প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ।। ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ(হেমন্তকাল)।। ৩০ জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী।
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক :===(বিক্রমপুরের আলোকিত মানুষ)====
কেউ বাড়ি ভাড়া দিতে পারেন নি,কেউ পরীক্ষা দেবে অর্থাভাব, কারও অসুখ,চিকিৎসার টাকা নেই এমন কত কি ভানুর কান পর্যন্ত খবর পৌছে দিতে পারলেই হল, তিনি যে মুশকিল আসান। ভানু জানতে পেরেছেন আর উদ্যোগ নিয়েছেন। সমস্যার সমাধান হয়েছে, কখনও সেসব কথা আত্মপ্রচার করেন নি। উত্তমকুমার যেমন বাংলা সিনেমায় কিংবদন্তি একটা প্রতীক একটা ভাবমূর্তি ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাই। কথাগুলো কিন্তু রাম,শ্যাম,যদু,মধুর নয় বাংলা চলচ্চিত্রের আরেক কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের । সিনেমার অভিনয়ের বিচারে জহর রায়ের থেকে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় কে সব সময়েই তিনি ওপরে জায়গা দিতে চেয়েছেন। জহর রায়ের অসামান্য ক্ষমতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলেছেন জহর রায়ের মধ্যে অতি- অভিনয়ের প্রবণতা ছিল। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিনয় শৈলীর মধ্যে অতি অভিনয়ের কোনও প্রবণতা নেই।
© ধ্রুবতারাদের খোঁজে
‘হাটে বাজারে ‘ ছবির আউটডোর শ্যুটিং হয় ভুটানে। শমিত ভঞ্জ তখন অভিনয় জগতে নতুন। অভিনয় করবেন বলে বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছেড়েছিলেন। কলকাতায় ফিরে শমিত নিরাশ্রয় ভানু তাঁকে নিয়ে গেলেন নিজের বাড়ি। ওই বাড়িতে দেড় বছর ছিলেন। একবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ভানু নিজের হাতে তাঁর শুশ্রূষা করেছেন শুধু নয় নিজের গাড়িতে করে নবাগত অভিনেতা শমিত ভঞ্জ কে নিয়ে ঘুরেছেন, যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন অন্যদের সাথে যেন তিনি অভিনয় জগতে তিনি প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। চিত্র সমালোচকদের অনেকেই মেনে নেন উত্তম-পরবর্তী প্রজন্মের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় নায়ক ছিলেন শমিত ভঞ্জ কিন্তু টালিগঞ্জ তাঁকে চিনতে পারেনি। হতাশা তাঁকে গ্রাস করতে পারেনি। মারণ রোগের সঙ্গে যুঝতে যুঝতে শেষ ছবি ‘আবার অরণ্যে’তে অভিনয়ের ডাক পেয়ে অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুকে থমকে দিয়ে বলে উঠেছিলেন, “ফ্যান্টাস্টিক!” শমিত কথায় কথায় ভানুর মমত্ববোধের কথা স্মরণ করতেন।
জীবনে অনেক ভাল ছবিতে ভানু অভিনয় করেছেন, মানুষকে প্রাণ খুলে হাসিয়েছেন। তবে সেদিন নিজের হাসি লুকিয়ে রাখতে পারেন নি, যেদিন পরিচালক কনক মুখার্জি এসে বললেন একটা ছবি হবে, স্ক্রিপ্ট শুনলেন। যে জিনিসটা সব থেকে ভাল লাগল ছবির নাম ‘ ভানু পেলো লটারি ‘। ‘ যমালয়ে জীবন্ত ‘ মানুষের পর অনেক নাম – ডাক খ্যাতি হয়েছে কিন্তু একজন সিনেমার অভিনেতার নামে এর আগে কোনও ছবি সম্ভবত হয় নি। ‘ ভানু পেল লটারি’ মন্দ চলেনি।
© ধ্রুবতারাদের খোঁজে
অন্য আর একদিন একটি ছবির প্রস্তাব পেলেন ‘পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ‘। মৃণাল গুহঠাকুরতা ছবির পরিচালক। চিত্রনাট্য সবার পছন্দ। ছবির শ্যুটিং আরম্ভ হল। ছবির নায়িকা আনকোরা। বোম্বের কিশোরকুমার গাঙ্গুলির পত্নী রুমা গুহঠাকুরতা এই ছবির নায়িকা। বলা বাহুল্য ‘পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট’ রুমা গুহঠাকুরতার প্রথম বাংলা ছবি। বাংলা সিনেমার জগতে ভানু অবিস্মরণীয় একটি নাম। কৌতুক অভিনেতা হিসেবে তাঁর নাম মুছে দেওয়ার ক্ষমতা কারও কোনও দিন হবে না। কিন্তু তিনি নিছক কমেডিয়ান? দরদী ভানু কে কতজন চেনেন! ‘ মাসিমা মালপো খামু’ খ্যাত ভানু সম্পর্কে গীতা দে বলেছেন অভিনয়ের বাইরে সহশিল্পীদের জন্য ভানুর মমত্ববোধ কোনওদিন ভোলার নয়। গীতা দে বলেছেন একটা নয় অসংখ্য ঘটনা তিনি বলতে পারেন সেখানে মানুষ ভানু কত বড় মাপের ছিলেন প্রমাণিত হয়। কেউ বাড়ি ভাড়া দিতে পারেন নি,কেউ পরীক্ষা দেবে অর্থাভাব, কারও অসুখ,চিকিৎসার টাকা নেই এমন কত কি ভানুদা যেন মুশকিল আসান। ভানু জানতে পেরেছেন আর উদ্যোগ নিয়েছেন। একবার এক শিল্পী বিএ পরীক্ষা দেবে ভানু কে গীতা দে জানালেন। সঙ্গে সঙ্গে ভানু শুধু তাঁর পরীক্ষার ফি নয় বইপত্রের ব্যবস্থা করে দিলেন। অভিনয়ের কথা যদি বলেন তবে আলাদা করে তাঁর সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলার নেই তবুও মন খারাপ থাকলে না একবার না হয় ভানু অভিনীত যমালয়ের জীবন্ত মানুষ,ভানু পেল লটারি’, পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট, পাশের বাড়ি,বসু পরিবার,৮০ তে আসিও না , কিংবা মিস প্রিয়ংবা ছবি আরও একবার দেখবেন। সত্যি আপনার মন ভাল হয়ে যাবে।
সংকলনে অরুণাভ সেন।।
তথ্য সূত্র ও কৃতজ্ঞতা: ধ্রুবতারাদের খোঁজে
পুস্তক ঋণ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার,ভানু সমগ্র সম্পাদনা গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর–আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন–বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন।
জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor
email – bikrampurkhobor@gmail.com