৩১টি নমুনায় ৩০ শতাংশে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি হারে টেট্রাসাইক্লিন পাওয়ার কথাও জানিয়েছে এনএফএসএল। একটি নমুনায় সিসা মিলেছে। একই সঙ্গে ৬৬ থেকে ৮০ শতাংশ দুধের নমুনায় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া পাওয়ার কথা জানিয়েছে তারা।

দইয়ের ৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করে একটিতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি সিসা পাওয়ার কথা জানায় এনএফএসএল। ৫১ শতাংশ নমুনায় মিলেছে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন