ইমাম গাজ্জালির মহা মূল্যবান আটটি উপদেশ

0
20
ইমাম গাজ্জালির মহা মূল্যবান আটটি উপদেশ

প্রকাশিত : শুক্রবার, ২৮ আগস্ট ২০২০ইং ।। ১৩ই ভাদ্র ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)।। ৮ই মুহররম, ১৪৪২ হিজরী।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : আবু হামিদ মোহাম্মদ ইবনে মোহাম্মদ আল-গাজ্জালি (১০৫৮ – ১১১১) বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক অঞ্চলেই ইমাম গাজ্জালী (রহ.) হিসেবে বেশি পরিচিত। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শিক্ষাবিদ ইমাম আল-গাজ্জালি ১০৫৮ সালে ইরানের খোরাসানের তুশ নগরীতে জন্মগ্রহণ এবং মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সে সময়ে ইরানের শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। তিনি সমসাময়িক জ্ঞানী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। ইসলাম ধর্ম প্রসারেও কাজ করেছেন তিনি। জ্ঞান অন্বেষণের জন্য তিনি দেশভ্রমণেও বেরিয়েছিলেন।

ইমাম গাজ্জালির সমগ্র ‘শিষ্যের প্রতি চিঠি’ -তে মহামূল্যবান অনেক জীবনোপদেশ রয়েছে।  এটি মূলত তার একজন শিষ্যের চিঠির জবাব। যাতে তিনি আটটি অমূল্য উপদেশ দান করেছেন।

তিনি এই চিঠিতে আপন শিষ্যকে আল্লাহর নিকটবর্তী হতে চারটি কাজ করা হতে নিষেধ করেছেন এবং চারটি কাজ করতে উপদেশ দিয়েছেন। নিম্নে তা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

১. বিতর্ক পরিহার

শিষ্যের প্রতি ইমাম গাজ্জালির প্রথম উপদেশটি হলো,  যথাসাধ্য সম্ভব বিতর্ক পরিহার করে চলা। বিশেষ করে, অজ্ঞ ও মূর্খ লোকের সাথে অযথা বিতর্কে জড়িয়ে পড়া থেকে বিজ্ঞ ব্যক্তির সাথে আলোচনা এবং তার জ্ঞান থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য ইমাম তার শিষ্যকে উপদেশ দিয়েছেন।

২. খ্যাতি লাভের ইচ্ছা পরিহার

শিষ্যের প্রতি ইমাম গাজ্জালির দ্বিতীয় উপদেশ হলো, খ্যাতি লাভের ইচ্ছাকে পরিহার করা। কেননা, এটি মানুষকে মানুষের মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুৎ করে এবং এর ফলে কাজের জন্য কাজ করার আন্তরিকতা তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে না।

৩. শাসকদের পরিহার

ইমাম গাজ্জালির তার শিষ্যের প্রতি তৃতীয় উপদেশ হচ্ছে, শাসকদের পরিহার করে চলা। কেননা তাদের সাথে যে কারো সংযোগ, মেলামেশা ও সামাজিকতা ওই ব্যক্তির জন্য জটিলতর ও বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

৪. শাসকদের নিকট থেকে উপহার পরিহার

পারস্পরিক উপহারের আদান-প্রদান অনুমোদিত হলেও শাসক এবং সমাজের উচ্চস্তরের ব্যক্তিদের নিকট থেকে উপহার ও অর্থকে পরিহার করার জন্য ইমাম গাজ্জালি তার শিষ্যকে উপদেশ দিয়েছেন। কেননা এর মাধ্যমে ব্যক্তি উপহার দানকারীর প্রভাবাধীনে চলে যেতে পারে।

৫. প্রত্যাশা অনুযায়ী আল্লাহর হক আদায়

আল্লাহর সাথে এমনভাবে সম্পর্ক তৈরি করার উপদেশ ইমাম গাজ্জালি তার শিষ্যকে দিয়েছেন, যাতে নিজের অনুগত কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে প্রত্যাশিত সম্পর্ক অনুযায়ী এই সম্পর্ক গঠিত হয়।

৬ প্রত্যাশা অনুযায়ী অপরের সাথে আচরণ

নিজের জন্য প্রত্যাশিত আচরণ অনুযায়ী অন্যের সাথে আচরণ করার জন্য ইমাম গাজ্জালি তার শিষ্যকে উপদেশ দিয়েছেন।

রাসূল (সা.) এর হাদীস অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি ঈমান সম্পূর্ণ হতে পারে না যদি না ওই ব্যক্তি নিজের জন্য যা চায়, অপরের জন্য তা না চায়।

৭. তা থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করা, যা ব্যক্তির জন্য উপকারী

যে বস্তু বা বিষয় তার শিষ্যের জন্য উপকারী এবং কার্যকর, শুধু তা থেকেই জ্ঞান অর্জনের জন্য ইমাম গাজ্জালি তার শিষ্যকে উপদেশ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ব্যক্তির জন্য জ্ঞান অনুধাবন ও আয়ত্ত্বাধীন করা সম্ভবপর হতে পারে।

৮. পৃথিবী থেকে শুধু প্রয়োজনীয় সম্পদ গ্রহণ

ইমাম গাজ্জালি তার শিষ্যকে দুনিয়া থেকে শুধু তার জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদটুকুই নেওয়ার জন্য উপদেশ দিয়েছেন। অধিক সম্পদ মানুষকে অধিক জটিলতার মধ্যে নিক্ষেপ করে। এর ফলে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার জন্য পথও জটিলতর হয়ে পড়ে।

সূত্র: ওয়ানপাথ নেটওয়ার্ক

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..    

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন