‘পানিতে হাবুডুবু খেতে খেতে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল’

0
20
মুন্সীগঞ্জে মিরকাদিম পৌরসভার পশ্চিমপাড়া এলাকার দিদার হোসেন সাত মাস আগে বিয়ে করেন। বিয়ের পর নববধূ এবং দিদার হোসেনের ছবি এখন শুধুই স্মৃতি -সংগৃহীত

প্রকাশিত :মঙ্গলবার,৩০জুন ২০২০ইং ।। ১৬ই আষাঢ় ১৪২৭ বঙ্গাব্দ ।।

বিক্রমপুর খবর : কাজী সাব্বির আহমেদ দিপু, মুন্সীগঞ্জ : ‘মর্নিং বার্ড লঞ্চটি নিয়ম মেনে ঘাটে ভেড়াচ্ছিল। হঠাৎ করে অন্য লঞ্চটি ধাক্কা দিয়ে এতগুলো মানুষকে মেরে ফেলল। আমিও মরে যেতে পারতাম।’ কিভাবে লঞ্চটি ডুবে গেল তার বর্ণনা দেওয়ার সময় বেঁচে যাওয়া যাত্রী আব্দুর রউফ বলেন, তাদের বহন করা লঞ্চটি সদরঘাটের একেবার কাছে চলে যায়। যাত্রীদের নামার জন্য প্রস্তুুতি চলছিল। এ সময় আকস্মিক ময়ূর-২ লঞ্চটি ধাক্কা দিলে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই আমাদের লঞ্চটি উল্টে যায়। আমি ও আমার বন্ধু সত্যরঞ্জন ছিলাম লঞ্চের নিচতলায়। পানিতে হাবুডুবু খেতে খেতে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল আমার। আপ্রাণ চেষ্টায় আমি পানির উপরে উঠতে পারায় বেঁচে আছি কিন্তু আমার বন্ধু সত্যরঞ্জন উঠতে পারেনি, তার মৃত্যু হয়েছে বুড়িগঙ্গার নোংরা পানিতে।

আব্দুর রউফ আরও বলেন, গত ২০ বছর ধরে প্রতিদিন লঞ্চের যাত্রী হয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসা যাওয়া করেন। প্রতিদিনের মতো সোমবারও মুন্সীগঞ্জের কাঠপট্টি লঞ্চঘাট থেকে মর্নিং বার্ড লঞ্চে চড়ে দুই বন্ধু ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। তিনি জানালেন, লঞ্চডুবিতে যারা মারা গেছেন, তাদের অনেককেই ভালো করে চেনেন। কারণ, এসব মানুষ মুন্সীগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ঢাকায় আসেন। কাজ শেষে আবার মুন্সীগঞ্জে চলে যান।

অন্যদিকে মুন্সীগঞ্জে মিরকাদিম পৌরসভার পশ্চিমপাড়া এলাকায় মৃত আব্দুল রহিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের মাতম। ৭ মাস আগে বিয়ে করা দিদার হোসেন ও তার বোন রুমা বেগম লঞ্চডুবিতে মারা গেছেন। এই পশ্চিমপাড়া এলাকার শিপলু, সুফিয়া বেগম লঞ্চডুবিতে মারা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার বুড়িগঙ্গায় লঞ্চ ডুবির ঘটনায় সলিল সমাধি হওয়া যাত্রীদের বেশীর ভাগ মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার পশ্চিমপাড়া, গোয়ালঘূর্নি, রিকাবীবাজার, কাঠপট্টী, রামপাল, রামশিং, সিপাহীপাড়া, বজ্রযোগিনী ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আব্দুল্লাপুর, সলিমাবাদ গ্রামসহ আশপাশ এলাকার।

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন