বিক্রমপুরের আলোকিত মানুষ চাষী মরহুম নজরুল ইসলামের ৮৩তম জন্মদিন আজ

0
1
বিক্রমপুরের আলোকিত মানুষ চাষী মরহুম নজরুল ইসলামের ৮৩তম জন্মদিন আজ

প্রকাশিত : বুধবার,২৩ অক্টোবর ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ।। ০৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ(শরৎকাল)।। ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি।

বিক্রমপুর খবর : শ্রীনগর প্রতিনিধি :

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলামের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪১ সালের ২৩ অক্টোবর বিক্রমপুরের শ্রীনগর থানার সমষপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

১৯৬১ সালে সৈয়দ মোহাম্মদ আওয়ালের হাত ধরে চলচ্চিত্র অঙ্গনে পর্দাপণ পরিচালক-নির্মাতা চাষী নজরুলের। পরবর্তী সময়ে খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা ফতেহ লোহানী এবং প্রখ্যাত সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার ওবায়েদ-উল-হকের সহকারী হিসেবে তিনি চলচ্চিত্রে কাজ করেন।

১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনিই প্রথম নির্মাণ করেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’। পাঠকরা এতক্ষণে বুঝে পেলেছেন কার কথা বলছি। হ্যাঁ, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত কীর্তিমান নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলামের কথাই বলছি।
তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের জ্যেষ্ঠপুত্র। বাবা মোসলেহ উদ্দিন আহম্মদ, ভারতের বিহারে টাটা আয়রন এন্ড স্টীল কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। চাষীর মামা চাষী ইমাম উদ্দিন শেরেবাংলা এ. কে. ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন এবং নবযুগ ও লাঙ্গল পত্রিকার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। জানা যায়, শেরেবাংলা এ. কে. ফজলুল হক চাষীর নাম রেখেছিলেন।
১৯৫৭ সালের দিকে মুসলেহ উদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। টাটার চাকরি ছেড়ে দিয়ে সপরিবারে স্বদেশে চলে এলেন। কিছুদিন পর তিনি মারা যান। পিতার শোক ভুলে যাবার আগেই সংসারে বড় ছেলে হিসেবে সব দায়িত্ব তাঁর কাঁধে এসে পড়ে। এজি অফিসে অফিসের পোস্ট-সর্টার হিসেবে ১৯৬৯ পর্যন্ত চাকরি করেছেন। এফডিসি মাত্র তখন গড়ে উঠছে। আউয়াল সাহেব বিখ্যাত সিনেমা করিয়ে ফতেহ্ লোহানীর প্রধান সহকারী।
চাষী চাকরির ফাঁকে ফাঁকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, একই সঙ্গে শুরু করেন নাটক। কৃষ্টি সংঘের সাথে মঞ্চে অভিনয় করেন চাষী। কাজ করতে করতে চলে আসে ১৯৭১। আর সবার মতো তিনিও যোগ দিলেন মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণে। তারপর যুদ্ধশেষে বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ নির্মাণ করলেন। ১৯৭২-এ এই ছবির মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে চাষী নজরুলের আত্ম প্রকাশ ঘটে। এছাড়া নিয়মিত বেতারে, টিভিতে সান্ধ্যকালীন অভিনয় করতেন তিনি।
তার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছে- ওরা ১১ জন (১৯৭২), সংগ্রাম (১৯৭৪), ভালো মানুষ (১৯৭৫), বাজিমাত (১৯৭৮), দেবদাস (১৯৮২), চন্দ্রনাথ (১৯৮৪), শুভদা (১৯৮৬), মিয়া ভাই (১৯৮৭), বেহুলা লক্ষিন্দর (১৯৮৭), বাসনা (১৯৮৯), পদ্মা মেঘনা যমুনা (১৯৯১), হাঙর নদী গ্রেনেড (১৯৯৭), হাছন রাজা (২০০১), মেঘের পরে মেঘ (২০০৪), শাস্তি (২০০৪), দুই পুরুষ (২০১১), দেবদাস (২০১৩)।
ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৬৯ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর দেশের অন্যতম বিখ্যাত কাজী পরিবারের কে.জি.আহমেদের মেয়ে জোত্স্না কাজীকে বিয়ে করলেন চাষী নজরুল ইসলাম। কর্মজীবনে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে চারবার সভাপতি ছিলেন তিনি।
চলচ্চিত্র পরিচালনার পাশাপাশি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে চারবার সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন চাষী নজরুল ইসলাম। এ ছাড়া চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য, যৌথ প্রযোজনা কমিটির নির্বাহী সদস্য, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির সদস্য, ঢাকা মেট্রোপলিটন ফুটবল লীগ অ্যাসোসিয়েশনের (ডামফা) ফুটবল সম্পাদক, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
চাষী নজরুল ইসলাম একুশে পদক, একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাংলাদেশ সিনে জার্নালিষ্ট এ্যসোসিয়েশন এওয়ার্ড, শের-ই-বাংলা স্মৃতি পুরস্কার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইয়ুথ অর্গানাইজেশন ফেডারেশন এওয়ার্ড, সিনে ডিরেক্টরাল সোস্যাল ওয়েলফেয়ার, বাংলাদেশ সোস্যাল ওয়েলফেয়ার, স্যার জগদীশচন্দ্র বসু স্বর্ণপদক,
জহির রায়হাণ স্বর্ণপদক, বিনোদন বিচিত্রা অ্যাওয়ার্ড, জেনেসিস নজরুল সন্মামনা পদক, তারকালোক অ্যাওয়ার্ড, সিজেএফবি অ্যাওয়ার্ড, ট্রাব অ্যাওয়ার্ড এবং আন্তর্জাতিক কালাকার পুরস্কারসহ প্রচুর পুরস্কার-সম্মাননা পেয়েছেন।
লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৫ সালের ১১ই জানুয়ারি বরেণ্য এ চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের জন্য কিংবদন্তি এই নির্মাতা অমর হয়ে আছেন।

 

(বিজ্ঞাপন)  https://www.facebook.com/3square1

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..             

   ‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com

আমাদের পেইজ লাইক দিন শেয়ার করুন।       

জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন