ধীরেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী দরজা খুলে হাসিমুখে বললেন- কেমন আছ বাবা ?

0
2
ধীরেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী দরজা খুলে হাসিমুখে বললেন- কেমন আছ বাবা ?

প্রকাশিত : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ।।২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ(হেমন্তকাল)।।১১ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরী।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক :

ধীরেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী দরজা খুলে হাসিমুখে বললেন- কেমন আছ বাবা ?

ধীরেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী দরজা খুলে হাসিমুখে বললেন- কেমন আছ বাবা ?

(তিনি ধরেই নিলেন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা যুবকটি তাঁর ছাত্র)

কলিমউল্লাহ বলল- স্যার ভালো আছি । আপনি কি আমাকে চিনতে পেরেছেন স্যার ?

(তিনি তাকে চিনতে পারেন নি । চিনতে পারার কথাও না)

তারপরও হাসিমুখে বললেন- চিনতে পারবনা কেন? চিনেছি ।

(মিথ্যা বলার কারণ হলো তিনি অতীত অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, যতবার কোনো ছাত্রকে  দেখে তিনি না চেনার কথা বলেছেন, ততবারই তারা ভয়ঙ্কর মনে কষ্ট পেয়েছে । এক  ছাত্র তো কেঁদেই ফেলেছিল)

ধীরেন্দ্রনাথ রায় বললেন- বাবা, তোমার নামটা যেন কী ?

– কলিমউল্লাহ ।

– হ্যাঁ, তাই তো । কলিমউল্লাহ । এখন পরিষ্কার মনে পড়েছে । তুমি কি খাওয়াদাওয়া করেছ ?

– জি না স্যার ।

– এসো আমার সঙ্গে চারটা ভাত খাও । আয়োজন খুব সামান্য । ভাত, ডিম ভর্তা ।  ঘরে আরো ডিম আছে । তোমাকে ডিম ভেজে দেব। ঘরে এক কৌটা ভালো গাওয়া ঘি ছিল,  কৌটাটা খুঁজে পাচ্ছি না..

কলিমউল্লাহ বলল- এখন খেতে পারব না । আপনার কাছে আমি একটা অতি জরুরী কাজে এসেছি ।

– জরুরী কাজটা কী ?

– মিলিটারির এক কর্নেল আপনার সাথে কথা বলতে চান ।

ধীরেন্দ্রনাথ রায় বিস্মিত হয়ে বললেন- আমার সাথে মিলিটারির কী কথা ?

– আমি জানি না । তবে স্যার আপনার ভয়ের কিছু নেই । আমি সঙ্গে আছি ।

ধীরেন্দ্রনাথ রায় বললেন- তুমি আমার কোন ব্যাচের ছাত্র বলো তো ?

– কথা বলে সময় নষ্ট করতে পারব না । মিটিংটা শেষ করে আসি, তারপর গল্প করব ।

– দুইটা মিনিট অপেক্ষা করো, ভাতটা খেয়ে নিই । আমি খুব ক্ষুধার্ত । সকালে নাশতা করিনি।

– ভাত খাবার জন্যে অপেক্ষা করার সময় নাই স্যার।

– তাহলে দাঁড়াও, পাঞ্জাবিটা গায়ে দিয়ে আসি । আমার সঙ্গে কি কথা বুঝলাম না ।  সে আমার ছাত্র না তো? করাচি ইউনাভার্সিটিতে আমি দু’বছর মাষ্টারি করেছি ।  প্রফেসর সালাম সাহেব সেখানে আমার কলিগ ছিলেন ।

কলিমউল্লাহ বলল- আপনার  ছাত্র হবার সম্ভাবনা আছে । কর্নেল সাহেব যেভাবে বললেন “স্যারকে একটু নিয়ে  আসো”… তাতে মনে হচ্ছে উনি আপনার ছাত্র ।

ধীরেন্দ্রনাথ রায়  চৌধুরী গাড়িতে উঠে দেখলেন.. গাড়ি ভর্তি মানুষ । তারা সবাই চিন্তায় অস্থির ।  ধীরেন্দ্রনাথ রায় তাদের দিকে তাকিয়ে আন্তরিক ভঙ্গিতে হাসলেন । ভুলে তিনি  চশমা ফেলে এসেছেন বলে তাদের কাউকে চিনতে পারলেন না । চোখে চশমা থাকলে এদের  অনেককেই তিনি চিনতেন । বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানরা সেই গাড়িতে বসেছিলেন ।  তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে বধ্যভূমিতে….

                                                           (জোছনা ও জননীর গল্প : হুমায়ূন আহমেদ) 

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..           

‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com

আমাদের পেইজ লাইক দিন শেয়ার করুন

জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor

email – bikrampurkhobor@gmail.com

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন