করোনা উপসর্গে মারা যাওয়া কারাতে কোচ বিক্রমপুরের হুমায়ুন কবির জুয়েলের দাফন সম্পন্ন

0
33
করোনা উপসর্গে মারা যাওয়া কারাতে কোচ বিক্রমপুরের হুমায়ুন কবির জুয়েলের দাফন সম্পন্ন

প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২৬মে ২০২০ ইং ।। ১২ই জ্যৈস্ঠ  ১৪২৭ বঙ্গাব্দ।।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : কারাতের রিংয়ে অনেক ম্যাচ জেতা হুমায়ুন কবির জুয়েল ‘জীবনের ম্যাচ’ হেরে গেলেন করোনাভাইরাসের কাছে। করোনা উপসর্গে মারা যাওয়া কারাতে কোচ বিক্রমপুরের হুমায়ুন কবির জুয়েলের রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।  

সাউথ এশিয়ান কারাতে রেফারি কমিশনের কো-চেয়ারম্যান মো.হুমায়ুন কবির জুয়েল এর গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুরে লৌহজং উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের মৌছামান্দ্রা গ্রামে।তাহার পিতার নাম মরহুম আবুল কাসেম শেখ।হুমায়ুন কবির জুয়েলরা ৩ ভাই ২ বোন। হুমায়ুন কবির জুয়েল ছিলেন সকলের বড় অপর দুই ভাই সোহেল ও রুবেল। সোহেল শেখ মৌছামান্দ্রা পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদের সভাপতি। তাহাদের গ্রামের বাড়িতে খুব আশা যাওয়া আছে।      

ঈদের দিন প্রচন্ড শ্বাসকস্ট নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হবার একদিন পর করোনাভাইরাস উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য,সাবেক ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন,জাতীয় কারাতে দলের সাবেক এবং বর্তমানে বাংলাদেশ আনসার কারাতে দলের কোচ মো. হুমায়ুন কবির জুয়েল। তিনি আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে আটটায় গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।মৃত্যৃকালে তার বয়স হয়েছিল ৫২ বছর। তিনি স্ত্রী,এক ছেলে ও এক মেয়ে সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান আমেরিকায় বসবাস করেন।

জুয়েল ছিলেন এশিয়ান কারাতে ফেডারেশনের জাজ/রেফারি এবং বিশ্ব কারাতে ফেডারেশনের লাইসেন্সধারী কোচ। তিনি বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ কারাতে রেফারি এসোসিয়েশনের কো-চেয়ারম্যানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করছিলেন তিনি। দক্ষিণ এশিয়ান কারাতে রেফারি এসোসিয়েশনের ডেপুটি চেয়ারম্যানও ছিলেন কারাতের কৃতিমান এই প্রশিক্ষক ও জাজ।

ঢাকা কলেজের’৮৬ ব্যাচের কৃতি ছাত্র হুমায়ুন কবির জুয়েল ছাত্রজীবন থেকেই কারাতের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। ছাত্রজীবন শেষেও কারাতেই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান।

করোনাভাইরাস মহামারীর দুর্যোগে পড়া অসহায় মানুষের পাশে উদারহাত নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন হুমায়ুন কবির জুয়েল। বিভিন্ন এলাকায় বিপন্ন মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণের কাজে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। আশঙ্কা করা হচ্ছে সেই সময় তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২১ মে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় জুয়েল নেগেটিভ প্রমাণিত হন। অথচ মাত্র ৫ দিনের মধ্যে সেই তিনিই মারা গেলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। রাজধানীর উত্তর খানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কৃতিমান এই কারাতে প্রশিক্ষক,কোচ ও জাজের মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠন শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে। বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা এক শোকবার্তায় বলেন-‘হুমায়ুন কবির জুয়েলের মৃত্যুতে বাংলাদেশের কারাতে অঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তার স্থান কেউ পূরণ করতে পারবে না।’

ঢাকা কলেজের ছাত্রজীবন থেকে জুয়েলের বন্ধু বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন-‘বন্ধু জুয়েল,পরপারে ভালো থাকিস।’

তার এই অকাল মৃত্যুতে তুরস্কের কারাতে সংগঠক আরসুমেন্ট তাসদেমির তার শোকবাণীতে লেখেন- ‘আমি বাংলাদেশে আমার একজন উদারমনা বন্ধু এবং কারাতের প্রতিভাবান রেফারিকে হারালাম।’ঢাকা কলেজ ’৮৬ ব্যাচে জুয়েলের বন্ধুরাও তার এই অকাল মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান।

এছাড়া বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সভাপতি ড.মোজাম্মেল হক খান ও সাধারণ সম্পাদক জনাব ক্য শৈ হ্লা (চেয়ারম্যান,বান্দরবান জেলা পরিষদ) গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন