প্রকাশিত:রবিবার,১১ আগস্ট ২০১৯ ইং ||২৭শে শ্রাবণ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।
বিক্রমপুর খবর:অনলাইন ডেস্ক: জিলহজ্জ্ব মাসের প্রথম দশদিনের ইবাদত বা আমল সমূহঃ এ দিনগুলো এমন যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিনগুলোকে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাতে আমালের প্রতি তিনি সবিশেষ উদ্বুদ্ধ করেছেন। এ দিনগুলোর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে শুধু এতটুকুই যথেষ্ট যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এর কসম করেছেন। আর আল্লাহর কসমের অর্থ হল কোন বিষয়ের প্রতি বেশি গুরুত্বারোপ করা।
যে কারণে এই দশ দিন বছরের শ্রেষ্ঠ দশ দিনঃ
১. আল্লাহ তা‘আলা এর কসম করেছেন: আল্লাহ তা‘আলা যখন কোনো কিছুর কসম করেন তা কেবল তার শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদাই প্রমাণ করে। কারণ,মহান সত্তা শুধু মহা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েরই কসম করেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,‘কসম ভোরবেলার। কসম দশ রাতের।’{সূরা আল-ফাজর,আয়াত : ১-২}
আয়াতে ‘কসম দশ রাতের’বলে যুলহিজ্জা মাসের ১ম দশকের প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। এটিই সকল মুফাসসিরের মত। ইবনে কাসীর রহিমাহুল্লাহ বলেন,এ মতটিই সঠিক।
২ এসবই সেই দিন আল্লাহ যাতে তাঁর জিকিরের প্রবর্তন করেছেন : আল্লাহ তা‘আ বলেন,‘যেন তারা নিজদের কল্যাণের স্থানসমূহে হাযির হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু থেকে যে রিজিক দিয়েছেন তার ওপর নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’{সূরা আল-হজ,আয়াত : ২৮}
জমহূর উলামার মতে,আয়াতে নির্দিষ্ট দিনসমূহ বলে যুলহিজ্জা মাসের প্রথম দশ দিনকে বুঝানো হয়েছে। এটিই ইবন উমর ও ইবন আব্বাস রদিআল্লাহু আনহুমার মত।
৩. রাসূলুল্লাহ দিনগুলোকে শ্রেষ্ঠ দিন বলে আখ্যায়িত করেছেন : যুলহিজ্জার এই দিনগুলোকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন জাবির রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
‘পৃথিবীর দিনগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিনগুলো হলো দশকের দিনসমূহ। অর্থাৎ যিলহজের (প্রথম) দশদিন। জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর পথে জিহাদেও কি এর চেয়ে উত্তম দিন নেই? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদেও এর চেয়ে উত্তম দিন নেই। হ্যা, কেবল সে-ই যে (জিহাদে) তার চেহারাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।’ [মুসনাদ বাযযার : ১১২৮; মুসনাদ আবী ই‘আলা : ২০৯০]
৪. এই দিনগুলোর মধ্যে রয়েছে আরাফার দিন: আরাফার দিন হলো হজের দিন। এটি ক্ষমা ও মাগফিরাতের দিন। জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও নাজাতের দিন। যিলহজের এই দশকে যদি ফযীলতের আর কিছু না থাকত তবে এ দিবসটিই তার মর্যাদার জন্য যথেষ্ট হত। এ দিনের ফযীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,‘আরাফা দিবসই হজ’। [তিরমিযী : ৮৯৩;নাসায়ী : ৩০১৬]
৫. এতে রয়েছে কুরবানীর দিন : কোনো কোনো আলিমের মতে কুরবানীর দিনটি বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
‘আল্লাহর কাছে সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ দিন হলো কুরবানীর দিন অতপর স্থিরতার দিন’। (অর্থাৎ কুরবানীর পরবর্তী দিন। কারণ,যেদিন মানুষ কুরবানী ইত্যাদির দায়িত্ব পালন শেষ করে সুস্থির হয়।) [নাসায়ী : ১০৫১২;ইবন খুযাইমা,সহীহ : ২৮৬৬]
৬. এ দিনগুলোতে মৌলিক ইবাদতগুলোর সমাবেশ ঘটে :
হাফেয ইবন হাজর রহিমাহুল্লাহ তার ফাতহুল বারী গ্রন্থে বলেন,‘যিলহজের দশকের বৈশিষ্ট্যের কারণ যা প্রতীয়মান হয় তা হলো, এতে সকল মৌলিক ইবাদাতের সন্নিবেশ ঘটে। যথা : সালাত, সিয়াম, সাদাকা, হজ ইত্যাদি। অন্যকোন দিন এতগুলো ইবাদতের সমাবেশ ঘটে না।’ [ফাতহুল বারী : ২/৪৬০]
আমাল করে মহান আল্লাহ্র সন্তুষ্টি হাসিল করার উপায়ঃ
১- প্রথম দশদিনে নফল রোযা ও রাতে ইবাদত করা
জিলহজ্ব মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার পর থেকে দশ তারিখ পর্যন্ত যত দিন সম্ভব নফল রোযা রাখা আর রাতের বেলা বেশী বেশী ইবাদত করা যথা নফল নামায,কুরআন তিলাওয়াত,তাসবীহ-তাহলীল,তাওবা-ইস্তিগফার ও রোনাজারী ইত্যাদি ইবাদতের মাধ্যমে রাত কাটানো।
ফযীলত
হযরত আবু হুরায়রা রা.থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জিলহজ্বের দশ দিনের ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্য দিনের ইবাদত তুলনায় বেশী প্রিয়,প্রত্যেক দিনের রোযা এক বছরের রোযার ন্যায় আর প্রত্যেক রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের ন্যায় ।
{তিরমিজী শরীফ,হাদীস নং-৭৫৮,সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৩৭৫৭,কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১২০৮৮}
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.থেকে বর্ণিত।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-এই দশ দিনের আমল অপেক্ষা অন্য দিনের আমল প্রিয় নয়।{বুখারী শরীফ,হাদীস নং-৯২৬}
২-যারা কুরবানী করার ইচ্ছে পোষণ করছেন, তারা জিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর থেকে হাত পায়ের নখ, মাথার চুল ও অবাঞ্ছিত চুল ইত্যাদি কাটবে না, যদি ৪০ দিন না হয়ে থাকে এগুলো না কাটার মেয়াদ। যদি ৪০ দিনের বেশি হয়ে থাকে, তাহলে এসব কেটে ফেলা আবশ্যক। নতুবা ১০দিন পর কুরবানীর পর পরিস্কার করবে। এ কাজটি সুন্নাত।
হযরত উম্মে সালমা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, যখন [জিলহজ্বের প্রথম] ১০ দিনের সূচনা হয়,আর তোমাদের কেউ কুরবানী করার ইচ্ছে করে,সে যেন চুল-নখ ইত্যাদি না কাটে। {সুনানে নাসায়ীকুবরা, হাদীস নং-৪৪৫৪, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩১৪৯, সুনানে বায়হাকী, হাদীস নং-১৮৮০৬, মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-২৯৩, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীসনং-৭৭৮৭, মুসনাদুশ শাফেয়ী, হাদীস নং-৮৪৬, মাশকিলুল আসার,হাদীস নং-৪৮১১}
৩-যারা হজ্বে যায়নি,তাদের জন্য জিলহজ্ব মাসের নয় তারিখ রোযা রাখা সুন্নাত এবং আরাফার দিনের একটি বিশেষ দুয়া
ফযীলত
হযরত আবু কাতাদা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আরাফার দিনের রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে, এ রোযা তার পূর্বের ও পরের বৎসরের গোনাহ মুছে ফেলবে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৭৪০}
তবে যারা হজ্বে গিয়েছেন,তাদের জন্য এদিন রোযা না রাখা উচিত।
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ আরাফার দিনে আরাফার ময়দানে রোযা রাখতে নিষেধ করেছেন। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৪৪২,সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৮১৭২,কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আক্বওয়াল ওয়াল আফআল,হাদীস নং-২৩৯২৩, আল মুজামুল আওসাত,হাদীসনং-২৫৫৬}
হযরত উম্মুল ফযল রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-লোকেরা আরাফার দিন নবী কারীম সাঃ রোযা রেখেছেন কি না? তা নিয়ে সন্দেহে পতিত হলে আমি রাসূল সাঃ এর পানীয় প্রেরণ করলাম,আর নবীজী সাঃ তা পান করলেন। [ফলে সবাই নিশ্চিত হলেন যে,রাসূল সাঃ রোযা রাখেন নি। {সহীহমুসলিম,হাদীস নং-২৬৫১}
বিঃদ্রঃ
জমহুর উলামাদের মত হল এই রোজার দিন হল যার যার দেশের ৯ই জিলহজ যখন আসে তখন অর্থাৎ সৌদি আরবের ৯ই জিলহজের সাথে মিলিয়ে নয়। হাদিসে “ইয়াওমে আরাফা” এর আক্ষরিক বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে আরাফার দিন। তাই অনেকেই কোনদিন রোজা রাখবেন তা নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। আরাফায় অবস্থান তথা উকুফে আরাফার দিন একদিনই এবং তা সৌদির জিলহজের ৯ তারিখ দিন। কিন্তু রোজা রাখা বা তাকবিরে তাশরিক পড়ার দিনের যে ২টি হাদিস এসেছে ২টিতেই “ইয়াওমে আরাফা” শব্দটি এসেছে। এবং মুহাদ্দিসগণ এর ব্যাখ্যা করেছেন যার যার দেশের চাঁদ দেখা অনুযায়ী ৯ই জিলহজ রোজা এবং তাকবিরে তাশরিক শুরু করা।
‘ইয়াওমে আরাফা’অর্থ নয় জিলহজ্ব। এটিই সঠিক ব্যাখ্যা। কারণ এই রোযা আরাফা বা উকুফে আরাফার আমল নয়;তা ঐ তারিখের আমল। ‘ইয়াওমে আরাফা’ হচ্ছে ঐ তারিখের (নয় যিলহজ্বের) পারিভাষিক নাম। যেহেতু ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ রূকন হজ্বের প্রধান রূকন উকুফে আরাফা ঐ স্থানের তারিখ হিসাবে নয় যিলহজ্বে আদায় করা হয় তাই এ তারিখেরই নাম পড়ে গেছে ‘ইয়াওমে আরাফা’। এ কারণে যেসব আমল আরাফা বা উকূফে আরাফার সাথে বিশেষভাবে সংশ্লিষ্ট নয়;বরং যিলহজ্বের নয় তারিখের সাথে সংশ্লিষ্ট,সেগুলোকেও ‘ইয়াওমে আরাফা’র আমল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য,নয় তারিখে বা ঈদের আগের দিন আমলটি করতে হবে।
আরাফার দিনের দুয়াঃ
ইখলাছ ও বিশ্বাসের সাথে এ দিনে নিম্নোক্ত কালিমাটি বেশী বেশী পড়া উচিত। নবীজী আরাফার দিন এ কালিমাটি খুব বেশী পড়তেন।
(তিরমিযিঃ ৩৫৮৫, মুসনাদে আহমাদঃ ৬৯২২ )
لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَهُوَ عَلٰى كُلَّ شَيْئٍ قَدِيْرٍ
বাংলা উচ্চারণঃ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মূলকু ওয়া লাহুল হামদু বিয়াদিহিল খাইরু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্কদির।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আরাফার দিনে মহান আল্লাহ্ এতো অধিক সংখ্যক লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন যা অন্য কোনদিন দেন না। তিনি এ দিনে বান্দাদের নিকটবর্তী হন এবং তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করে বলেন তোমরা কি জানো আমার এই বান্দারা আমার কাছে কি চায়?” (মুসলিম)
৪-তাকবীরে তাশরীক বলা।
যিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখের ফজর থেকে ১৩ তারিখের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর একবার তাকবীর বলা ওয়াজিব।পুরুষের জন্য আওয়াজ করে,আর মহিলাদের জন্য নীরবে।
তাকবীরে তাশরীক হচ্ছে :
الله اكبر الله اكبر لا اله الا الله والله اكبرو الله اكبر ولله الحمد
উচ্চারণঃ “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।”
নামায জামাতের সাথে হোক বা একাকি, পুরুষ মহিলা সবার জন্য প্রতি ফরয নামাযের পর এ তাকবীরটি একবার বলা ওয়াজিব। পুরুষরা উচ্চস্বরে বলবে আর মহিলারা অনুচ্চস্বরে। একবার বলাই ওয়াজিব। একাধিক বার বললে সমস্যা নেই। তবে ৩ বার বলাকে জরুরী মনে করলে বিদআত হবে। এই তাকবীরের সময়কাল হল ফরয নামাজের পরপরই। অর্থাৎ নামাজের পরেই এই তাকবীর বলতে হয়। বলতে ভুলে গেলে ক্বাযা করার দরকার নেই। ভুলে গেলে ইস্তিগফার করতে হবে। নামায কাযা হয়ে গেলে তা আদায়ের পরও তাকবীর বলবে। কাযা নামাযের পর তাকবীর বলতে ভুলে গেলে পরে তা কাযা করার কোন বিধান নাই।
প্রমাণঃ ফাতওয়া শামী-তৃতীয়খন্ড,৬১ পৃষ্ঠা,সালাত অধ্যায়,ঈদ পরিচ্ছেদ,
ইলাউস সুনান,সালাত অধ্যায়,তাকবীরাতুত তাশরীক পরিচ্ছেদ,৮ম খন্ড,১৪৮ পৃষ্ঠা}
ফযীলত
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ আরাফার দিন তথা ৯ ই জিলহজ্বের ফজর থেকে আইয়ামে তাশরীকের শেষদিন পর্যন্ত পর্যন্ত তথা ১৩ ই জিলহজ্ব [আসর নামায] পর্যন্ত তাকবীরে তাশরীক পড়তেন। {সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৬০৭১,মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা,হাদীস নং-৫৬৮১}
৫-ঈদের দিনের সবচেয়ে বড় আমল হল ঈদের নামায শেষে কুরবানী করা।
১০, ১১ বা ১২ যিলহজ্বের যেকোন একদিন,কোন ব্যক্তির মালিকানায় যদি নিত্য প্রয়োজন অতিরিক্ত সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ, অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রোপা বা এর সমমূল্যের সম্পদ থাকে, (বর্তমান বাজার মূল্যে যা ৪০ হাজার টাকা প্রায়) তাহলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।
পুরুষ-মহিলা সকলের উপরই এ বিধান প্রযোজ্য।
প্রমাণ-ফাতওয়া শামী-৯/৪৫৩, ৪৫৭ ফাতওয়া আলমগীরী-৫/২৯২
ফযীলত
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, কুরবানীর দিনে বনী আদম এমন কোন কাজ করতে পারে না, যা আল্লাহর নিকট রক্ত প্রবাহিত করা তথা কুরবানী করার চেয়ে বেশি প্রিয়। কুরবানীর পশু সকল শিং, তাদের পশম ও তাদের খুরসহ কেয়ামতের দিন [কুরবানীদাতার পাল্লায়]এসে হাজির হবে। আর কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহর নিকট সম্মানের স্থানে পৌছে যায়। সুতরাং তোমরা প্রফুল্লচিত্তে কুরবানী করবে। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৪৯৩,মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীসনং-৭৫২৩, কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আক্বওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১২১৫৩}
যায়েদ বিন আরকাম রাঃ বলেন-রাসূল সা. এর সাহাবাগণ বললেন-হে আল্লাহর রাসূল! এ সকল কুরবানীর ফযীলত কি? উত্তরে তিনি বললেন-তোমাদের জাতির পিতা ইবরাহীম আ. এর সুন্নাত। তারা পুনরায় আবার বললেন-হে আল্লাহর রাসূল! তাতে আমাদের জন্য কী সওয়াব রয়েছে? উত্তরে তিনি বললেন-কুরবানীর পশুর প্রতিটি চুলের বিনিময়ে একটি সওয়াব রয়েছে। তারা আবারো প্রশ্ন করলেন-হে আল্লাহর রাসূল! ভেড়ার লোমের কি হুকুম? [এটাতো গণনা করা সম্ভব নয়] তিনি বললেন-
ভেড়ার লোমের প্রতিটি চুলের বিনিময়ে একটি সওয়াব রয়েছে।{সুনানে ইবনে মাজাহ-হাদীস নং-৩১২৭}
আল্লাহ্ আযযা ওয়া জাল আমাদেরকে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন বেশি ইবাদাত করে আখিরাতের সম্বল হাসিল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
—খতীব আব্দুচ্ছালাম বাগেরহাটী,পিলখানা,ঢাকা।