প্রকাশিত : শুক্রবার ২৮ মার্চ, ২০২৫খ্রিষ্টাব্দ।। ১৪ই চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (বসন্ত কাল)।। ২৭ রমজান, ১৪৪৬ হিজরী।
বিক্রমপুর খবর : নিউজ ডেস্ক : আজ ২৮ মার্চ সাহিত্যিক, সাংবাদিক, প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব , ও বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা বিক্রমপুরের আলোকিত মানুষ সত্যেন সেন এর জন্মদিন।
সত্যেন সেন একাধারে বিপ্লবী, সাহিত্যিক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি সাংবাদিকতার সাথেও যুক্ত ছিলেন। তিনি দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘদিন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সংগঠন, উদীচীর প্রতিষ্ঠাতাও সত্যেন সেন।
১৯০৭ সালের ২৮ মার্চ সত্যেন সেন জন্মগ্রহণ করেন মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ি উপজেলার সোনারং গ্রামে। কোনও কোনও মতে তাঁর জন্ম তারিখ ২৮ মে।
সত্যেন সেন যখন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র, তখন এক বিপ্লবীর সাথে তার পরিচয় ঘটে। তার নাম মাহাংগু বানিয়া বাউ। এঁর কাছেই সত্যেন দেশপ্রেম, স্বাধীনতা ও সংস্কৃতির সংস্কৃতি সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণ করেন। শৈশবের সেই গুরুকে সত্যেন কথা দিয়েছিলেন বড় হয়ে দেশের কাজ করবেন। সত্যেন অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করেছেন।
বিএ পরীক্ষার পরই সত্যেন সেন ১৯৩১ সালে গ্রেফতার হন। আলিপুর ও বহরমপুর জেলে তিনি কারাবাস করেন। জেলে থেকেই তিনি ১৯৩৩ সালে এম.এ পাস করেন। প্রথম পর্যায়ে সত্যেন সেন পাঁচ বছর জেলে ছিলেন। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে সত্যেন সেন সোজা চলে আসেন নিজ গ্রাম মুন্সিগঞ্জের সোনারং গ্রামে।
সোনারং এসেই তিনি গড়ে তোলেন কৃষি আন্দোলন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় তিনি দেশ ও দেশের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক গান ও কবিতা রচনা করেন। সে সকল কবিতা ও গান তাঁকে সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিতি দেয়।
১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান দেশভাগের পর বাংলাদেশের অনেক হিন্দু ভারতে চলে যায়। কিন্তু সত্যেন সেন কখনওই যাননি। কৃষক আন্দোলনের জন্য ১৯৪৯ সালে ঢাকার বনগ্রামের বাসা হতে আবার গ্রেফতার হলেন সত্যেন সেন। ছাড়া পেলেন ১৯৫৩ সালে।
তিনি আটক ছিলেন ঢাকা ও রাজশাহি জেলে। তিনি কারাগারে একাধারে ৪০ দিন অনশন করেন। ব্রিটিশ ও পাক শাসনকালে সত্যেন সেনকে ১৪ বছর কারাভোগ ও নির্যাতন সহ্য করতে হয়।
দীর্ঘ কারাভোগ ও নির্যাতনে সত্যেন সেনের স্বাস্থ্য ভেঙে যায়। কিন্তু তাতে তাঁর সাহিত্য সাধনা এতোটুকুও থেমে যায়নি। তিনি অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন।
অসংখ্য গ্রন্থের মধ্যে সত্যেনের বিখ্যাত কয়েকটি গ্রন্থ হল: পদচিহ্ন, মহাবিদ্রোহের কাহিনী, উত্তরণ, সেয়ানা, রুদ্ধদ্বার-মুক্তপ্রাণ, অভিযাত্রী, গ্রাম-বাংলার পথে পথে, পাপের সন্তান, অপরাজেয়, আলবেরুনী, ভোরের বিহঙ্গী ও অভিশপ্ত নগরী।
সত্যেন সেন সাহিত্যের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৬ সালে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়া ‘পাপের সন্তান’-এর জন্য তিনি ১৯৬৯ সালে আদমজি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেছেন।
সত্যেন সেন ১৯৮১ সালের ৫ জানুয়ারি শান্তিনিকেতনে তার বোনের বাড়িতে পরলোকগমন করেন।
বিক্রমপুরের আলোকিত মানুষ বিপ্লবী সত্যেন সেনের জন্মদিনে তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর– আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন– বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন।
জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor
email – bikrampurkhobor@gmail.com