প্রকাশিত : সোমবার, ৪ মে ২০২০ ইং ।। ২১ বৈশাখ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ।। ১০ রমজান ১৪৪১
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক :করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। এ অবস্থায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ক্লাস চলছে অনলাইনে। একইভাবে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সব কলেজকে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে আহবান জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ি লকডাউন চলাকালীন শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে অধিভুক্ত প্রায় ২ হাজার ২৬০ টি কলেজ/ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে বেশ কিছু নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। গতকাল রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ এই নির্দেশনা প্রদান করেন।
গত ৩০ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনলাইনে এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাববুব হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও সংশ্লিষ্টরা অংশগ্রহণ করেন। সেই সভাতেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোতে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। এই নির্দেশনা পেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন ২ হাজার ২৬০টি কলেজকে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর নির্দেশনা দেয়া হলো।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- যে সব কলেজের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে তারা জরুরি ভিত্তিতে অনলাইন ক্লাস চালু করবে। যেসব কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনলাইন ক্লাস সুবিধা নেই, তাদেরকেও দ্রুত এই সুবিধার আওতায় আসতে হবে। এক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরী করা মোবাইল অ্যাপস কিংবা জুম সফটওয়্যার ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কলেজসমূহে যাতে সেশনজট না হয় এজন্য শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ঘরে বসে পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠার পর যেন একের পর এক পরীক্ষা নেয়ার সকল প্রস্তুতি কলেজ ও শিক্ষার্থীদের থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, মনে রাখা উচিত কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সিংহভাগ কারিকুলাম শিক্ষার্থীকে তার নিজ উদ্যোগে সম্পন্ন করতে হয়। এই মহামারী চলাকালীন শিক্ষার্থীদের ধৈর্য্য ও দ্বায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে এবং নিজ নিজ বাড়িতে বসে তার কারিকুলাম অনুযায়ী পাঠগ্রহণ করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অনলাইন কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। ছুটি দীর্ঘায়িত হলে নতুন করে সেশনজটে না পড়তে পরীক্ষা ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের প্রস্তুতিনেয়ার জন্যে শিক্ষকদের কাজ করে যেতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে হবে।
এদিকে সিলেট ব্যুরো জানায়, করোনা সঙ্কটের কারণে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ। লাগাতার বন্ধের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের ভার্চুয়ালের মাধ্যমে পাঠদান চালু করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পাঠদান চালুও করা হয়েছে। তবে সীমাবদ্ধতার কারণে তবে সব বিষয়ে ক্লাস নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তবে সবকিছু ছাড়িয়ে সিলেটের স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক মানের ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ‘রাইজ স্কুলের’ শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই ক্লাসরুমের পরিবেশেই পড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে তাদের কোন কারিগরি সমস্যায়ও পড়তে হচ্ছে না। এ প্রতিষ্ঠানটি গত ২২ মার্চ থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে পাঠদান অব্যাহত রেখেছে। এ জন্য প্রতিষ্ঠানের আইটি টিমের সহায়তায় শিক্ষকদের অনলাইন ক্লাস সম্পর্কে ট্রেনিং প্রদানও করা হয়েছে। এছাড়া ২৯ মার্চ থেকে মাইক্রোসফট টিমের সহায়তায় ক্লাস-রুটিন মেনে পাঠদান করে যাচ্ছেন রাইজ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সমন্বয়ের কারণে শিক্ষার্থীরাও ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন।