প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ।।২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ(হেমন্তকাল)।। ৯ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরী।
বিক্রমপুর খবর :অনলাইন ডেস্ক : চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। প্রথম আলোকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন পাপিয়া সারোয়ারের স্বামী সারওয়ার আলম। তিনি জানান, প্রয়াতের মরদেহ আজ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। কাল জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন পাপিয়া। গত মাসে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সর্বশেষ তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না, চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন গুণী এই শিল্পী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্বামী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।
মেয়ে জারা সারোয়ার কলেজ অব নিউ জার্সিতে জীববিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক এবং ছোট মেয়ে জিশা সারোয়ার কানাডার অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন নির্বাহী।
পাপিয়া সারোয়ারের জন্ম বরিশালে, ১৯৫২ সালে ২১ নভেম্বর। ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্র অনুরাগী পাপিয়া ক্লাস সিক্সে ছায়ানটে ভর্তি হন। পরে তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি হন। ১৯৬৭ সাল থেকে বেতার ও টিভিতে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে গান করেন তিনি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে ভারতে যান। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনিই প্রথম ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে সেখানে স্নাতক করার সুযোগ পান। তার আগে তিনি ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সন্জীদা খাতুন ও জাহেদুর রহিমের কাছে গানের দীক্ষা নেন। তাঁর প্রথম অডিও অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮২ সালে। অ্যালবামটির নামও ছিল শিল্পীর নামেই, ‘পাপিয়া সারোয়ার’।তার সর্বশেষ অ্যালবাম ‘আকাশপানে হাত বাড়ালাম’ প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে।
দীর্ঘ সংগীত জীবনে রবীন্দ্রসংগীতের জন্য কোটি শ্রোতার ভালোবাসা পেয়েছেন পাপিয়া সারোয়ার। তার ব্যতিক্রমী কণ্ঠ, গায়কির প্রশংসা ছিল সংগীতাঙ্গনে।
২০১৩ সালে বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন পাপিয়া সারোয়ার। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি তাকে ফেলোশিপ দেয়। ২০২১ সালে পান দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক। এমন একজন প্রথিতযশা শিল্পীর মৃত্যুতে দেশের সংগীত অঙ্গণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ব্যক্তিজীবনে পাপিয়া সারওয়ার ১৯৭৮ সালে মোহাম্মদ সারওয়ার আলমকে বিয়ে করেন। তাদের দুই কন্যাসন্তান।