মুন্সিগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত মেজিস্ট্রেট আতাউল গণি ওসমানী বিক্রমপুর জাদুঘর পরিদর্শন করেন

0
7
মুন্সিগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত মেজিস্ট্রেট আতাউল গণি ওসমানী বিক্রমপুর জাদুঘর পরিদর্শন করেন

প্রকাশিত : মঙ্গলবার,২২ অক্টোবর ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ।। ০৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ(শরৎকাল)।। ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি।

বিক্রমপুর খবর : শ্রীনগর প্রতিনিধি : নিজস্ব সংবাদদাতা ।। মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার বালাসুর গ্রামে অবস্থিত বিক্রমপুর জাদুঘর আজ (২২ অক্টোবর) মুন্সিগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত মেজিস্ট্রেট আতাউল গণি ওসমানী পরিদর্শন করলেন। তিনি সকল ১১ টা বিক্রমপুর জাদুঘর পরিদর্শনে আসেন। প্রত্যেক তলায় প্রতিটি গ্যালারি ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করেন এবং জাদুঘরের ভূয়সি প্রশংসা করেন। বিশেষ করে ২য় তলায় বহু পুরানো কলের গান বাজিয়ে গান শুনে অভিভূত হন।

পরে তিনি বিক্রমপুর জাদুঘরের পুরো প্রাঙ্গণ হেঁটে হেঁটে দেখেন বিশেষ করে ক’দিন আগে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা পরিচয়ে জোর পূর্বক জাদুঘরের ভিতর দিয়ে বিক্রমপুর জাদুঘরের নিজস্ব টাইলস বিছানো পায়ে হাঁটা রাস্তার উপর দিয়ে অটো রিকশা, যানবাহন চলাচল করার জন্য রাস্তা তৈরির চেষ্টা করেন। ট্রাকে করে বালু ফালায়ে রাস্তা নেওয়ার চেষ্টা করার সময় তাৎক্ষণিকভাবে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে রাতের আঁধারে বালু ফালানোর রাস্তাটি চালু করতে পারে নাই। আজকে স্বচক্ষে অতিরিক্ত জেল মেজিস্ট্রেট আতাউল গনি ওসমানী দেখেন এবং জোরালো ভাবে বলেন এ ধরনের অন্যায় ভাবে জাদুঘরের সম্পদ নস্ট করে ভেতর দিয়ে রাস্তা দেওয়া যাবে না এবং সে ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করার বিষয়ে তিনি আশ্বস্ত করেন।
তিন তলা বিশিষ্ট এসি গেষ্ট হাউস ‘পান্থশালা’, অডিটোরিয়াম/ কনফারেন্স রুম, খেলার মাঠ, ওপেন স্টেজ, ২টি বিশাল বিশাল দিঘি, ৪টি শান বাঁধানো পুকুর ঘাট, জমিদারীর কাচারী ঘর, ইউরোপিয়ানদের জন্য গেস্ট হাউস, ভাগ্যকূলের সাবেক জমিদার যদুনাথ রায়ের মুখিমুখি ২টি ভবন এবং অন্যান্য স্থাপনা।
তিন তলা বিশিষ্ট বিক্রমপুর জাদুঘর, নৌকা জাদুঘর, উন্মুক্ত জাদুঘর, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মুনীর-আজাদ স্মৃতি পাঠাগার” দেখে মুন্সিগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত মেজিস্ট্রেট আতাউল গনি ওসমানী মুগ্ধ হন।
এই আঞ্চলিক জাদুঘরটি ২০১৩ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার রাড়িখাল ইউনিয়ন এর উত্তর বালাসুর গ্রামের জমিদার যদুনাথ রায়ের ১৯৬৫ সাল থেকে পরিত্যক্ত বাড়িতে “বিক্রমপুর জাদুঘর” (Bikrampur Museum) প্রতিষ্ঠা করে।
এই জাদুঘর বিক্রমপুরের অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করছে।ৎআড়িয়াল বিলের ধারে সাবেক জমিদার যদুনাথ রায়ের বাড়িতে হাজার বছরের স্মৃতি বিক্রমপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করার যে দায়িত্ব নিয়ে যারা এই জাদুঘরটি স্টার করেছেন তাদেরকে তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। নিশ্চয়ই এটি একটি মহৎ উদ্যোগ এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার একটি ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। বিক্রমপুর জাদুঘরের উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করে তিনি পরিদর্শন খাতায় স্বাক্ষর করেন।
শত ব্যস্ততার শহরে একটু খোলামেলা জায়গায় দম ফেলার যেন ফুসরত নেই। কাজের ফাঁকে একটু ছুটি পেলেই তাই অনেকেই ছোটেন একটু বিনোদনের জন্য কিংবা ছুটির দিনে নিরিবিলি পরিবেশে ঘুরে বেড়াতে, প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নিতে রাজধানীর খুব কাছেই বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেস ওয়েতে (ঢাকা-মাওয়া হাইওয়েতে) মাত্র ৫০ মিনিটে পৌঁছে যাবেন ভাগ্যকূল জমিদার বাড়ি “বিক্রমপুর জাদুঘর”। বালাসুর চৌরাস্তা থেকে ডানে ঢুকে যাবেন বিলের ধারে প্যারিস শহর জমিদার যদুনাথ রায়ের পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন নামের একটি সামাজিক সংগঠন গড়ে তুলেছে তিন তলা বিশিষ্ট এই “বিক্রমপুর জাদুঘর” এবং একই প্রাঙ্গণে তিন তলা বিশিষ্ট একটি ‘গেস্ট হাউস’।
তিনতলা ভবনের এ জাদুঘরে প্রবেশ করতেই দু’পাশে দুটি বড় মাটির পাতিল বা মটকা দেখতে পাবেন।
মোট ৭টি গ্যালারিতে রাখা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব নির্দশন।
নিচতলার বাম পাশের গ্যালারি যদুনাথ রায়ের নামে। এ গ্যালারিতে বিক্রমপুরের প্রাচীন মানচিত্র, বিক্রমপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া মাটিরপাত্র, পোড়া মাটির খেলনাসহ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভিন্ন নিদর্শন আছে।
নিচতলার ডান পাশের গ্যালারিটি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে। এ গ্যালারিতে আছে ব্যাসাল্ট পাথরের বাটি, গামলা, পাথরের থালা, পোড়া মাটির ইট, টালি ইত্যাদি এছাড়া বিক্রমপুরের নানা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনার ছবিসহ বিভিন্ন নিদর্শন।
দ্বিতীয় তলার বাম পাশের মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারিতে আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ছবি, ইতিহাস, দলিল, বই ও বিভিন্ন নমুনা। আর ডান পাশের গ্যালারিতে আছে বিক্রমপুরে জন্ম নেয়া মনীষীদের জীবন ও কর্মের বৃত্তান্ত। আরও আছে কাগজ আবিষ্কারের আগে প্রাচীন আমলে যে ভূর্জ গাছের বাকলে লেখা হতো সেই ভূর্জ গাছের বাকল।
তৃতীয় তলায় তালপাতায় লেখা পুঁথি, পুরাতন খাট পালং, চেয়ার, টেবিল, আলমারী,কাঠের সিন্দুক, আদি আমলের মুদ্রা, তাঁতের চরকা, পোড়া মাটির মূর্তি, সিরামিকের থালাসহ প্রাচীন আমলে স্থানীয় মানুষদের ব্যবহার্য বিভিন্ন নিদর্শন।
মাটি খুঁড়ে পাওয়া ১০০০ বছর আগের বিক্রমপুরের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস-
বিক্রমপুরের হাজার বছরের প্রাচীন সভ্যতা মাটির নিচে চাপা পড়ে ছিল এতদিন। তা এখন অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রায় দেড় হাজার বছর আগের বৌদ্ধনগরী সহ বেশ কিছু প্রত্ননিদর্শন সন্ধান পায় মাটি খুঁড়ে বিভিন্ন পর্যায়ে এক হাজার থেকে এক হাজার ৫০০ বছরের মধ্যে বিভিন্ন সভ্যতা গড়ে উঠেছে তার প্রমান করে মাটির নিচে প্রাচীন নগরসভ্যতার আবিষ্কার। ২০১২ সালে রামপালের রঘুরামপুরে বৌদ্ধবিহার আবিষ্কার, টঙ্গিবাড়ীর নাটেশ্বরে এক থেকে দেড় হাজার বছরের পুরোনো একটি বৌদ্ধনগরী আবিষ্কার করা হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক খননে প্রায় ৩ মিটার গভীর পর্যন্ত মানব বসতির চিহ্ন পাওয়া যায়।
মাটি খুঁড়ে পাওয়া বিক্রমপুরের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস ঐতিহ্যর নিদর্শন নিয়ে একটি গ্যালারীতে নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে। রঘুরামপুর ও নাটেশ্বর থেকে প্রাপ্ত কিছু মহামূল্যবান নির্দশন এই গ্যালারিতে স্হান পেয়েছে। এসব নির্দশন বিক্রমপুরের অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করছে।
প্রতিদিন শত শত দর্শক আসছে জাদুঘর পরির্দশন করতে। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে জাদুঘর প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন হয়ে থাকে।
বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন জাদুঘরটি সর্বসাধারণের জন্যে উন্মুক্ত থাকে।

 

(বিজ্ঞাপন)  https://www.facebook.com/3square1

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..             

   ‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com

আমাদের পেইজ লাইক দিন শেয়ার করুন।       

জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন