প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩।। ৩০ আষাঢ় ১৪৩০ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল)।। ২৫ জিলহজ, ১৪৪৪ হিজরি।।
বিক্রমপুর খবর : অফিস ডেস্ক : স্বাধীন বাংলা বেতারের কণ্ঠশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিক্রমপুরের কৃতি সন্তান বিশিষ্ট সংগঠক, কবি, লেখক, প্রখ্যাত নজরুল সংগীত শিল্পী ও অগ্রসর অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন এর কেন্দ্রীয় কমিটির সংস্কৃতি সম্পাদক বুলবুল মহলানবীশের পরলোকগমন করেছেন আজ ১৪ জুলাই ভোররাতে।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। স্বামী, ২ ছেলে, ১ মেয়ে, ২ বোন ১ ভাই, নাতি নাতনি, আত্মীয় স্বজন সহ বহু শুভাকাঙ্ক্ষী ও ভক্তবৃন্দ রেখে গেলেন বুলবুল মহলানবীশ।
আগামী রবিবার আমেরিকা প্রবাসী ছেলে দেশে ফিরলে তাহার অন্তুষ্টিক্রিয়া সম্পন হবে। সম্ভবত আগামী সোমবার সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে তাঁহার মরদেহ।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন ছাড়াও রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার দেয়া হবে বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশকে এরপর মরদেহ নেয়া হবে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। জানালেন বুলবুল’দির স্বামী প্রকৌশলী মুক্তিযুদ্ধের সাব সেক্টর কমান্ডার সরিত কুমার লালা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশের হঠাৎ মৃত্যুতে আমরা বিক্রমপুর খবরের পক্ষ থেকে গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। তাহার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
বুলবুল মহলানবীশের পিতা অরুণচন্দ্র মহলানবীশের জন্ম আমাদের বিক্রমপুরের পঞ্চসার গ্রামে।
তাঁহার পিতার কর্মস্থল কুমিল্লাতে বুলবুল মহলানবীশের জন্ম হয় ১৯৫২ সালের মার্চ মাসে। মহলানবীশের জন্ম বিক্রমপুরের পঞ্চসার গ্রামে। তাঁর ৬ মাস বয়সে তাদের পরিবার ঢাকায় বসবাস শুরু করেন।
বিক্রমপুরের সামাজিক সংগঠক অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের ছাড়াও তিনি জাতীয় ভাবে অনেক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন_ নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদের সহসভাপতি, সাধরণ সম্পাদক রবীন্দ্র একাডেমি। জাতীয় কবিতা পরিষদ, কচিকাঁচার মেল, উদীচী, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শিল্পী পরিষদসহ বহু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তবে সব ছাপিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী-কণ্ঠযোদ্ধা পরিচয়টি তিনি বহন করতেন বিনম্র গৌরবে।
বিজ্ঞানী ও পরিসংখ্যানবিদ এবং ভারতীয় পরিকল্পনা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ তাঁর খুড়াতো ঠাকুরদা ছিলেন। তাঁর ঠাকুরদা প্রকাশচন্দ্র মহলানবীশের কাকাত ভাই ছিলেন এই প্রশান্ত মহলানবীশ৷
তার দুটি গানের অ্যালবাম রয়েছে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকালে সেই সময়কার রেসকোর্স ময়দানে যখন পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করছিল ঠিক সেই মাহন্দ্রেক্ষণে কলকাতার বালিগঞ্জের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয় ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’- গানটি। বাঙালির বিজয়ের ঐতিহাসিক ক্ষণে কালজয়ী গানটিতে কণ্ঠ দেওয়া শিল্পীদের অন্যতম- বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ।
প্রকাশিত হয়েছে ১২টির বেশি গ্রন্থ। মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব প্রস্তুতি ও স্মৃতি ৭১ তার বহুল আলোচিত বই। সাহিত্য-সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য পেয়েছেন- চয়ন স্বর্ণপদক, দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ ফাউন্ডেশন সম্মাননা, পশ্চিমবঙ্গের নজরুল একাডেমি সম্মাননা পদক।
বুলবুল মহলানবীশের মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের অনেকেই তার চলে যাওয়ায় শোক প্রকাশ করেছেন।
তার চলে যাওয়া প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী তিমির নন্দী বলেন, ‘সকালে ঘুম ভাঙল বুলবুল মহলানবীশ আপার মৃত্যু দুঃসংবাদ শুনে। এমন খবর শুনে আমি মানসিকভাবে ভীষণ আঘাত পেয়েছি। তাকে হারিয়ে আমরা আরও একজন সহযোদ্ধাকে হারালাম। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
বুলবুল মহলানবীশের মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
(বিজ্ঞাপন) https://www.facebook.com/3square1
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’