করোনা সনাক্তকরণ অ্যাপ নির্মান করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ

0
5
করোনা সনাক্তকরণ অ্যাপ নির্মান করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ

প্রকাশিত : রোববার, ২৪মে ২০২০ ইং ।। ১০ই জ্যৈস্ঠ  ১৪২৭ বঙ্গাব্দ।। ৩০ রমজান ১৪৪১

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : আপনার‌ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা কতটা রয়েছে?‌ তা বলে দেবে অ্যাপ। সনাক্তকরণে এইঅ্যাপটি নির্মান করেছে ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদ। মোবাইল এই অ্যাপের মাধ্যমে খুব সহজেই কিছু শারীরিক উপসর্গ প্রশ্নের হ্যা-না উত্তরে ক্লিক করে যে কেউ করোনার প্রাথমিক সনাক্ত করতে পারবে। এর জন্য কম্পিউটার কিংবা মোবাইল চালনার ক্ষেত্রে এক্সপার্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রাথমিক সনাক্তকরণের সাথে সাথে কিছু পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। যদি সমস্যা কম বা মাঝারি আকারে হয় তবে ২ দিন পর আবার একই প্রকার টেস্ট করতে বলা হচ্ছে। এবং রেস্টে থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। আর যদি মারাত্মক হয় তখন আরটি-পিসিআর পরিক্ষা করতে বলা হচ্ছে। এই অ্যাপটি সবাই কে হাসপাতালে ভীড় জমাতে নিরুৎসাহিত করছে । যেন শুধুমাত্র সঠিক রুগীরাই করোনা পরিক্ষার জন্য হাসপাতালে যায়।

করোনা সঙ্কটে ঠেকাতে জনসচেতনতা ও সহযোগিতামূলক মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদ। করোনা বাংলাদেশে হানা দেওয়ায় একাধিক পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সংগঠনটি। প্রথম দিক থেকেই করোনা সম্পর্কে সচেতনতা ও সতর্কীকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে । দ্বিতীয় ধাপে করেছে মাকস ও বিভিন্ন প্রকার সেনিটাইজ সামগ্রী বিতরন। সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেনীর মানুষের পাশে ও বস্তিতে। এসবের সাথে বর্তমানে অব্যাহত আছে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম । তাছাড়াও বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তারদের পিপিই, সামাজিক সংগঠন এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরন করে যাচ্ছে।
রাজধানীর কলাবাগান, কারওয়ানবাজার, ধানমন্ডি, হাজারিবাগ, ডেমরা, মতিঝিল বংশাল সহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

করোনাভাইরাস পরীক্ষার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও স্বীকৃত পদ্ধতি হচ্ছে আরটি-পিসিআর (RT-PCR), যাতে আরএনএ (RNA) শনাক্ত করার মাধ্যমে সংগৃহীত নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়। নমুনা হিসেবে গলা থেকে সংগৃহীত লালা (Throat swab), নাসোফেফেরেঞ্জিয়াল সোয়াব (সর্দি) বা ক্ষেত্রবিশেষে কফ ব্যবহার করা হয়। এই টেস্ট না করেই কিভাবে শুধু মাত্র অ্যাপের মাধ্যমে করোনা টেস্ট সম্ভব ? সংগঠনের আহবায়ক সরদার মাহামুদ হাসান রুবেলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, উচ্চমাত্রার সংক্রামক নভেল করোনাভাইরাস বাংলাদেশে এখনো মহামারি আকারে ছড়িয়ে না পড়লেও মানুষের আক্রান্ত বৃদ্ধিতে জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যাঁরা নিজের অজান্তে আক্রান্ত ব্যাক্তির সংস্পর্শে রয়েছেন বা ইতিমধ্যে যাঁদের মধ্যে রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হচ্ছে ,তাঁরা পরীক্ষা করার জন্য সরকার–নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানেই শরণাপন্ন হচ্ছেন। যাদের মধ্যে অনেকের সাধারন জ্বরের লক্ষন থাকলেও করোনায় আক্রান্ত নয়। সময়মতো পরিক্ষা না হওয়ার কারনে অনেক আক্রান্ত ব্যাক্তিরও চিকিৎসা দেরিতে শুরু করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত বিশেষজ্ঞগণও সংক্রমণ রোধে পরীক্ষার ওপর জোর দিচ্ছেন। তাই চাহিদার তুলনায় প্রতিষ্ঠানগুলোর সীমিত সক্ষমতার কারণেই আমরা এই আপ্লিকেসান তৈরি করেছি। যেকোন ব্যক্তি সাধারন উপসর্গ বিশ্লেষনের মাধমে বাসায় বসে করনার প্রাথমিক পরীক্ষা করতে পারবেন।

চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, যদি আপ্লিকেসান মারাত্মক ডিটেক করে এবং কোন ডাক্তার চিকিৎসা করাতে রাজি না হলে আমরা ফোনেই রুগীর সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এই সেবা দেওয়া হচ্ছে। আমরা মনেকরি আপাতত এটিই আমাদের কাছে মুজিব জন্মশতবর্ষের প্রধান কার্যক্রম।

কারো সাহায্য পাচ্ছেন কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কারো কাছে সাহায্য চাইনি। তবে আমাদের কেন্দ্রীয় পরিষদের সাধারন সম্পাদক ডা. এস এ মালেক শুরু থেকেই বিভিন্ন প্রকার সুরক্ষা সামগ্রী দিয়ে আমাদের সাহায্য করে চলেছেন এবং সবসময় আমাদের মনিটরিং করছেন।
যে সকল কর্মজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে খাদ্য সমস্যায় আছে সে সকল কর্মহীন লোক (যেমন- ভিক্ষুক, ভবঘুরে, দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যান গাড়িচালক, পরিবহন শ্রমিক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার) যারা দৈনিক আয়ের ভিত্তিতে সংসার চালায় তাদের কে আর্থিক/খাদ্য সহায়তা করার জন্য সংঠনের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের আহবান জানানো হয়েছে এবং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আর সমাজের যে শ্রেনীর মানুষ রাস্তায় নেমে সাহায্য চাইতে পারেনা কিন্তু সত্যিই অসুবিধের মধ্যে আছে সাহায্য প্রধানের ক্ষেত্রে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেছি।

অ্যাপটির ডেভেলপমেন্টের কারা কাজ করছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, অ্যাপটি নগর কমিটির আইসিটি বিভাগের দ্বায়িত্বে থাকা সদস্য মনোয়ার-উল-ইসলাম সজীবের নেতৃত্বে সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া দায়িত্বে ছিলেন লুৎফর রহমান পলাশ, এম মনসুর আলী, আনিস আহমেদ, নাফিস হোসেন দিপ,পারভেজ নামির, ভূইয়া মো. শরীফ।

বাংলা ভাষায় এই অ্যাপ থেকে সেবা পাওয়া যাচ্ছে। কাজটি মহানগর নেতৃবৃন্দের হলেও দেশের যে কোনও প্রান্তে এই অ্যাপটি ব্যবহার করা যাবে।

বিশ্বব্যাপি সংকটের সময়ে দেশের যুব শক্তির এগিয়ে এসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেওয়ায় এটি একটি আদর্শ উদাহরণ। সরকারি বেসরকারি ক্ষেত্র, ডিজিটাল টেকনোলজি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, এবং দেশের যুব সমাজের এক যৌথ ফসল এই অ্যাপটি। যা ভবিষ্যতে দেশকে সুস্বাস্থ্য দেওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করবে।

অ্যাপটির লিংক নিচে দেওয়া হয়েছে।

https://bbpbd.org/self-test-covid-19-18

নিউজটি শেয়ার করুন..

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন