কিংবদন্তিদের নস্টালজিক গল্প

0
0
কিংবদন্তিদের নস্টালজিক গল্প

প্রকাশিত : শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ।। ৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ(হেমন্তকাল)।।১৭ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরী।

বিক্রমপুর খবর :অনলাইন ডেস্ক : বিক্রপুরের কৃতিসন্তান ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় শচীন দেব বর্মণের গান শুনতে ভালবাসতেন, চাকরি পাওয়ার পরে প্রথম মাসের বেতনে কিনে ফেলেছিলেন কর্তার গানের রেকর্ড। তখন যদিও নিজের গ্রামোফোন ছিল না, তবে দিদির ছিল। ওই গ্ৰামোফোনে গান শুনতেন। ঘোর ইস্টবেঙ্গল সমর্থক উভয়েই। ইস্টবেঙ্গলের খেলা থাকলে মাঠে দুজনের দেখা হত, কথাবার্তা হত। কর্তার সহধর্মিণী (মীরা) ভানুর ক্লাসমেট। দুজনেই ঢাকার জগন্নাথ কলেজের পড়ুয়া।

সালটা ১৯৫৯-৬০। ভানু তখন একটা ছবির জন্য বোম্বেতে দিন দশ পনেরো ছিলেন। পরিচিত, ঘনিষ্ঠ, বাঙালিদের বাড়িতে একাধিক নিমন্ত্রণ পেয়েছেন। যথাসম্ভব নিমন্ত্রণ রক্ষার চেষ্টা করেছেন। সবাই অসম্ভব স্নেহ করতেন তাঁকে। সেভাবেই একদিন দাদামণির (অশোককুমার) বাড়িতে আমন্ত্রণ পেয়েছেন। ভানু হাজির। তাঁর স্ত্রী না খাইয়ে ছাড়বেন না। দাদামণি সেই সময় বাড়িতে না থাকলেও কিশোরকুমার এসেছিলেন। দাদামণির স্ত্রী শোভা বললেন “ভালোই হয়েছে, তুইও ভানুর সঙ্গে খেয়ে যা, আর ওকে যাবার পথে হোটেলে পৌঁছে দিস। আচ্ছা দাঁড়া দেখি, রান্নার কতদূর হল”। এই বলে তিনি রান্নাঘরের দিকে এগোলেন।
কিশোরকুমার সুযোগ বুঝে ভানুকে কানে কানে পরামর্শ দিলেন “এই সুযোগে তাড়াতাড়ি পালিয়ে চলুন, বউদি সাতদিনের বাসি মাছ খাওয়াবে কিন্তু।”
যদিও সেইসময়ে খুব কম লোকের বাড়িতেই ফ্রিজ ছিল। যদিওবা থাকত, এখনকার মতো ফ্রিজে রেখে সাতদিন ধরে খাওয়ার রেওয়াজ ছিল না। তবে দাদামনির বাড়িতে অবশ্য সাতদিনের বাসি মাছ খেতে হয়। ভানু বললেন “না কিশোরদা, বৌদি খারাপ ভাববে”। দুজনেই খেলেন। ভানুর প্রতিক্রিয়া ছিল– তেমন বিস্বাদ লাগেনি।
অন্য আর এক দিন, শচীন কর্তার বাড়িতে খাওয়ার নিমন্ত্রণ ভানুর। অনেকক্ষণ গল্পগুজব, আড্ডার পরে খাওয়া দাওয়া হল। শচীন দেববর্মণ ভানুর কাছে জানতে চাইলেন “কী রকম খাইলা?”
সহসা জবাব– উপাদেয়।
কর্তা জানতে চাইলেন মুরগির মাংসটা কেমন হয়েছিল। ভানু জানালেন– খুব ভাল খেয়েছেন। সব শুনে মুখ খুললেন শচীন কর্তা– “কে রাঁধসে জানস?”
ভানু একটু আত্মবিশ্বাসী হয়ে বললেন, নিশ্চয়ই মীরা! কারণ শচীন-জায়া কে চিনতেন ভানু, সে ভাল রান্না করে। দুজনেই আগে থেকে দুজনকে চেনেন। কলেজে এক ক্লাসে পড়তেন। কিন্তু শচীন কর্তা জানালেন “না, সকালে রফি আইসা রাইন্ধা দিয়া গেসে”।
ভানু বিস্মিত, হতবাক। ভারতের বিখ্যাত গায়ক মহম্মদ রফি, তিনি মাংস রান্না করেছেন। শচীন কর্তা নিজের মুখে বললেন “রফিরে কইলাম, কলকাতার থিইক্যা আমার অনেক দিনের পুরনো বন্ধু খাইতে আইবো। রফি শুইন্যা নিজেই রাইন্ধা দিয়া গ্যালো”।
কিশোরকুমার সব জানতেন। একদিন ভানুকে বলেই ফেললেন “আপনি অসাধ্য সাধন করেছেন। দাদামনি, শচীনদা এরা কাউকে কোন দিন খাইয়েছে বলে তো শোনা যায় না”!
______________________________
সৌজন্যে: ভানু সমগ্ৰ (পুস্তক)।
সম্পাদনা: গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়।
তথ্য সূত্রঃ এবং
পুনঃ সম্পাদনা: কিছু কথা ॥ কিছু সুর।

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..           

‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com

আমাদের পেইজ লাইক দিন শেয়ার করুন

জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor

email – bikrampurkhobor@gmail.com

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন