প্রকাশিত: শনিবার, ১৩ আগস্ট ২০২২, ২৯ শ্রাবণ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।। ১৪ মহরম, ১৪৪৪ হিজরি ।।
বিক্রমপুর খবর : টঙ্গীবাড়ী প্রতিনিধি-ব.ম শামীম: প্রকৃতিতে বর্ষাকাল চললেও মুন্সীগঞ্জে এবার খাল-বিল-পুকুরে নেই পানি। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না। ফলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে পাট। লোকসানের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
জানা গেছে, পানির অভাবে পাট কাটতে পারছেন না চাষিরা। জেলার সদর, টঙ্গীবাড়ী, লৌহজং উপজেলা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। পানির আশায় থাকতে থাকতে পাটের আগা মোটা হয়ে যাচ্ছে। কয়েক দিন পরই এসব পাটে বীজ ধরবে। এতে পাটের মান খারাপ হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন কতিপয় চাষি। ফলে বাধ্য হয়ে পাট কেটে স্তূপ করছেন।
সরেজমিনে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বলই গ্রামে দেখা যায়, ওই গ্রামের দেলোয়ার খান তার জমির পাট কেটে জমিতে জাগ দিয়েছিলেন। কিন্তু পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে জাগসহ পাট শুকিয়ে যায়। এখনো সে পাট জমিতে রয়েছে। দেলোয়ার খান বলেন, সিলেটে বন্যা হলো। সেই বন্যার পানিতে আমাদের জমি পাটসহ তলিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হলো। দ্রুত পাট কেটে জমিতে পঁচানোর জন্য জাগ দিলাম। সেই পানি দ্রুত শুকিয়ে গেল। এখন জাগ দেওয়া পাট জমি থেকে কোনোভাবেই নিতে পারছি না।
কৃষক লতিফ পাট কেটে জমিতে স্তূপ করছেন। তার জমিতে ছিপছিপে পানি। তাই পাটের গোড়া কালো হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে পাট কেটে ভেজা জমিতে রেখেছেন। লতিফ বলেন, ছিপছিপে পানি থাকায় পাটের গোড়া কালো হয়ে যাচ্ছে। গোড়ায় পচন ধরছে। বাতাস এলেই হেলে পড়ছে পাট। বাধ্য হয়ে কেটে ফেলছি। ধারে-কাছে পানি নেই। অনেক দূরে অল্প পানি আছে। মাথায় করে নিয়ে ভেজাতে হবে। কিন্তু এতে যে শ্রমিক খরচ পড়বে, তাতে পাট ভালো হলেও লাভ হবে না।
সদর উপজেলার পাটচাষি জাহাঙ্গীর কাজী বলেন, ১৪ শতাংশ জমিতে পাটচাষ করছি। আমার জমিতে অন্যান্য বছর এ সময় গলা পর্যন্ত পানি থাকে। এ বছর সিলেটে বন্যা হওয়ায় এক মাস আগে জমিতে পানি আসল। তারপর আবার পানি চলে গেছে। পাট মোটামুটি ভালো হইছে। কিন্তু এখন পাটে বীজ আসার সময় হওয়ায় পাটের আগা ফুইল্লা যাইতেছে। পাটের মান এখন আস্তে আস্তে খারাপ হইব। পানি না থাকায় কাটতে পারছি না।
দক্ষিণ কেওয়ার গ্রামের পাট চাষী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, এবছর ৪২ শতাংশ জমিতে পাট লাগাইছিলাম। হঠাৎ করে পানি এসে আবার চলে গেল। পাট ভালোই হয়েছে। জমিতে কেটে পাট পচাঁইতে পারলে লাভ হতো। এখন জামিতে পাচঁইতে না পারলে লেবার দিয়ে অন্যত্র নিতে হবে। তাতে লেবার যে খরচ হবে তাতে লোকসানের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বছর মুন্সীগঞ্জে ২ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে পাটচাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ জমির পাটা কাটা হয়েছে। পানি না থাকায় কৃষকের সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু এটা তো প্রাকৃতিক বিষয়। এতে আমাদের কিছু করার নেই। পাট পঁচানোর বিকল্প কোনো পদ্ধতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, জীবন জেটিং নামে একটি বিকল্প পদ্ধতি রয়েছে। এটা হলো কাঁচা পাট কেটে কাঁচা অবস্থায় মেশিনের মাধ্যমে আঁশ ছাড়িয়ে শুধু আঁশগুলো অল্প পানিতেও ভেজানো যায়। তবে এ পদ্ধতি ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য হওয়ায় আমাদের দেশের কৃষকরা সাধারণত এটা করে না।
(বিজ্ঞাপন) https://www.facebook.com/3square1
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’