বিক্রমপুরের কৃতিসন্তান; আমরা তোমাকে ভুলব না

0
0
বিক্রমপুরের কৃতিসন্তান; আমরা তোমাকে ভুলব না

প্রকাশিত : রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ।।৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ(হেমন্তকাল)।।১২ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরী।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত স্থপতি। তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধের ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের স্থপতি।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন :

সৈয়দ মাইনুল হোসেনের জন্ম ১৯৫১ সালের ১৭ মার্চ ঢাকায়। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ মুজিবুল হক এবং মায়ের নাম সৈয়দা রাশিদা হক। বাবার চাকুরীর সুবাধে তাঁর জীবনের অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ সময় কেটেছে এই ফরিদপুর শহরে৷ ফরিদপুর মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার শুরু হয়েছিল তাঁর৷ প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ১৯৬২ সালে ভর্তি হন ফরিদপুর জেলা স্কুলে ৷ ১৯৬৭ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন৷ ১৯৬৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিদ্যায় (নকশা) ভর্তি হন। ১৯৭৬ সালে প্রথম শ্রেণীতে স্থাপত্য বিদ্যা পাশ করেন তিনি৷

ত্রিশ লাখ শহীদ। একটি দেশের জন্ম। শহীদদের স্মৃতির প্রতি নিবেদিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ। তার স্থপতি মাইনুল হোসেন। জীবদ্দশায় যোগ্য সম্মান পাননি। অথচ তাকেও কি ভোলা চলে? 

আমরা তোমাকে ভুলব না।

বিক্রমপুরের মানুষ ছিলেন সৈয়দ মাইনুল হোসেন, যদিও জন্ম ঢাকাতেই। তার দাদাবাড়ি দামপাড়ায়। দাদা সৈয়দ এমদাদ অলী ছিলেন খ্যাতিমান সাহিত্যিক। মোসলেম ভারত, সওগাত ইত্যাদি পত্রিকায় নিয়মিতই লিখতেন কবিতা ও প্রবন্ধ। মাইনুল হোসেনের নানাও নামকরা, কবি গোলাম মোস্তফা। প্রথিতযশা শিল্পী মোস্তফা মনোয়ারের ভাগ্নে তিনি। তাই বোঝাই যাচ্ছে শিক্ষানুরাগী সম্ভ্রান্ত পরিবারে বেড়ে উঠেছিলেন মইনুল হোসেন। বইপত্র আর আঁকাআঁকি দিয়ে নিজের একটি জগত গড়ে তুলেছিলেন শৈশবেই। তবে তাঁর ছিল ভগ্নস্বাস্থ্য, তাই ছোটাছুটি খেলাধুলায় বেশি সময় দিতে পারেননি। বরং তাঁর জগত ছিল ভাবমগ্ন শান্ত-সৌম্য।

স্কুল হলে শেষ মাইনুল একা একা পড়ন্ত বিকালের রোদ মেখে নিঝুম শহরে ঘুরে বেড়াতেন। ১৯৬৭ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে। মাইনুলের বাবা সৈয়দ মজিবুল হক ছিলেন ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক। এসএসসি পাস করে রাজেন্দ্র কলেজেই ভর্তি হন তিনি। আঁকতে খুব ভালোবাসত ছেলেটি। সারাদিনে যা দেখত, রাতে তা এঁকে রাখত ড্রয়িং খাতায়। তাই বাবা চাইতেন ছেলে স্থাপত্য নিয়ে পড়ুক। প্রাচীন স্থাপত্য ও শিল্পকলা নিয়ে মজিবুল হকেরও ছিল আগ্রহ। তাই বাবার আগ্রহকে সঙ্গে করেই মাইনুল ঢাকায় আসেন ১৯৭০ সালে। আর ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য (নকশা) বিভাগে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধ

এর মধ্যেই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। অবশ্য পয়ষট্টি সালেই যুদ্ধ তাঁর দেখা হয়ে গিয়েছিল। সেটা ছিল পাক-ভারত যুদ্ধ। এবারকার যুদ্ধ অবশ্য নিজের, নিজের দেশের। বাবার অনুরোধে মাইনুল চলে গেলেন দামপাড়ায় নিজেদের গ্রামের বাড়িতে। একাত্তরের মাসগুলো তাঁর খুব কষ্টে কেটেছে, রাত দিন উৎকণ্ঠার ভিতর দিয়ে গেছেন। দেশ স্বাধীন হলে আবার মাইনুল ফিরে গেলেন ঢাকায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসে। লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী ছিলেন তিনি। বইয়ের তত্ত্ব-সূত্র কেবল মাথায় না রেখে সেগুলোর প্রকাশ ঘটাতে চাইতেন হাতে কলমে। খুঁজতেন সৃজনশীল কোনো উপায়।

১৯৭৬ সালে তিনি প্রথম শ্রেণি পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস করেন। ওই বছরেরই এপ্রিল মাসে তিনি ইএএইচ কনসালট্যান্ট লিমিটেডে জুনিয়র স্থপতি হিসেবে যোগদান করেন। আবার ওই বছরের আগস্টেই যোগ দেন বাংলাদেশ কনসালট্যান্ট লিমিটেডে। এরপর থেকে স্থপতি সংসদ লিমিটেড, শহিদুল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট লিমিটেডসহ আরো কিছু নামকরা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মাইনুল হোসেন।

কর্মজীবনে তিনি প্রায় চল্লিশটি বড় বড় স্থাপনার নকশা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- জাতীয় স্মৃতিসৌধ (১৯৭৮), ঢাকা জাদুঘর (১৯৮২), ভোকেশনাল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ভোকেশনাল ট্রেনিং ইস্টিটিউট (১৯৭৭), বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবন (১৯৭৮), চট্টগ্রাম ইপিজেডের অফিস ভবন (১৯৮০), শিল্পকলা একাডেমির বারোশ’ আসনবিশিষ্ট অডিটোরিয়াম, উত্তরা মডেল টাউন (আবাসিক প্রকল্প) (১৯৮৫) ইত্যাদি। তবে দেশের জন্য তার সবচেয়ে বড় অবদান নিঃসন্দেহে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথম ধাপে ৮৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। পরের ধাপ মানে ততদিনে ১৯৭৬ সাল, প্রকল্পের জন্য নকশা প্রতিযোগিতার আহবান করা হয়। প্রতিযোগিতার বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন স্থপতি মাজহারুল ইসলাম। প্রথম দফায় কুড়িটির মতো নকশা জমা পড়েছিল; কিন্তু কোনোটিই নির্বাচিত হয়নি। দ্বিতীয় দফায় যতগুলো জমা পড়েছিল মাইনুল হোসেনের নকশাও ছিল তার মধ্যে। নির্বাচকমণ্ডলী তার নকশাটিকেই গ্রহণ করেন। এরপর তিন মাসের মধ্যে মাইনুল নকশা চূড়ান্ত করেন।

প্রকল্পটির বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল কনকর্ড লিমিটেড। মাইনুল সবসময়ই নিজের অভিজ্ঞতার সম্মিলন ঘটাতে চাইতেন নিজের কাজে। তাইতো স্থাপত্য পাঠের প্রথম ভাগে শেখা জ্যামিতিক কিছু ধারণাকে কাজে লাগালেন। ধীরে ধীরে এক অনন্য নকশা তৈরি করলেন।

একটি তলে অবস্থিত আনুভূমিক রেখা বরাবর লম্ব স্থাপনের পর লম্ব বরাবর সমান দূরত্বসম্পন্ন সাতটি বিন্দু কল্পনা করলেন। ঠিক একইভাবে আনুভূমিক রেখাটির মাঝে থেকেও দুই দিকে সমান দূরত্বে সাতটি করে বিন্দু ধরে নিলেন। এবার উল্লম্ব রেখার সাতটি বিন্দুর সঙ্গে আনুভূমিকের বিন্দুগুলোর সংযোগ কল্পনা করলেন। উল্লম্ব বরাবর সবচেয়ে কাছের বিন্দু আর আনুভূমিক বরাবর সবচেয়ে দূরের বিন্দু মিলালেন। একই নিয়মে উল্লম্ব বরাবর অবশিষ্ট ছয়টি বিন্দুকেও যোগ করে দিলেন দুই পাশের বিন্দুগুলোর সঙ্গে। এভাবে এগিয়ে আসতে আসতে একসময় উল্লম্ববরাবর সবচেয়ে দূরের বিন্দু মিলিত হলো আনুভূমিকের সবচেয়ে কাছের বিন্দুর সঙ্গে। এর ফলে দুইপাশে একটি চমৎকার আকৃতির সৃষ্টি হয়। সামনে থেকে দেখলে একদমই অন্যরকম লাগে। স্মৃতিসৌধটির উচ্চতা ১৫০ ফুট।

সাত সংখ্যাটির একটি বিশেষ তাৎপর্য ছিল নকশাটিতে। সৌধটি সাত জোড়া ত্রিভুজাকৃতির দেয়াল নিয়ে গঠিত। দেয়ালগুলো ছোট থেকে ক্রমেই বড় করে সাজানো হয়েছে। এই সাত জোড়া দেয়াল বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাতটি ধারাবাহিক পর্যায়কে নির্দেশ করে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ।

পরিবারের সাথে স্থপতি মাইনুল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

এক সাক্ষাৎকারে মাইনুল যেমন বলেছিলেন, চারদিকে প্রচণ্ড চাপ। সেই চাপে কিছু একটা উঠে যাচ্ছে। বায়ান্ন থেকে একাত্তর পর্যন্ত সাতটা বড় বড় আন্দোলন হয়েছিল। সবচেয়ে নিচের খাঁজটা বায়ান্ন, সবচেয়ে উঁচুটা একাত্তর।

স্মৃতিস্তম্ভের মূল প্রাঙ্গণ ৮৪ একর, তবে একে ঘিরে আছে আরো ২৪ একর যা সবুজ গাছপালায় সুশোভিত। এই স্মৃতিসৌধ রচনা করেছে সকল দেশপ্রেমিক নাগরিক ও মুক্তিযোদ্ধার বিজয় ও সাফল্যের গাথা।

স্মৃতিসৌধ চত্বরে আরো আছে মাতৃভূমির জন্য আত্মোৎসর্গকারী অজ্ঞাতনামা শহীদের দশটি গণ-সমাধি। পাশাপাশি আছে উন্মুক্ত মঞ্চ, অভ্যর্থনা কক্ষ, মসজিদ, হেলিপ্যাড ও ক্যাফেটেরিয়া।

পরের গল্পটা আমাদের সুখী করতে পারে না। পরের গল্পটা যে বঞ্চনার। মাইনুল হোসেনকে সম্মানী হিসাবে ২ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। টাকা দিতে গিয়ে মন্ত্রণালয়গুলো গড়িমসি করতে থাকে। এক পর্যায়ে সম্মানীর ৫০ ভাগ কর হিসাবে চাওয়া হয়। তারপরেও কথা আছে। ১৯৮২ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্মৃতিসৌধের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত ছিলেন অনেকে। ছিলেন না কেবল সৈয়দ মাইনুল হোসেন। অনুষ্ঠানের পর অতিথিরা চলে গেলে একা একাই দেখেছিলেন দূর থেকে, ওই স্থাপনা কর্ম যেমন দেখে সাধারণ কোনো মানুষ। তারপরও কথা আছে। বড় একটা সময় পর্যন্ত স্মৃতিসৌধের নামফলকে স্থপতি হিসেবে ছিল না সৈয়দ মাইনুল হোসেনের নাম।

অথচ নকশা গৃহীত হওয়ার পর থেকেই তাকে মেরে ফেলার হুমকি আসতে শুরু করেছিল। অজ্ঞাত আততায়ীর ভয়ে তিনি ধীরে ধীরে গৃহবন্দি হতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন; বাকি জীবনে দুই তিনবারের বেশি আর স্মৃতিসৌধে যাননি। তিনি আক্ষেপ করে বলতেন, পাঁচতলার বেশি বিল্ডিং তৈরি করার মতো ইন্টেলেকচুয়াল ক্যাপাসিটি কোনো বাঙালির নাই; কিন্তু সে যদি পঁয়ত্রিশ তলা বিল্ডিং বানায়, দেড়শ ফুট উঁচু মনুমেন্ট তৈরি করে, তাকে শাস্তি পেতে হবে। সেই শাস্তি হচ্ছে আমার।

বেশি করে ভেঙে পড়েছিলেন পিতার মৃত্যুর পর ১৯৯৬ সালে। ঢাকা মহানগরীর শান্তিনগরের এক গলিতে চারপাশে বহুতল আবাসিক ভবনের ভিড়ে, নানা গোলাম মোস্তফার একতলা বাড়িটিতে বিষণ্ন আর একাকী জীবন যাপন করতেন তিনি। কোনো অজানা আতঙ্কে অস্থির হয়ে থাকতেন সবসময়।

মাইনুল হোসেন বিয়ে করেছিলেন ১৯৮২ সালে। পরিবারকে তিনি ভীষণ ভালোবাসতেন। দুই মেয়ের সঙ্গ পেতে ভালোবাসতেন। অল্পেতেই খুশি হতেন। মজার খাবার খেতে পছন্দ করতেন। সময়সচেতন ছিলেন। সন্তানরা মনে করে, পিতার সঙ্গে কাটানো সময়গুলোই তাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। তবে ক্রমে ক্রমে তিনি এতটাই নিভৃত জীবনে চলে গিয়েছিলেন যে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অনেকদিন মানুষ তার খবরই জানতো না।

২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর দুপুর আড়াইটায় জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। স্মরণসভায় শিল্পী মুস্তফা মনোয়ার বলেছিলেন, এক সমৃদ্ধ পারিবারিক ঐতিহ্যের অধিকারী মাইনুল হোসেন যুদ্ধ, ধ্বংস ও অন্যায়কে ঘৃণা করতেন। তার অনন্য শিল্পচিন্তার অনুপম প্রকাশ ঘটেছে জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিটি স্তম্ভে এবং এর সামগ্রিক নির্মাণশৈলীতে। স্মৃতিসৌধের ঊর্ধ্বমুখী বিস্তার যেন বাঙালি জাতির হার না মানা চির উন্নত শিরকেই নির্দেশ করে।

স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেছেন, সৈয়দ মাইনুল হোসেনের জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থাপত্য কাঠামোর সাতটি স্তম্ভের এক অভিন্ন বিন্দুতে মিলন যেন এই বার্তাই দেয় যে, সমস্ত বিভাজন ও মতপার্থক্য সত্ত্বেও আমরা মূলত এক মহান মুক্তিযুদ্ধের সন্তান এবং বাংলাদেশ নামক মহান জাতি রাষ্ট্রের গর্বিত উত্তরাধিকার।

মাইনুল হোসেনকে নির্মিত তথ্যচিত্র নিভৃতচারীতে কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন বলছেন, আমি সৌভাগ্যবান যে তিনি আমার অফিসে কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন ভদ্র, স্বল্পবাক। তাকে আমি কারুর সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলতে দেখিনি। তিনি সবসময়ই চিন্তামগ্ন থাকতেন। ছিয়াত্তর সালে যখন সরকারের স্থাপত্য দপ্তর স্মৃতিসৌধ নকশা আহ্বান করল, আমরা তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিলাম তুমিও নকশা জমা দাও। প্রতিযোগিতায় মাইনুল প্রথম স্থান অধিকার করলেন। আমিও নকশা জমা দিয়েছিলাম, আমি তৃতীয় হয়েছিলাম। মাইনুলের নকশায় আমাদের আত্মত্যাগের মহিমা পুরোটাই ভাস্বর হয়েছে।

মোস্তফা মনোয়ার বলেছেন, আমার ছোটবুবুর ছেলে সে। মামা হিসেবে তাকে নিয়ে আমার অনেক গর্ব। অসাধারণ এক কাজ করে গেছে সে। ছোটবেলাতে তার আঁকার খাতা দেখেই বুঝতে পারতাম, তাঁর কল্পনাশক্তি। তাঁর মনে সবসময় বড় কিছু করার আগ্রহ ছিল। তার স্মৃতিসৌধের মডেলটা সম্ভবত আমিই প্রথম দেখেছি। পৃথিবীর অনেক জায়গায় আমি গিয়েছি, এটা সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতিসৌধ। তার অবদান চিরকালই জাগ্রত থাকবে বলে আমার মনে হয়।

স্থপতি শামসুল ওয়ারেস বলছেন, একটি জ্যামিতিক বেসিস থেকে মাইনুল হোসেন একটি ফর্ম তৈরি করেছেন। সাধারণত স্থপতিরা ফর্ম তৈরি করেন কোনো বেসিস ছাড়া। এখানে মাইনুলের কাজটি নিঃসন্দেহে ইউনিক।

পাদপ্রদীপের আলো বঞ্চিত মানুষটিকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদেরই। তাকে সম্মান দিতে না পারলে, নিজেদেরই অসম্মানিত করব আমরা।

তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া, রোরমিডিয়া, নিভৃতচারী (তথ্যচিত্র), নির্ণয় উপদেষ্টা লিমিটেড

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..           

‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com

আমাদের পেইজ লাইক দিন শেয়ার করুন

জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor

email – bikrampurkhobor@gmail.com

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন