সফটওয়্যার পরীক্ষণে ২০০ জনকে বৃত্তি দেবে পিপল এন টেক

0
26

 
২৪ ডিসেম্বর , ২০১৮

 দক্ষ পেশাজীবী তৈরিতে সফটওয়্যার পরীক্ষণে ২০০ জনকে বৃত্তি দেবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাংলাদেশি তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান পিপল এন টেক। ১০০ জন অভিবাসন প্রত্যাশী ও ১০০ জন স্থানীয় প্রকৌশলীকে এই বৃত্তি দেওয়া হবে। বৃত্তির আওতায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চার মাস মেয়াদী ‘সফটওয়্যার টেস্টিং’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বৃত্তি পেতে অনলাইনে আবেদন করা যাবে আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।

গত ১১ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বেসিস মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, পিপল এন টেক-এর প্রধান নির্বাহী আবুবকর হানিপ। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে জানানো হয়, আবেদনের পর সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এসব পেশাজীবী বাছাই করা হবে। প্রযুক্তি খাতের এই বৃত্তিতে আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে স্থানীয় পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক অথবা সংশ্লিষ্ট খাতে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এবং যারা যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হিসেবে কাজ করতে চান তাদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতায় শীথিলতা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই আমেরিকায় গিয়ে চাকরি না পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন পিপল এন টেক-এর নির্বাহী আবু বকর হানিপ।

তিনি জানান, আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের আইটিতে প্রশিক্ষিত করতে গড়ে তোলেন এই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৪ সালে আমেরিকায় যাত্রা শুরু পর এখন পর্যন্ত ৫ হাজার অভিবাসী বাংলাদেশিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আর বাংলাদেশে ২০১৪ সালে যাত্রার পর ২ হাজার অভিবাসী প্রত্যাশীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিমাসে আমেরিকায় তারা ৩০ থেকে ৪০ জনকে আইটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

দেশের আইটি সেক্টরেও একই লক্ষ্য রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। দক্ষ জনবল গড়ে তুলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। সে লক্ষ্যে বেসিসের অন্তভূর্ক্ত দেশীয় আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তিও হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আবুবকর হানিপ বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যারা যায়, তারা প্রথমত আত্মীয় স্বজনের বাসায় গিয়ে উঠেন। সেখানে ২ থেকে ৩ মাস থাকে। পরে তারা কাজ খোঁজে। আর কাজ করে অড জব হিসেবে। একজন দুই থেকে তিনটি অড জবও করে থাকেন। আমেরিকায় আমাদের এই কোর্স ফি ৪ হাজার ডলার। এই অর্থের যোগান দিতে অনেকের কষ্টও হয়। তাই যারা আমেরিকা যেতে চায়, তাদের দেশেই আমরা প্রশিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন,  ‘যে ৫ হাজার জন আমাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং কাজ করছে তারা বছরে অন্তত ৮০০ কোটি টাকা দেশে পাঠাচ্ছে। এই বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্সের সঙ্গে জড়িত থাকতে পেরে আমরা গর্বিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে সফটওয়্যার খাতে দক্ষ জনবল নেই। যারা সফটওয়্যার ডেভেলপ করে তারাই টেস্টিংয়ের কাজ করে। যেহেতু নিজে সফটওয়্যার তৈরি করছে তাই টেস্টিংয়ের সময় নিজেদের সফটওয়্যারকে খারাপ বলবে না। তাই খাতটির উন্নয়নে দেশে সফটওয়্যার টেকনিক্যাল দরকার।’

তিনি আরও জানান, ‘পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও দেশে সফটওয়্যার টেকিনিক্যাল খুঁজে পাওয়া যায়নি। দেশের সেনসিটিভ ডেটা নিয়ে যারা কাজ করে তার বিদেশি। বহিবিশ্বে নিজের দেশের ডেটা নিয়ে অন্য দেশের লোককে কাজ করতে দেওয়া হয় না। অথচ আমাদের দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব অন্যদের হাতে। তাই আইসিটি খাতে আমাদের আরও দক্ষ জনবল দরকার। আমরা রিয়েল লাইফ প্রজেক্ট ওরিয়েন্টশন ট্রেনিং দিতে চাই। অর্থাৎ কাজে গিয়ে ওই কাজটা যেন কাজে লাগে।’

আইসিটি খাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে পিপল এন টেক-এর প্রধান নির্বাহী আরও বলেন,  ‘বাইরের মানুষ গুগলে আগে বাংলাদেশ লিখে সার্চ দিতো, এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ লিখে সার্চ দেয়। ভবিষ্যতে রোল মডেল অব বাংলাদেশ লিখে সার্চ করবে।’

বৃত্তিতে অংশ নিতে আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে piit.us ঠিকানায় গিয়ে আবেদন করা যাবে।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন