প্রকাশিত: বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১ইং।। ১৫ই বৈশাখ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ(গ্রীস্মকাল)। ১৫ রমজান ১৪৪২ হিজরী
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক :বাংলাদেশ মাঝারি থেকে শক্তিশালী ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকির মুখোমুখি, যার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও হাজার হাজার লোকের প্রাণহানির ঝুঁকি রয়েছে, কারণ বঙ্গোপসাগরে ভূমিকম্পের চারটি সক্রিয় উৎস সৃষ্টি হয়েছে যা ৭ মাত্রার উপরে কম্পনের সৃষ্টি করতে পারে। বঙ্গোপসাগরে রিকটার স্কেল মারাত্মকভাবে দেশকে প্রভাবিত করছে। যে কোনও শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরের পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি খুবই নাজুক। পাঁচটি ভূতাত্ত্বিক ত্রুটি যুক্ত রেখা দেশ জুড়ে রয়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতে এটি একটি বড় ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকির বিষয়। যদি এই দেশে ৭ বা তারও বেশি মাত্রার একটি বিশাল ভূমিকম্প ঘটে তবে অনেক বিল্ডিংয়ের ত্রুটিযুক্ত অবকাঠামো এবং সঠিক সচেতনতার কারণে একটি বড় মানব ট্রাজেডির সৃষ্টি হবে। সুতরাং, বাংলাদেশে সরকার দ্বারা ভূমিকম্পের প্রধান কারণগুলি, উদীয়মান ঝুঁকি, ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল, যথাযথ প্রস্তুতি, প্রভাব এবং প্রশমনজনিত প্রভাবগুলির দক্ষ জ্ঞান প্রচারের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বেশ কয়েকটি সক্রিয় টেকটোনিক প্লেট সীমানার সন্ধিক্ষণে অবস্থিত বাংলাদেশ । তাছাড়া এটি বিশ্বের বৃহত্তম নদী ব-দ্বীপ যেটি সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি অবস্থিত যার ফলে ভূমিকম্পের পরে সুনামির ক্ষয়ক্ষতি, বন্যা এবং ভূমিধ্বসের সম্মুখীন হতে হবে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ ও এর আশেপাশের অঞ্চলগুলির টেকটোনিক কাঠামোটি ইঙ্গিত দেয় যে বার্মা, ভারত এবং ইউরেশিয়ার প্লেট মার্জিন সংলগ্ন অঞ্চলে বাংলাদেশ অবস্থিত যেখানে অতীতে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছে। বাংলাদেশের চারদিকে বেশ কয়েকটি টেকটোনিক ব্লক রয়েছে যা সাম্প্রতিক সময়ে ভূমিকম্পের সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রজন্ম কোনও বড় ধরনের ভূমিকম্প প্রত্যক্ষ করেনি। ফলস্বরূপ জনসংখ্যা ভূমিকম্পের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন নয়।
১৯৭১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ কমপক্ষে ৪৬৫ টি ছোট থেকে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। ভূমিকম্পের প্রকৃত সংখ্যাটি এর চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করা হয়, কারণ চট্টগ্রামের একাকী অপারেশনাল পর্যবেক্ষণে সঠিক ভূমিকম্পের মাত্রা মাপার সরঞ্জামের অভাবে অনেকগুলি কম্পন রেকর্ড করা হয়নি। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা নিকটতম ভবিষ্যতে কম এবং মাঝারি মাত্রার সাম্প্রতিক পুনরাবৃত্ত ভূমিকম্পকে একটি বৃহত এবং সম্ভাব্য বিপর্যয়জনক ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা হিসাবে বিবেচনা করেছেন, কারণ এই কম্পনগুলি দেশের ফাটল অঞ্চলে জমে থাকা বেশিরভাগ চাপকে মুক্তি দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা আরও সন্দেহ করেন যে যদি বাংলাদেশের বড় বড় শহরগুলিতে রিকটার স্কেলে ৭.০ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তবে এই নগর কেন্দ্রগুলিতে বিল্ডিং কোড ব্যবহার না করে নির্মিত অনেক বিল্ডিংয়ের কাঠামোগত ব্যর্থতার কারণে একটি বড় মানব ট্রাজেডি ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে কারন রাজধানীর অনেক বিল্ডিং সঠিক নির্মাণ সামগ্রী এবং বিল্ডিং কোড লঙ্ঘন করে তৈরি করা হয়েছে।
বিগত ১০০ বছরে বাংলাদেশ কোন বড় ধরনের ভুমিকম্প না হওয়ায় ভূ-তত্ত্ববিদরা আশঙ্খা করছে যে দুটি প্লেটের মাঝে এই ১০০ বছরে যে শক্তি সঞ্চিত হয়েছে তা বিশালাকার ভূমিকম্পের সম্ভাবনা কে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে প্লেটের দু দিক দিয়েই। যার একটি হচ্ছে সিলেট অঞ্চলের ডাউকি ফল্টে এবং অন্যটি হচ্ছে চিটাগং ত্রিপুরা বেল্টের পাহাড়ি অঞ্চলে। এক্ষেত্রে বলা যায় দুটি বড়ধরনের ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে এখন বাংলাদেশ। ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থান বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা আরও বলছেন, যেকোনো সময় একটা বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানবে বাংলাদেশে। যার ফলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে রাজধানী ঢাকায়। কারণ এই শহরের ভবন নির্মাণসহ সার্বিকভাবে অবকাঠামো ব্যবস্থাসমূহ বিশ্লেষণ করে ভুমিকম্প বিশেষজ্ঞেরা জানান, প্রায় সাড়ে ৭ অথবা ৭.৫ মাত্রায় ভূমিকম্পে ঢাকার প্রায় ৭২ হাজার ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে এবং যার কংক্রিটের পরিমান হবে প্রায় ৭ কোটি টন। তাই আগে থেকেই শহরে তৈরি করা হচ্ছে পর্যাপ্ত ফাঁকা স্থান এছাড়াও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি সচেতন করতে বলা হচ্ছে সাধারন মানুষদের।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর–আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন–বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন।