আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ৮০তম জন্মদিন আজ

0
70
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ৮০তম জন্মদিন আজ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার,২৫ জুলাই ২০১৯ ইং ||১০ই শ্রাবণ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।

বিক্রমপুর খবর:আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর,বরেণ্য ব্যক্তিত্ব আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ৮০তম জন্মদিন আজ। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ আশা জাগানিয়া মানুষ। যিনি সবাইকে বলেন,‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। তুমিও তাই।’প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখান মানুষকে। তার জীবনের চেষ্টাই হচ্ছে সুন্দরকে খোঁজা। অধ্যাপক সায়ীদের কথায়,‘যারা পড়ান তারা সবাই শিক্ষক। কিন্তু সব শিক্ষক ‘গুরু’হয় না।’তবে তিনি সকলের ভালোবাসার শিক্ষক,গুরু।সকলেই ভালোবেসে ‘স্যার’সম্বোধন করেন তাকে। আজ ২৫ জুলাই অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন।

১৯৩৯ সালের এই দিনে তিনি কলকাতার পার্ক সার্কাসে জন্মগ্রহণ করেন। প্রতিবারের মতো এবারও নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে তার জন্মদিন। বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরস্থ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে ভক্ত-অনুরাগীরা শুভেচ্ছা জানাবেন তাকে। সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে কেক কাটা হবে।

শিক্ষাবিদ,সাহিত্যিক,সংগঠক,টিভি ব্যক্তিত্ব ও পরিবেশ আন্দোলন কর্মী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। মূলত বইপড়া কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে কাজ করছেন।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের পৈতৃক নিবাস বাগেরহাটের কচুয়া থানার কামারগাতি গ্রামে। তার বাবা আযীমউদ্দিন আহমদ ছিলেন একজন স্বনামধন্য শিক্ষক। মায়ের নাম করিমুন্নেসা।

আমাদের বিক্রমপুরের সরকারি হরগঙ্গা কলেজে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়েই ১৯৬১ সালে শিক্ষকতা কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। পরে সিলেট মহিলা কলেজ, রাজশাহী কলেজ ও ঢাকায় ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজে (বর্তমানে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ) শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কলেজ ঢাকা কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ জালালউদ্দিন আহমেদের আমন্ত্রণে সেখানে যোগদান করেন। ঢাকা কলেজেই তিনি তার শিক্ষকতা জীবনের স্বর্ণযুগ অতিবাহিত করেন।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ব্যক্তিত্বের প্রায় সব দিক সমন্বিত হয়েছে তার সংগঠক সত্তায়।  ‘আলোকিত মানুষ চাই’- এ মন্ত্রে সারাদেশে বই পড়া আন্দোলনের অগ্রযাত্রী হিসেবে প্রায় তিন দশক ধরে তিনি রয়েছেন সংগ্রামশীল। ষাটের দশকে বাংলাদেশে যে নতুন ধারার সাহিত্য আন্দোলন হয়,তিনি ছিলেন তার নেতৃত্বে।দেশে পাঠাগারের অপ্রতুলতা অনুধাবন করে তিনি ১৯৯৮ সালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি কার্যক্রম শুরু করেন।

বাংলাদেশে টেলিভিশনের সূচনালগ্ন থেকে মনস্বী ও রুচিবান ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। টেলিভিশনের বিনোদন ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় তিনি পথিকৃৎ ও অন্যতম সফল ব্যক্তিত্ব। নানা ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি সাহিত্যচর্চায় নিবিষ্ট। কবিতা, প্রবন্ধ,ছোট গল্প,নাটক,অনুবাদ,জার্নাল,জীবনীমূলক বই ইত্যাদি মিলিয়ে তার গ্রন্থভাণ্ডার যথেষ্ট সমৃদ্ধ। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ২৭টি। সামাজিক আন্দোলনে উদ্যোগী ভূমিকার জন্য তিনি দেশব্যাপী অভিনন্দিত। ডেঙ্গু প্রতিরোধ আন্দোলন,পরিবেশ দূষণবিরোধী আন্দোলনসহ নানা সামাজিক আন্দোলন তার নেতৃত্বে প্রাণ পেয়েছে।

কর্মময় জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি একুশে পদক,র‌্যামন ম্যাগস্যাসে,জাতীয় টেলিভিশন, বাংলাদেশ বুক ক্লাব পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন