প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার,২৯ অক্টোবর ২০২০ইং ।। ১৩ই কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)।। ১১ই রবিউল আউয়াল,১৪৪২ হিজরী।
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : আপনি কি জানেন যে, একসময় তুরস্কে আরবি শব্দে আযান দেওয়া সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল?
বহু বছর যাবত, তুরস্কের মুসলমানরা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণের অনুকরণে আরবি শব্দে আযান দেওয়ার পরিবর্তে আরবি আযানের তুর্কি অনুবাদে নামাযের জন্য আযান দিত।
এমনকি ‘আল্লাহ; শব্দটি পর্যন্ত অনুবাদ করা হয়েছিল।
৯০ বছর পূর্বের ঘটনা
১৯৩২ সালে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী ও তুরস্কে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক নামাজের জন্য আরবি শব্দে আযান দেওয়া সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
দীর্ঘ ১৮ বছর পর, এই নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটে।
দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে রূপান্তর করা এবং তুরস্কের অতীত শাসননীতি ‘অটোমান সাম্রাজ্য’ এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার লক্ষ্যে কামাল আতাতুর্ক আযানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, কোনো কোনো মসজিদে আরবিতে আযান দেওয়া অব্যাহত রাখা হয়। কিন্তু এর জন্য সরকার পরবর্তিতে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। মসজিদের দরজায় পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং যদি কেউ আরবিতে আযান দেওয়া অবস্থায় ধরা পড়ে তবে তাঁর উপর তিন মাস পর্যন্ত জেল বা জরিমানা আরোপ করা হয়।
এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে কোনো কোনো মুসলিম আযান তেলাওয়াতরত অবস্থায় সারা দেশ ভ্রমণ করে প্রতিবাদ করেন, আবার কেউ কেউ এটা জেনে নিশ্চিন্তে ছিলেন যে, শিশুরা এটি মুখস্থ রেখেছে। এই শব্দগুলি কখনও বিলুপ্ত হবে না।
নিষেধাজ্ঞার তীব্র প্রতিবাদ
এই প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে ১৯৪৯ সালে মুহিউদ্দিন আর্তাগুল এবং উসমান ইয়াজ নামক দু’জন সাহসী মুসলিম আইনসভায় অধিবেশন চলাকালীন সময়ে জাতীয় পরিষদের গ্যালারী থেকে আযান আবৃত্তি করেছিলেন।
এই ঘটনার এক বছর পার হতে না হতেই তুরস্কে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসেন এবং এই নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটান।
মূলত, আদনান মেন্ডেরেস তুরস্কের প্রথম গণতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এই কাজটি করেছিলেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, “তুর্কি জাতি মুসলিম এবং তাঁরা চিরকাল মুসলিমই থাকবে। এদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা কখনও লঙ্ঘন করা হবে না।”
অবশেষে ১৯৫০ সালের ১৬-ই জুন রমজান শুরু হওয়ার একদিন পুর্বে এ সমস্ত নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটে।
বর্তমানে তুরস্কে সারা দেশ জুড়ে ৮০,০০০ এরও অধিক মসজিদে দৈনিক পাঁচবার নামাজের জন্য আযানের মাধ্যমে আহ্বান করা হয়।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’