প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৪ মে ২০২১ইং।। ২১শে বৈশাখ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ(গ্রীস্মকাল)। ২১ রমজান ১৪৪২ হিজরী
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : সোমবার ভোরে মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা নদীতে নোঙর করে রাখা বাল্ক্কহেডের সঙ্গে ধাক্কায় বিধ্বস্ত স্পিডবোটের ২৬ যাত্রী প্রাণ হারান
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় পদ্মা নদীতে স্পিডবোটের সঙ্গে বালুবোঝাই বাল্কহেডের সংঘর্ষে ২৬ প্রাণহানির ঘটনায় বাংলাবাজার ঘাটের ইজারাদার, বোটের মালিক-চালকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সোমবার রাতে শিবচর থানায় মামলাটি করেন নৌ-পুলিশের এসআই লোকমান হোসেন। মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে আহত বোটচালককে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন।
শিবচর থানা ও নৌ-পুলিশের সূত্র জানায়, বাংলাবাজার ফেরিঘাটের আসার পথে বালুবাহী বাল্কহেডের সাথে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় এক নারী, তিন শিশুসহ ২৬ জন মারা যায়। এ ঘটনায় সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শিবচর উপজেলার চর জানাজাত নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) লোকমান হোসেন বাদি হয়ে একটি মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় শিমুলিয়া ঘাটের ইজারাদার শাহ আলম খান, স্পিডবোটের মালিক চান্দু মিয়া ও জহিরুল ইসলাম এবং স্পিডবোটটির চালক শাহ আলমকে।
এত চোখ এড়িয়ে স্পিডবোটটি চলছিল কীভাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি মিরাজ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাতে চারজনকে আসামি করে নৌ-পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা করেছে। মামলাটি তদন্ত করবে নৌ-পুলিশ। আসামি ধরবেও তারা। প্রয়োজনে আমরা তাদের সহযোগিতা করব।’
তিনি আরো বলেন, ‘চারজন আসামির কেউ এখন পর্যন্ত গ্রেফতার নেই। স্পিডবোটটির চালক পুলিশের নজরদারিতে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা খুবই খারাপ। রাত দুটার দিকে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।’
জানতে চাইলে চর জানাজাত নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবদুল রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলায় আসামি সবার বাড়ি মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এলাকায়। রাতে মামলা হলেও আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকে আসামি ধরার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আসামিদের গ্রেফতারে নৌ-পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগসহ একাধিক টিম কাজ করছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।’
সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট থেকে ৩২ জন যাত্রী বহন করে মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজারের দিকে যাচ্ছিল স্পিডবোটটি। এটি বাংলাবাজার ফেরিঘাটের কাছাকাছি এলে ঘাটের কাছে নোঙর করা বালুবোঝাই একটি বাল্কহেডের পেছন দিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। মুহূর্তেই স্পিডবোটটি উল্টে বাল্কহেডের নিচে চলে যায়। খবর পেয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু ফায়ার সার্ভিস ও নৌ-পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন। ঘটনাস্থল থেকে ২৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। সাঁতরে তীরে ওঠেন ছয়জন। তাদের উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে এক নারীর মৃত্যু হয়।
নিহত সবার লাশ রাখা হয় কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের দোতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। দুপুর থেকে শুরু হয় লাশের পরিচয় শনাক্তের কাজ। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার মধ্যেই সব কটি লাশের পরিচয় শনাক্ত শেষে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় মাদারীপুর স্থানীয় সরকার অধিদফতরের উপ-পরিচালক আজাহারুল ইসলামকে প্রধান করে ছয় সদস্যদের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দাফন কাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তার দেয়া হয়।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর–আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন–বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor