অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

0
2
অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত : শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ।।২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ(হেমন্তকাল)।।১০ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরী।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন খান বাহাদুর আব্দুল হালিম চৌধুরী এবং মাতা উম্মে কবীর আফিয়া চৌধুরী। কবীর চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস ছিলো নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানার গোপাইরবাগ গ্রামে। তার স্ত্রী মেহের কবীর একজন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী।

কবীর চৌধুরীর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয় স্বগৃহে পিতার তত্ত্বাবধানে। তিনি ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে প্রবেশিকা এবং ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। তিনি উভয় পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ ও বৃত্তি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (সম্মান) ও এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। কবীর চৌধুরী ১৯৫৭-৫৮ খ্রিষ্টাব্দে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমেরিকান সাহিত্য বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। সরকারি বৃত্তি নিয়ে তিনি ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিষয়ে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি লাভের পর কবীর চৌধুরী পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে অধ্যাপনায় নিয়োজিত হন। পরবর্তী সময়ে তিনি ব্রহ্মদেশ থেকে আগত বাস্ত্তহারাদের তত্ত্বাবধানের কাজে ক্যাম্প অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৫ থেকে ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে পর্যন্ত তিনি পূর্ব বাংলার বিভিন্ন জেলায় সিভিল সাপ্লাই বিভাগে মহকুমা কন্ট্রোলার এবং পরে জেলা কন্ট্রোলার পদে কর্মরত ছিলেন।
১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শিক্ষকতা পেশায় ফিরে আসেন রাজশাহী সরকারি কলেজে ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে। পরে তিনি কিছুকাল ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করেন। এরপর বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ ও ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজে অধ্যক্ষ পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর কবীর চৌধুরী ন্যাশনাল এডুকেশন কাউন্সিলের প্রথম সদস্য-সচিব পদে যোগ দেন। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে তাকে শিক্ষা ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
স্বল্পকাল শিক্ষাসচিব পদে কর্মরত থাকার পর কবীর চৌধুরী ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে স্বেচ্ছায় চাকুরিতে ইস্তফা দেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক পদে যোগদান করেন। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে অবসর গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকালে তিনি নাট্যকলা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবেও পাঠদান করতেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি ইংরেজি বিভাগে সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক এবং খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কবীর চৌধুরীকে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদায় ভূষিত করা হয়।
১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় অধ্যাপক অভিধায় ভূষিত হওয়ার আগেই অবশ্য তিনি তিন দশকব্যাপী গণযোগাযোগ ও জনকল্যাণধর্মী কর্মের সুবাদে জাতীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। সব ধরনের গণস্বার্থবিরোধী ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তার অবস্থান, ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে তার নির্ভিক সংগ্রাম, সর্বোপরি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের হোতা যুদ্ধাপরাধী ঘাতক দালালদের বিরুদ্ধে তার জোরালো আপসহীন বক্তব্য তাকে সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে এবং তিনি বাংলাদেশের সকল সেক্যুলার, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল আন্দোলনের শীর্ষ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন।
কবীর চৌধুরী ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে তার জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..           

‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com

আমাদের পেইজ লাইক দিন শেয়ার করুন

জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor

email – bikrampurkhobor@gmail.com

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন