বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর হামলায় মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার উত্তর কামারগাঁও গ্রামের শামসুল হকের তিন কন্যা আসমা, নাজমা ও ফাতেমা শহীদ হয়েছিলেন।
ওইদিন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মর্টার শেলের আঘাতে এই তিন বোনসহ মোট ১৬ জন শহীদ হন। তাদের করুণ পরিণতির বিস্মৃত গল্পগুলো নিয়ে ‘ত্রিবেণী’ শিল্প প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালার গ্যালারিতে ওই প্রদর্শনীর মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগ, যাঁরা যুদ্ধের নির্মম বাস্তবতার শিকার হয়েছিলেন, তাঁদের প্রতীক হিসেবে এই তিন বোনকে তুলে ধরা হয়েছে।গতকাল বুধবার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ত্রিবেণী প্রদর্শনীতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের মর্টার শেলের হামলায় একসঙ্গে শহীদ হওয়া তিন বোনের স্মৃতি চিত্রকলা, ইনস্টলেশন, ভিজ্যুয়াল মাধ্যম তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে তাদের ব্যবহৃত পোশাকসহ স্থান পেয়েছে মোট ৪৫টি শিল্পকর্ম।
তিন বোনের সাদাকালো একটি মাত্র ছবিকে সম্বল করে তাঁদের বিভিন্ন ধরনের ছবি এঁকেছেন শিল্পীরা।
এখানে স্থান পেয়েছে তরুণ শিল্পী প্রশুন হালদার, মৃৎমন্দির গুঞ্জন কুমার রায়, জয়তী বিশ্বাস, সারাহ জাবীনের মতো কয়েকজন শিল্পীর কাজ। এ প্রদর্শনী চলবে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দর্শকের জন্য উন্মুক্ত থাকবে প্রদর্শনী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আসমা বেগম, নাজমা বেগম ও ফাতেমা বেগম একসঙ্গে মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও আহত হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের এমন আত্মত্যাগের ঘটনাগুলোও ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তার পিতাসহ পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ায় এই হামলা চালানো হয়।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে জুলাই বিপ্লবের শহীদ আবু সাঈদের প্রতি যথেষ্ট সম্মান প্রদর্শন করা হবে। স্বাধীনতার সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ‘ততোধিক’ নামের একটি সংস্থা। কিউরেট করেছেন তরুণ শিল্পনির্দেশক ওয়ারেসু ফাওমি। তিনি বলেন, এই প্রদর্শনী মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্যাগ স্বীকার করা মানুষের অজানা গল্পের প্রতিফলন। এটি শুধু শিল্পের জন্য নয়, বরং বিস্মৃত স্বপ্ন, সাহস ও স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অনন্য প্রয়াস।
শহীদ তিন বোনের বড় ভাই বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের (পিএইচএফবিডি) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মুজাহেরুল হক এই প্রদর্শনীর উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি বলেন, আগের প্রজন্মের ত্যাগের কথা কি আমরা মনে রেখেছি? মুক্তিযুদ্ধের সময়ের প্রথম দিকের শহীদ আমার তিন বোন। কিন্তু কোনো দিন তাঁদের কথা কেউ তুলে ধরেননি। এই প্রথমবারের মতো তাঁদের স্মৃতি স্মরণ করা হচ্ছে জনসমক্ষে। তিনি সেই ভয়াল দিনের কথা স্মরণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন।
জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor
email – bikrampurkhobor@gmail.com