প্রকাশিত: রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ইং।। ৫ই পৌষ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)।। ১৪ জামাদিউল আউয়াল ১৪৪৩ হিজরী।।
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : গিবতের শাব্দিক অর্থ হলো কুৎসা, পরনিন্দা বা পরোক্ষ নিন্দা। পরিভাষায় গিবত বলা হয়, কারও অনুপস্থিতিতে এমন কিছু বর্ণনা করা বা সমালোচনা করা যা সে শুনলে মনে কষ্ট পাবে। আল কোরআনে সূরা হুজুরাতের ১২ নম্বর আয়াতে মানুষের দোষ অনুসন্ধান করা মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। প্রত্যেকটা প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। প্রত্যেক টা মানবের আল্লাহর আদালতে বিচার হবে, ভাল-মন্দের হিসাব নিকাশ করা হবে তাতেও সন্দেহ নেই। জান্নাত এবং জাহান্নাম দুই দিকেই মানুষ ভোগ করবে তাতেই সন্দেহ নেই। কারন পবিত্র কোরআনের বাণী তা প্রমাণ করে।
আজকাল পৃথিবীতে মানুষের মধ্যে মানুষের হিংসা প্রতিহিংসা, লোভ লালসা হত্যা গুম খুন অপবাদ, গিবত মিথ্যা রটনা সহ অসংখ্য গুনাহ মূলক কর্মকান্ড প্রতীয়মান হচ্ছে। যা আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে এই সমস্ত মানুষের জন্য কোন কল্যান ও হেদায়েত আসে না। তারা যা করে সয়তানের প্রলোভনে পড়ে অহরহ অপরাধ করে চলে। আল্লাহতায়ালা তার কিতাব সমূহে বার বার বলেছেন, তোমরা আল্লাহর দিকে ফিরে এসো। আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করবেন এবং কল্যানের দিকে এগিয়ে নিবে। |
মানুষ দুনিয়ার মূহে পড়ে আল্লাহ থেকে দূরে রয়েছেন, সয়তানের পক্ষ নিয়েছেন। দুনিয়াতে প্যাচাদ সৃষ্টি করে বেড়াচ্ছেন। আল্লাহর আযাব কত কঠিন তা মানুষ ভুলে গেছেন। কিন্তু তারা নয় যারা মুমিন, যারা মৃত্যুকে ভয় করে এবং মৃত্যুকে স্মরণ করে।
আল্লাহ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ শ্রবণকারী, বিজ্ঞ। সূরাঃ নিসা (৪:১৪৮)
|
মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম। সূরাঃ আল-হুজুরাত (৪৯:১১)
মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও। সূরাঃ আল-হুজুরাত (৪৯:৬)
হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্নীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চাইতে বেশী। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কেই অবগত। সূরাঃ নিসা (৪:১৩৫)
যারা কুফরী অবলম্বন করেছে এবং সত্য চাপা দিয়ে রেখেছে, আল্লাহ কখনও তাদের ক্ষমা করবেন না এবং সরল পথ দেখাবেন না। সূরাঃ নিসা (৪:১৬৮)
যে কেউ ইহকাল কামনা করে, আমি সেসব লোককে যা ইচ্ছা সত্ত্বর দিয়ে দেই। অতঃপর তাদের জন্যে জাহান্নাম নির্ধারণ করি। ওরা তাতে নিন্দিত-বিতাড়িত অবস্থায় প্রবেশ করবে। সূরাঃ বনি ইসরাইল/আল ইসরা (১৭:১৮)
আর যে কেউ সীমালঙ্ঘন কিংবা জুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে, তাকে খুব শীঘ্রই আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। এটা আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজসাধ্য। সূরাঃ নিসা (৪:৩০)
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন কর এবং বিশ্বাস স্থাপন কর তাঁর রসূলও তাঁর কিতাবের উপর, যা তিনি নাযিল করেছেন স্বীয় রসূলের উপর এবং সেসমস্ত কিতাবের উপর, যেগুলো নাযিল করা হয়েছিল ইতিপূর্বে। যে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তাঁর কিতাব সমূহের উপর এবং রসূলগণের উপর ও কিয়ামতদিনের উপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে। সূরাঃ নিসা (৪:১৩৬)
তারাই মুমিন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং আল্লাহর পথে প্রাণ ও ধন-সম্পদ দ্বারা জেহাদ করে। তারাই সত্যনিষ্ঠ। সূরাঃ আল-হুজুরাত (৪৯:১৫)
যে লোক পুরুষ হোক কিংবা নারী, কোন সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রাপ্য তিল পরিমাণ ও নষ্ট হবে না। সূরাঃ নিসা (৪:১২৪)
উল্লেখযোগ্য আয়াত থেকে প্রমান হয় যে, যে কেউ কারো বিরুদ্ধে মন্দ, খারাপ, সমালোচনা করা নিষেধ। আর কারো বিরুদ্ধে কিছু মন্তব্য করতে গেলে, আগে যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হতে হবে। তা নাহলে অন্যকে খারাপ বানাতে গিয়ে, নিজেই গুনাহ না করে ফেলে। কারন আল্লাহ নিজেই বলেছেন পৃথিবীতে যা কিছু হয় সব তার অজানা নয়। তিনি সব কিছু দেখেন এবং শ্রবণ করেন। সাথে ফেরেস্তারাও অবগত রয়েছেন।
প্রত্যেক মুসলমান মুসলমানের কাছে যাতে নিরাপদে থাকে এবং আল্লাহর প্রিয় হয়ে থাকে।
সুতরাং মুসলমানের দায়িত্ব হলো, সমাজে কোনো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে তার প্রচার ও প্রসার থেকে বিরত থাকা। বাস্তবতা অনুসন্ধান করে নিজে সতর্ক হওয়া এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে তা অবগত করা। সর্বোপরি নিজের, পরিবারের, সমাজ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করা।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
(বিজ্ঞাপন) https://www.facebook.com/3square1
‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’