প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ।। ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ(হেমন্তকাল)।। ৭ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরী।
বিক্রমপুর খবর :অনলাইন ডেস্ক :দার্শনিক ইবনে রুশদের আজ মৃত্যুদিন। ১১২৬ সালের ১৪ এপ্রিল স্পেনের আন্দালুসের কর্ডোভায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মারা যান মরক্কোর মারাক্কেশে ১১৯৮ ডিসেম্বর ১০। সে সময় তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
তার দাদা আলমোরাভিদ রাজবংশের শাসনামলে কর্ডোভার প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তার বাবা আবুল কাসিম আহমাদও আলমোরাভিদ রাজপরিবারের উচ্চপদস্থ কর্মচারী। রুশদ শিক্ষাজীবন শুরু করেন কোরআন, হাদিস, ফিকাহ, সাহিত্য ও আইনশিক্ষা দিয়ে।
দর্শনের প্রতি আকর্ষণ জন্মেছিল মূলত তার গৃহশিক্ষক এবং বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক ইবনে বাজ্জাহের হাত ধরে। দর্শন ছাড়াও তিনি ইসলামি শরিয়াহ, গণিত, আইন, ওষুবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন।
অষ্টম শতাব্দীতে বাগদাদে সর্বপ্রথম স্বাধীনভাবে দার্শনিক অনুসন্ধান হিসেবে প্রাচীন ইসলামি দর্শনের উদ্ভব ঘটে। অষ্টম থেকে ১২শ শতাব্দী হলো প্রাথমিক ইসলামি দর্শনের ব্যাপ্তিকাল। এ সময়কালকে ইসলামি স্বর্ণযুগ বলা হয়।
দার্শনিক আল কিন্দি এর সূচনা করেন এবং ইবনে রুশদের হাতে এই প্রাথমিক সময়কালটির সমাপ্তি ঘটে। মুসলিমদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক ও পণ্ডিত হিসেবে ইবনে রুশদের নাম ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বল করছে।
রেনেসাঁর যুগে ইউরোপে তার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশছোঁয়া। তবে এই দর্শনের জন্যই তার জীবনে একসময় নেমে আসে অভিশাপ। ইবনে রুশদের পুরো নাম আবু আল ওয়ালিদ মুহাম্মদ ইবনে আহমাদ ইবনে রুশদ। পশ্চিমা বিশ্বে তিনি পরিচিত ‘অ্যাভেরোস’ নামে।
অ্যাভেরোসের ভিন্ন কোনো অর্থ নেই। তার পুরো নামের সংক্ষিপ্ত অংশ ইবনে রুশদেরই ল্যাটিন উচ্চারণ হয়েছে অ্যাভেরোস। দর্শনশাস্ত্রে তিনি বেশি জনপ্রিয় হয়েছিলেন অ্যারিস্টটলের লেখাগুলো অনুবাদ করে। অ্যারিস্টটলের দর্শনের সঙ্গে তিনি ইসলামি মতবাদের সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা করেছিলেন।
তার দ্য ডিসিসিভ ট্রিটিজ বইয়ে তিনি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে দর্শন ও ধর্মের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। এই বইতে দর্শন কেন গুরুত্বপূর্ণ, সে আলোচনা শুরু করেছেন পবিত্র কোরআন থেকে নেয়া দুটি আয়াত দিয়ে।
তিনি ছিলেন মনেপ্রাণে একজন আন্তরিক মুসলিম। তাই কোরআনকেই শ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ বলে ঘোষণা দেন তিনি। তার মতে, প্রতিপাদক পদ্ধতিতে সত্য যাচাই করতে গেলে শেষতক কোরআনের কাছেই পৌঁছতে হবে। কারণ কোরআনে প্রকৃতির সত্য উদঘাটন করা হয়েছে।
রুশদের মতে, ধর্মগ্রন্থকে তিনভাবে বিশ্লেষণ করে তা থেকে দর্শন খুঁজে পাওয়া সম্ভব। প্রতিপাদন, ন্যায়শাস্ত্রে যাচাই এবং অলংকারশাস্ত্র। আর এই তিন উপায়ে ধর্মশাস্ত্র ব্যাখ্যা করে মানবজাতি তিন শ্রেণিতে ভাগ হয়ে যায়।
ইবনে রুশদ মারাকেশ ভ্রমণ করেছিলেন এবং সেখানে তিনি খলিফা আবদ আল মুমিনের সংস্পর্শে আসেন। খলিফা তাকে তার দার্শনিক গবেষণা ও জ্ঞানচর্চায় যথেষ্ট সহায়তা করেন। তবে এই খলিফাই তার প্রতি একসময় বিরূপ মনোভাব পোষণ শুরু করেন।
ইবনে রুশদ ছিলেন উদারবাদী দার্শনিক। সে সময় ধীরে ধীরে বাড়ছিল উদারবাদী দর্শনবিরোধী আন্দোলন। সেই আন্দোলনের মুখে তিনি নির্বাসনে গিয়েছিলেন লুসিয়ানায়। নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় তার সব গ্রন্থ।
রাষ্ট্রীয় সংগ্রহশালা থেকে বিজ্ঞানবিষয়ক বই ছাড়া তার বাকি বই পুড়িয়ে দেয়া হয়। চার বছর পর নির্বাসন থেকে ফেরেন ইবনে রুশদ। তবে শর্ত ছিল, তিনি কিছু লিখতে পারবেন না।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর–আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন–বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন।
জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor
email – bikrampurkhobor@gmail.com