আজ পবিত্র হজ

0
2
আজ পবিত্র হজ

প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩।।  ১৩ আষাঢ় ১৪৩০ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল)।। ৮ জিলহজ, ১৪৪৪ হিজরি।।  বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : আজ পবিত্র হজ। বৈশ্বিক মহামারি কভিডের পর এবার স্বাভাবিক পরিবেশে পবিত্র হজ পালিত হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন সারা বিশ্ব থেকে আসা ২০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান। আরাফাতের ময়দানে আজ লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হবে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক্, লা শারিকা লাক।’

(আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার)। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা।

করোনাকাল শেষে বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। তিন বছর আগে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস শুরুর পর এ বছরই প্রথমবারের মতো পূর্ণ সক্ষমতায় ফিরেছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। সৌদি আরবের পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার বিশ্বের প্রায় ২৩ লাখ লোক হজ পালন করছেন।

সৌদি আরবের পাসপোর্ট অধিদপ্তর জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা থেকে বিদেশি হজযাত্রী আসা বন্ধ রয়েছে। এ পর্যন্ত আকাশ, স্থল ও জলপথ ব্যবহার করে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ১৮৮ জন বিদেশি হজ পালনের জন্য সৌদি আরব পৌঁছেছেন। হজ পালনের জন্য সৌদি আরবের নাগরিক ও প্রবাসীসহ অন্তত ১২ লাখ মানুষ আবেদন করেছেন। এর মধ্যে বিদেশি হজযাত্রীর ৪০ শতাংশ অর্থাৎ সাড়ে ছয় লাখের মতো আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। সে হিসাবে এবার ২৩ লাখের মতো লোক হজ পালন করছেন।

৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে সঙ্গী করে আজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন হজ পালনকারীরা। তবে সৌদি আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন, আজ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত নির্দিষ্ট তাঁবুতে হজযাত্রীরা মহান আল্লাহর জিকিরসহ, কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া ও নফল নামাজে মশগুল থাকবেন। পবিত্র হজ ইসলামের মূল পাঁচটি স্তম্ভের একটি। আর্থিক ও শারীরিকভাবে সমর্থ পুরুষ ও নারীর জন্য হজ ফরজ। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল কাজ। তাই হজ ভিসা নিয়ে যারা সৌদি আরবে গিয়ে অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদেরও অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাফার ময়দানে অল্প সময়ের জন্য আনা হবে।

আজ ফজরের নামাজের পর মিনা থেকে আরাফার ময়দানে যাওয়ার কথা থাকলেও রাস্তার ভিড় এড়াতে অনেক হজ এজেন্সি গতকাল এশার নামাজের পর থেকেই হজযাত্রীদের আরাফাতের ময়দানে পৌঁছে দেওয়া শুরু করে। যারা রাতে পৌঁছাননি, তারা জোহরের নামাজের আগে আরাফাতের ময়দানে পৌঁছাবেন।

মক্কা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত দুই মাইল দৈর্ঘ্য ও দুই মাইল প্রস্থের বিরাট সমতল ময়দানের নাম আরাফাত। এর তিন দিক পাহাড়বেষ্টিত। জাবাল মানে পাহাড়। জাবালে রহমত হলো রহমতের পাহাড়। এই পাহাড়ে হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.)-এর দেখা হয়েছিল। আর হজরত মুহাম্মদ (সা.) জাবালে রহমত পাহাড়ের কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। এই পাহাড়ে একটি উঁচু পিলার আছে। একে কেউ কেউ দোয়ার পাহাড়ও বলেন।

দুই মাইল দৈর্ঘ্য ও দুই মাইল প্রস্থের বিরাট সমতল ময়দানের নাম আরাফাত। এর তিন দিকে রয়েছে জাবাল বা পাহাড়। জাবালে রহমত হলো রহমতের পাহাড়। বলা হয়ে থাকে, পৃথিবীতে এসে প্রথম মানব হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.)-এর পুনর্মিলনও হয়েছিল এ ময়দানে।

হজরত মুহাম্মদ (সা.) জাবালে রহমত পাহাড়ের কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। এই পাহাড়ে একটি উঁচু পিলার আছে। একে কেউ দোয়ার পাহাড়ও বলেন। কোনো কোনো হজযাত্রী জাবালে রহমতে উঠে ইবাদত-বন্দেগি করেন।

আজ আরাফাতের ময়দানে খুতবার পর জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন মুসল্লিরা। আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেয়া হবে।

এ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন সৌদি আরবের সিনিয়র উলামা কাউন্সিলের সদস্য ইসলাম ও দাওয়াহ-বিষয়ক উপমন্ত্রী শায়খ ড. ইউসুফ বিন মোহাম্মদ বিন সাঈদ। হজের আরবি খুতবা বাংলাসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় শোনা যাবে। বাংলায় হজের খুতবা শোনা যাবে এই ওয়েবসাইটে।

হাজিরা আজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতে অবস্থানের পর মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন। রাতে সেখানে অবস্থান করবেন খোলা মাঠে। শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর (৭০টি) সংগ্রহ করবেন সেখান থেকে।

মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায় করে হাজিরা কেউ ট্রেনে, কেউ গাড়িতে, কেউ হেঁটে মিনায় যাবেন এবং নিজ নিজ তাঁবুতে ফিরবেন। মিনায় বড় শয়তানকে সাতটি পাথর নিক্ষেপ করবেন। জামারায় শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের পর হাজিদের দমে শোকর বা কোরবানির প্রস্তুতি নিতে হয়।

অধিকাংশ হাজি নিজে বা বিশ্বস্ত লোক দিয়ে মুস্তাহালাকায় (পশুর হাট ও জবাই করার স্থান) গিয়ে কোরবানি দেন। কেউ কেউ ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকে (আইডিবি) ধার্যকৃত রিয়াল জমা দিয়ে কোরবানি দেন। তারা পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে বা ন্যাড়া করে গোসল করবেন। সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় বদল করবেন। এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন।

কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় ‘সাঈ’ (সাতবার দৌড়াবেন) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। আবার মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করার পর দেশে ফিরবেন। যারা হজের আগে মদিনা যাননি, তারা মদিনায় যাবেন।

হাজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। হাজিদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে মিনায় কিছু দূর পরপর রয়েছে হাসপাতাল।

সৌদি হজ মন্ত্রণালয় ও মোয়াচ্ছাসা কার্যালয় সূত্র জানায়, মক্কা, মিনা ও আরাফাতের ময়দানে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে সব হাজিকে বিনা মূল্যে খাবার, বিশুদ্ধ পানিসহ সব সুবিধা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান হাজিদের নানা উপহার দিচ্ছে। সূত্র: ইন্টারনেট।

(বিজ্ঞাপন) https://www.facebook.com/3square1

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..

‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।

আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

নিউজ ট্যাগ:

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন