প্রকাশিত:সোমবার,২৭ জানুয়ারি, ২০২০ ইং ।। ১৩ মাঘ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।
বিক্রমপুর খবর : লৌহজং থেকে স্টাফ রিপোর্টার মিজানুর রহমান ঝিলু :লৌহজংয়ে অজ্ঞাত রোগে ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারের এক শিশু ও এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা, করোনা ভাইরাসে দুজন মারা গেছে। কিন্তু স্থানীয় চিকিৎসকরা মৃত ব্যক্তিদের মৃত্যুর লক্ষণ শুনে করোনা ভাইরাসে তাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে মনে করেন না। মৃত শিশু ও নারীর নাম যথাক্রমে আবদুর রহমান (৩) ও শামিমা আক্তার (৩২)। তাঁরা দুজন একই পরিবারের সদস্য। আবদুর রহমান শামিমার দেবরের ছেলে। তাদের বাড়ি লৌহজং উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের জশলদিয়া গ্রামে। শামিমার স্বামীর নাম মীর জুয়েল। আর শিশু আবদুর রহমান জুয়েলের ছোটভাই মীর সোহেলের ছেলে। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মীর মাহমুদ ও অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া মীর মেহেদী নামে শামিমার দুটি ছেলে আছে। অন্যদিকে মীর সোহেলের তিন ছেলের মধ্যে আবদুর রহমান মেজো। মৃত শামিমার স্বামী মীর জুয়েল জানান, গত শনিবার রাতে শামিমার হঠাৎ করে প্রচণ্ড জ্বর আসে। মাত্রা ছিল ১০২ ডিগ্রি। পাতলা পায়খানা হয়। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক জ্বর ও পাতলা পায়খানার ওষুধ দেন। কিন্তু জ্বর না কমে শামিমার শীত করছে বলে জানায়। বারবার পানি পিপাসা পেতে থাকে। শামিমা এসময় শরীরে ভীষণ ব্যথা অনুভব করে। তাঁর ত্বকে স্পর্শ পর্যন্ত করা যাচ্ছিল না। সারা শরীরে ছোপ ছোপ লাল দাগ দেখা দেয়। হাতের আঙ্গুলগুলো বাঁকা হতে থাকে। এভাবে সারা রাত থাকার পর রবিবার সকাল ৯টার দিকে সে মারা যায়। এদিন বিকালে স্থানীয় কবরস্থানে শামিমাকে দাফন করা হয়। মৃত আবদুর রহমানের মা পপি আক্তার বলেন, জা শামিমাকে মাটি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রবিবার রাতে মেজো ছেলে আবদুর রহমানের জ্বর আসে। তার মধ্যেও জা শামিমার লক্ষণগুলো দেখা যায়। আবদুর রহমান এসময় শরীরে প্রচণ্ড জ্বর ও ব্যথা হওয়ায় তার হাতপা টিপতে বলে। অবশেষে রাত ২টার দিকে আবদুর রহমান মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
সোমবার দুপুরে লৌহজং উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মু. রাশেদুজ্জামান ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামরুল হাসান পাটোয়ারি মৃতদের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। পরে বিকেলে জেলা সিভিল সার্জন মো. আবুল কালাম আজাদও জশলদিয়ায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদের স্বজনদের সাথে কথা বলেন। তিনি জানান, আজ মঙ্গলবার একটি উচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসকদের টিম মৃতদের বাড়িতে গিয়ে রোগের নমুনা সংগ্রহ করবে।
এদিকে মৃতরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এই ধারণা মনে করার কারণ হচ্ছে – উক্ত ভাইরাসটির উৎপত্তি চীনে। আর এ এলাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজে ও পদ্মা (জশলদিয়া) পানি শোধনাগারে বিপুলসংখ্যক চীনা নাগরিক কর্মরত। তাছাড়া মৃতদের বাড়ি থেকে শোধনাগারের দূরত্ব মাত্র ৩০০ থেকে ৪০০ ফুটের। তাদের কাছ থেকে কোনোভাবে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে সন্দেহ করেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. মাসুদ খান।
তবে এই মূহুর্তে মৃত্যুর সঠিক কারন বলা যাচ্ছে না। তদন্ত ও রিপোর্ট দেখার পর বলা যাবে কি কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।